বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
কুড়িগ্রামে বন্যা যত স্থায়ী হচ্ছে ততই দুর্ভোগ বাড়ছে বানভাসীদের মধ্যে। বেশিরভাগ পরিবার বাড়ীর ভিতর চৌকি উঁচু করে কষ্ট করেই সেখানে অবস্থান করছে। কেউ কেউ নৌকায় গবাদিপশু নিয়ে দিনরাত পার করছে, কখন পানি নেমে যাবে। এই পরিস্থিতিতে বিশুদ্ধ খাবার পানি, শুকনো খাবার ও লেট্রিন সংকটে ভুগছেন তারা। সমস্যায় পরেছেন গবাদিপশুর খাবার নিয়ে। চারণভূমিসহ মাঠঘাট তলিয়ে যাওয়ায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
সদর উপজেলার চর পার্বতীপুর গ্রামের আবুল হোসেন জানান, নিজেরা না হয় কোন রকমে চলবের নাগছি কিন্তু গরু-ছাগল নিয়া খুব বিপদে আছি। খড়ের গাদা পানিতে ভিজি গেইছে। এখন কি দেই আর কি খাওয়াই। খুব দুশ্চিন্তায় আছি।
জেলা ত্রাণ ও পূনর্বাসন অফিসের তথ্য মতে এ পর্যন্ত ১লাখ ৪১ হাজার ৬১২জন মানুষ পানিবন্দী হয়েছে। নাগেশ^রী উপজেলায় ৩টি আশ্রয়কেন্দ্রে ১৬০জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। বন্যায় ৩২৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জলমগ্ন হওয়ায় পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে। বানভাসী মানুষের কথা চিন্তা করে ৩৬১টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এদিকে সরকারি-বেসরকারিভাবে ত্রাণ তৎপরতা শুরু হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলে জানা গেছে। অনেক পানিবন্দী এলাকায় সরকারি বা বেসরকারীভাবে কেউ খোঁজ নিতেও আসেনি বলে বানভাসীরা অভিযোগ তুলেছে।
সদর উপজেলার ভগবতীপুর চরের জোহরা খাতুন জানান, চুলা জ্বালাতে পারছি না। ঘরেও সবকিছু তলিয়ে গেছে। ছেলে-মেয়ে নিয়ে খুব কষ্টে দিন পার করছি।
উলিপুর উপজেলার বেগমগন্জ ইউনিয়নের বাসিন্দা আমির হোসেন জানান, বন্যার পানিতে ঘর-বাড়ি তলিয়ে থাকায় নিজেরা তো কষ্টে আছি। এ অবস্থায় গরু ছাগলের খাবারও জোগাড় করতে পারছি না।
সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর জানান, আমার ইউনিয়নে ১৪শ’ পরিবার প্লাবিত হয়েছে পানিবন্দী হয়েছে আরো ৩ হাজার ৫শ’ পরিবার। ঘোগাদহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক সরকার জানান, আমার ইউনিয়নে ৭৫০টি পরিবার প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়েছে ৪ হাজার পরিবার। ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান জানান, আমার ইউনিয়নে পানিবন্দী হয়েছে ৫ হাজার ৮৪১টি পরিবার। ত্রান পেয়েছে মাত্র ৭শ’ পরিবার।
পাঁছগাছী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল বাতেন জানান, আমার ইউনিয়ন পুরো প্লাবিত হয়ে পরেছে। একটি বাড়ী পাবেন না যেখানে মানুষ শান্তিতে আছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্ল্যাহ আল মামুন জানান, ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি বিপদসীমার ওপর কিছুটা স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। বন্যার পানি ধীর গতিতে কমতে শুরু করেছে বলে জানান তিনি। বুধবার সকালে ব্রহ্মপূত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৫৩ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়ায় ১৯ সেন্টিমিটার এবং ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে ৪১ সেন্টিমিটার বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে তিনি জানান।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, ৯ উপজেলার বন্যা কবলিত মানুষের জন্য ৩৩৮ মেট্রিক টন চাল, নগদ ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ১ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, ১৮ লাখ ৯৫ হাজার টাকার শিশু খাদ্য ও ১৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকা গো-খাদ্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যা বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।