Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

নারীদের বোরকা পরা ফের বাধ্যতামূলক করলো তালেবান

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৮ মে, ২০২২, ১১:০৫ এএম

আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন তালেবান সরকার নির্দেশ জারি করেছে যে, এখন থেকে আফগান নারীদের প্রকাশ্য স্থানে মুখ-ঢাকা বোরকা পরতে হবে। গত কয়েক দশকের মধ্যে এই প্রথম আবার আফগানিস্তানে নারীদের বোরকা পরা বাধ্যতামূলক করা হলো।

কোন নারী এই নিয়ম না মানলে এবং সরকারী হুঁশিয়ারি অগ্রাহ্য করলে তার পরিবারের পুরুষ সদস্য বা অভিভাবকের তিন দিন পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। ১৯৯০ এর দশকে তালেবান যখন ক্ষমতায় ছিল তখনো আফগানিস্তানে বোরকা পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। তবে গত বছর আফগানিস্তানের ক্ষমতায় ফিরে আসার পর তালেবান বোরকা পরতে বাধ্য করার চেষ্টা করেনি।

আফগানিস্তানে অনেক নারী এমনিতেই বোরকা পরেন। তবে অনেক নারীকে, বিশেষ করে শহরাঞ্চলে, কেবলমাত্র মাথার চুল ঢাকার জন্য কিছু পরতে দেখা যায়। বোরকা নিয়ে এই নতুন নির্দেশ জারি করেছে আফগানিস্তানের ধর্মীয় নীতি-নৈতিকতা বিষয়ক মন্ত্রণালয়। তালেবান কর্মকর্তারা এই নির্দেশকে একটি 'পরামর্শ' হিসেবে বর্ণনা করলেও এটি না মানলে ধাপে ধাপে কী ঘটবে, তা পরিষ্কার করে বলে দিয়েছেন। যেমন:

প্রথমত, কেউ যদি বোরকা না পরে তাদের বাড়ি পরিদর্শনে গিয়ে কর্মকর্তারা ঐ নারীর স্বামী, ভাই বা পিতার সঙ্গে কথা বলবেন। দ্বিতীয় ধাপে ঐ নারীর পুরুষ অভিভাবককে সরকারি দফতরে ডেকে পাঠানো হবে। তৃতীয় ধাপে ঐ পুরুষ অভিভাবককে আদালতে নেয়া হবে এবং তিন দিন পর্যন্ত সাজা হতে পারে

ইসলামের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরানে মুসলিম পুরুষ এবং নারীদের সংযত এবং শালীন পোশাক পরতে বলা হয়েছে। পুরুষদের বেলায় এরকম শালীন পোশাক হচ্ছে নাভি থেকে পায়ের গোড়ালির উপর পর্যন্ত কাপড়ে আবৃত রাখা। আর নারীর বেলায় মুখ, হাত এবং পা ছাড়া শরীরের সমস্ত অংশ ঢেকে রাখা। নিজের বিবাহিত স্বামী কিংবা আত্মীয় পুরুষ ছাড়া অন্য সব পুরুষের সামনে মেয়েদের এই পর্দা মেনে চলতে হবে।

তবে ইসলামের অনুসারীদের মধ্যে অনেক বিতর্ক আছে নারীর বেলায় এটুকু পর্দাই যথেষ্ট কিনা। এ কারণে হিজাব (আরবিতে এর আক্ষরিক অর্থ ঢেকে রাখা) এবং নিকাবের (পুরো মুখ ঢেকে রাখা কাপড়) মতো পর্দায় অনেক পার্থক্য আছে। হিজাব হচ্ছে সাধারণত এমন একটি ওড়না, যেটি দিয়ে মাথার চুল এবং ঘাড় ঢেকে রাখা হয়। আর নিকাব হচ্ছে মুখ ঢেকে রাখা পর্দা, যেখানে শুধু চোখের জায়গাটা খোলা থাকে। এই নিকাব পরা হয় একটি মাথা ঢাকা ওড়না বা পুরো শরীর ঢাকা আবায়ার সঙ্গে।

আর বোরকা এমন পোশাক, যেখানে সমস্ত মুখ এবং শরীর ঢাকা থাকে, শুধু চোখের সামনে একটা জালি পর্দার ভেতর দিয়ে বাইরে দেখা যায়। আফগানিস্তানে প্রাত্যহিক জীবনে তালেবান যেসব কঠোর ধর্মীয় বিধিনিষেধ আরোপ করেছে, তার বেশিরভাগই নারীদের টার্গেট করে। আফগানিস্তান হচ্ছে বিশ্বের একমাত্র দেশ, যেখানে লিঙ্গভেদে শিক্ষাকে সীমিত করে দেয়া হয়েছে। তালেবানের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির ক্ষেত্রে এটি একটি প্রধান আপত্তির জায়গা। আফগানিস্তানে মেয়েদের মাধ্যমিক শিক্ষা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নারী বিষয়ক মন্ত্রণালয় বিলুপ্ত করা হয়েছে এবং অনেক ক্ষেত্রেই এখন নারীদের কাজ করতে দেয়া হচ্ছে না। সূত্র: বিবিসি।



 

Show all comments
  • ABU ABDULLAH ৮ মে, ২০২২, ১:১৫ পিএম says : 0
    AL HAMDULILLAH GOOD NEWS
    Total Reply(0) Reply
  • حفيظ ৮ মে, ২০২২, ২:১০ পিএম says : 0
    ظنهم صالحون
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আফগানিস্তান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ