Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ০৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ধীরগতিতে সিলেট নামছে বন্যার পানি : বন্যায় গুড়িয়ে দিয়েছে ২২ হাজার ঘর !

সিলেট ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৫ জুন, ২০২২, ৪:১৪ পিএম | আপডেট : ৬:৩০ পিএম, ২৫ জুন, ২০২২

৯ দিন ধরে বন্যার দখলে সিলেট। পুরো জেলা তছনছ করে দিয়ে নামছে পানি ধীরগতিতে। গত ২৪ ঘণ্টায় পানি নামার গতি ছিলো নামমাত্র। ফলে জেলার বেশিরভাগ এলাকা এখনও ডুবন্ত। ৯ দিন ধরে পানিবন্দী থাকা মানুষের জনজীবন পরিণত হয়েছে দূবির্ষহে।

সিলেট জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার (২৪ জুন) পর্যন্ত সিলেট সিটি করপোরেশনের আংশিক, জেলার ১৩টি উপজেলা ও ৫টি পৌরসভায় ৩ লাখ ৮৯ হাজার ৩২০ পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ২২ হাজার ১৫০টি ঘরবাড়ি। ফসল নষ্ট হয়েছে ২৮ হাজার ৯৪৫ হেক্টর। এদিকে, নগরী ও আশপাশ এলাকায় গত ৩-৪ দিনে বন্যার পানি কমেছে অনেকটাই। পানি কমতে শুরু করায় অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে ফিরতে শুরু করেছে বাড়িতে। তবে বর্তমানে রাস্তাঘাটে জমে থাকা বন্যার ময়লা পানি থেকে দুর্গন্ধ ছড়াতে শুরু করেছে। সেই সাথে রাস্তাঘাটে সৃষ্টি হয়েছে গর্ত।
আজ শনিবার (২৫ জুন) সকালে নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রধান সড়কগুলোর যেসব স্থানে পানি জমে ছিল, সেগুলো প্রায় নেমে গেছে। তবে কিছু সড়কে রয়েছে এখনো পানি। এর মধ্যে সিলেট নগরীর শাহজালাল উপশহর এবং তালতলা সড়ক, মেন্দিবাগ, কদতলীর ওভার ব্রিজের সিলেট-জকিগঞ্জ সড়ক অংশসহ বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার সড়কগুলোতেও রয়ে গেছে পানি। তবে সব কটি সড়কেই চলাচল করছে যানবাহন।
অপরদিকে, নগরীর যতরপুর, মিরাবাজার, শাহজালাল উপশহর, সোবহানীঘাট, মির্জাজাঙ্গাল, তালতলা, জামতলা, শেখঘাট, ঘাসিটুলা, কুয়ারপাড়, লালাদিঘীর পাড় এলাকার পাড়া-মহল্লার পানি ময়লা ও কালো রং ধারণ করেছে। এসব স্থানে জমে থাকা পানি থেকে উৎকট দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। জেলার বিভিন্ন স্থানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় পানি নামার গতি খুব ধীর। অনেক স্থানে পানি নামেনি। বন্যার স্থায়ীত্বে চরম ভোগন্তিতে স্থানীয় বাসিন্দরা। সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার সাবেক ৪ নং কুচাই ইউনিয়নের দক্ষিণ সুলতানপুর গ্রামের আব্দুল হাদি ফায়েক বলেন, ‘পানি যেন এক জায়াগায় দম ধরে আছে। বাড়ছেও না কমছেও না।
প্রসঙ্গত, গত ১৫ জুন থেকে সিলেটে বন্যা দেখা দেয়। দুদিন পর থেকে তা ভয়ঙ্কর রূপ নেয়। প্লাবিত হয় জেলার ৮০ ভাগ এলাকা। বন্যাজনিত কারণে ১৭ মে থেকে এ পর্যন্ত সিলেট বিভাগে ৪৮ জনের প্রাণহানি হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। পাঁচ দিন ধরে ধীরে ধীরে পানি কমতে শুরু করে, তবে সুরমা নদীর পানি এখনও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে কুশিয়ারা অববাহিকায় বাড়ছে পানি। কুশিয়ারার পানি বাড়ায় শুক্রবার পর্যন্ত জকিগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ, ওসমানীনগর, বিশ্বনাথ, দক্ষিণ সুরমায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
সিসিকের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান বলেন, ‘সিটি এলাকায় পানি প্রায় কমে গেলেও এখনও অনেকে আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন। সরকারিভাবে বরাদ্দ পাওয়া ত্রাণসামগ্রী বিভিন্ন ওয়ার্ডে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।’ সিলেট পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমেদ বলেন, সিলেটে বৃষ্টি হচ্ছে না, মুলত এটা খারাপের মধ্যে ভালো খবর। বিরাজ করছে একটা ঝরঝরা ভাব। তবে ধীরগতিতে পানি নামছে। পরিস্থিতি এভাবে থাকলে পানি কমবে আশাতীতভাবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বন্যা

১৫ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ