শেখ ফজলুল করিমের জীবন ও সাহিত্য
বাঙ্গালী মুসলমানদের লুপ্ত গৌরব ও ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে যে কয়জন খ্যাতনামা মুসলিম সাহিত্যিক স্মরণীয় বরণীয়
ড. আবুল আজাদ
একজন মেধাবী দেশপ্রেমিক ও বহু গ্রন্থের জনক। দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় তার লেখা মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহ্য, চেতনা ও রাজনৈতিক সংস্কৃতি বিশ্লেষণমূলক প্রবন্ধসমূহ ছাপা হয়ে আসছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, বিকাশ ও জনমত গঠনে নিরলসভাবে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন এই লেখক। মুক্তিযুদ্ধ একাডেমি, রয়টার্স ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, সাউথ এশিয়ান মিউজিক ইনস্টিটিউট, শওকত ওসমান পরিষদ এসব সংগঠন প্রতিষ্ঠা এবং এসবের প্লাটফর্মে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আর জাতির জনকের কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশন-২০২১ বাস্তবায়নসহ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য-উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে লাগাতার লেখালেখি, সেমিনার, সিম্পোজিয়ামসহ উৎসব মেলাÑ এসব আয়োজনের মাধ্যমে বিরামহীনভাবে জনমত গঠনের কাজ করে একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় কর্তব্য সম্পাদনে নিয়োজিত রয়েছে দেশের এই কৃতী সন্তান। তার লেখা ‘মুক্তিযুদ্ধ, ঘাতক অপরাজনীতি : সংস্কৃতির সংকট’ গ্রন্থটি বহুমাত্রিক এবং বৈচিত্র্যেভরা। লেখক যেসব বিষয় নিয়ে গ্রন্থে কাজ করেছেন সেগুলো যেমনি সাহসী, মেধার স্বাক্ষরে উজ্জ্বল, একই সঙ্গে দেশপ্রেমে আলোকিত। এত শ্রম, এত দেশাত্ববোধ নিয়ে এর আগে অন্যরা কেউ এ কাজ করতে পারেনি। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে দেশ ধ্বংসে কোন কোন রাজনৈতিক দলের কেমন ভূমিকা ছিল, তাদের কর্মকা-, কজন বিতর্কিত রাষ্ট্রপ্রধানের চিত্রও তিনি গ্রন্থে সাবলীল ভাষায় উত্থাপন করেছেন। লেখক একটা চমৎকার কথা বলেছেনÑ ‘মানুষ তার সর্বক্ষেত্রে স্বাধীনতার অধিকার পাবে এবং অধিকার প্রয়োগ করতে গিয়ে স্বাধীনতার নামে স্বেচ্ছাচারী হবে না। তাহলেই কেবল আমরা সংস্কৃতির সংকট থেকে উত্তরণের পথ খুঁজে পাব।’ আমাদের দেশে অনেকেই সংস্কৃতির স্বাধীনতা নামে নানা কিছু যুক্তিতর্কের মাধ্যমে বলে থাকে এবং লিখে থাকে। লেখকদের উপরের লাইনগুলোতে একটু চোখ রাখলেই বোঝা যায় এ কথার গভীর সারমর্ম। মোদ্দাকথা, সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা মানেই স্বেচ্ছাচারিতা নয়। বুদ্ধিদীপ্ত ড. আবুল আজাদের ‘মুক্তিযুদ্ধ ঘাতক অপরাজনীতি : সংস্কৃতির সংকট’ গ্রন্থের সূচি সমৃদ্ধ করেছে বেশ কিছু অধ্যায়। এগুলো হলোÑ ওরা যখন বদলাবে না, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি : বর্তমান প্রেক্ষাপট, শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র হচ্ছে : রুখে দাঁড়াবার সময় এখন, মুক্তিযুদ্ধে কৈরালার ভূমিকা, জননিপীড়ন প্রতিরোধ মঞ্চ, ত্রিকালে বাঙালির ভাষা, মুক্তিযুদ্ধ, ঘাতক অপরাজনীতি : সংস্কৃতির সংকট, গাদ্দার, চন্দ্রমুখী, সাংবাদিকদের ভূমিকা, মুক্তিযুদ্ধ : বিদেশিদের, দেশ থেকে দুর্নীতির মূলোৎপাটন ঘটবেই, সত্যমিথ্যার সংলাপ, অকৃতিম সংগ্রামী কল্পতায় ইত্যাদি। ড. আবুল আজাদ রাজনীতি এবং মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত লেখালেখিতেই শুধু সিদ্ধহস্ত নন। তার দুটো আলোচিত উপন্যাস গ্রন্থ হচ্ছেÑ যুদ্ধকন্যা এবং চন্দ্রমুখী, শেষেরটি শিশুতোষ।
লেখকের ভাষাভঙ্গি সহজ-সরল এবং সাবলীল। তিনি যা বলতে চেয়েছেন নিজের বিশ্বাসের শিকড়ের উপরে দাঁড়িয়ে বলেছেন। একজন গবেষক ও লেখকের যেসব গুণাবলী রয়েছে ড. আজাদ সেসব সোনালী আলোয় উদ্ভাসিত। গ্রন্থের ভেতরে কিছু ছবি থাকলে ভালো হতো। ছাপা ও বাঁধাই এবং কাগজ দৃষ্টিনন্দন। গ্রন্থটির বহুল প্রচার প্রসার কাম্য।
মুক্তিযুদ্ধ ঘাতক অপরাজনীতি : সংস্কৃতির সংকট
ড. আবুল আজাদ
প্রকাশ : বইমেলা : ২০১৬, প্রচ্ছদ : কিরিটি রঞ্জন বিশ্বাস।
প্রকাশক : রাইটার্স ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ।
পরিবেশক : ম্যাগনাম ওপাস
আজিজ সুপার মার্কেট, শাহবাগ, ঢাকা-১০০০।
মূল্য : ৪০০ টাকা।
*ফাহিম ফিরোজ
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।