Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

একজন আদর্শ মুসলিমের দিন-রাত

এনামুল হাসান | প্রকাশের সময় : ২৫ মার্চ, ২০২২, ১২:১৫ এএম | আপডেট : ১২:২৩ এএম, ২৫ মার্চ, ২০২২

একজন আদর্শ মুসলিমের দিন-রাত কেমন হবে? কেমন হবে তার সকাল-সন্ধ্যা? কেমন হবে তার ব্যক্তিজীবন, পারিবারিক জীবন, সামাজিক জীবন এবং রাষ্ট্রীয় জীবন? একজন মুসলিমের আচরণ তার প্রভুর সাথে কেমন হবে? নিজের সাথে কেমন হবে? মা-বাবার সাথে, সন্তানদের সাথে, স্ত্রীর সাথে, আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীর সাথে কেমন হবে? কেমন আচরণ হবে ভাই-বোন ও বন্ধু-বান্ধবের সাথে? কোরআন-সুন্নাহ এসকল বিষয়ে যে দিকনির্দেশনা রয়েছে। যদি মাঝেমধ্যে নিজের অবস্থাকে সেই আলোকে মিলিয়ে দেখতে থাকি, তাহলে আস্তে আস্তে হয়তো আমিও একজন আদর্শ মুসলিম হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে পারবÑ ইনশাআল্লাহ।

আদর্শ মুসলিম আল্লাহর সাথে কেমন আচরণ করবে : আল্লাহর প্রতি পূর্ণ ঈমান থাকবে এবং ঈমানের দাবিগুলো আদায় করবে। আল্লাহর প্রতি গভীর ভালোবাসা থাকবে এবং ভালোবাসার দাবিগুলো পালন করবে। আল্লাহর আদেশের সামনে সর্বদা শির নত করে দিবে। আল্লাহর রেযা ও সন্তুষ্টিই হবে তার জীবনের একমাত্র চাওয়া-পাওয়া। তাকদীরের ওপর রাজি খুশি থাকবে। কোনো গোনাহ হয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে ইস্তেগফার ও তওবা করবে।
ফরজ ইবাদতগুলো যথাযথভাবে আদায় করবে। আল্লাহর সকল বিধানকে শিরোধার্য করবে। ফরজ নামাজের প্রতি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিবে। নফল আদায়েও যতœবান হবে।

রমজানের রোজা রাখবে। ইতিকাফ করার চেষ্টা করবে। বছরের অন্যান্য নফল রোজার ফজিলত লাভেও সচেষ্ট হবে।
হজ ফরজ হলে হজ করবে। আল্লাহ তৌফিক দিলে উমরাও করবে।
আল্লাহ নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক বানালে যথাযথ হিসাব করে জাকাত দিবে। সাধ্যমত নফল সদকা করবে; দ্বীনের নুসরতে সম্পদ ব্যয় করবে। অভাবীর পাশে দাঁড়াবে।

কোরআনের সাথে ইলমী ও আমলী সম্পর্ক মজবুত করবে। অধিক পরিমাণে কোরআন তেলাওয়াত করবে। কোরআনের বিধি-বিধানকে নিজের জীবনে শিরোধার্য করবে।
আল্লাহ যেসকল কাজ পছন্দ করেন তা করার চেষ্টা করবে। আল্লাহ যেসকল কাজ অপছন্দ করেন, তা থেকে বিরত থাকবে। জীবনের প্রতিটি কাজে আল্লাহর রাসূলের সুন্নতকে আঁকড়ে ধরবে।

নিজের সাথে কেমন আচরণ করবে : নিজের ক্ষেত্রেও একজন আদর্শ মুসলিমের অবস্থান হবে খুবই ভারসাম্যপূর্ণ। সে জানে, তার ওপর তার শরীরের হক রয়েছে। তাই নিজের শরীরের ওপর সে জুলুম করে না। পানাহারের ক্ষেত্রে মান ও পরিমাণ রক্ষা করে। বিশ্রামকে পরিশ্রমের অংশ মনে করে। রাতে তাহাজ্জুদ আদায় করে যেমন সওয়াবের আশা করে, তেমনি ঘুমিয়েও সওয়াবের আশা রাখে। নিয়মিত শরীর চর্চা করতে অলসতা করে না। যত ব্যস্ততাই থাকুক, তার পোশাক-পরিচ্ছদ থাকে পরিচ্ছন্ন ও পরিপাটি। তার শরীর, পায়ের পাতা, নখ, চুল ও দাড়ি থাকে বিন্যস্ত।

শুধু শরীরই নয়, সে তার মেধা ও মননেরও যতœ নেয়। প্রতিনিয়ত একটু একটু করে জ্ঞান অর্জন করতে থাকে। যে বিষয়ে তার বিশেষ পড়াশোনা, সে বিষয়ে সবচেয়ে বেশি মনোযোগ দেয়। তারপর সময় সুযোগ মতো অন্যান্য বিষয়েও জ্ঞান অর্জন করতে থাকে। নিজের সময় ও সমাজ সম্পর্কে তার থাকে পরিষ্কার ধারণা।
যেভাবে মেধা ও মননের বিকাশের জন্য সে পরিশ্রম করে, তেমনি তার রূহেরও খোরাক জোগানোর চেষ্টা করে। নিজের অন্তরাত্মাকে সব ধরনের কলুষ থেকে মুক্ত রাখে। নিয়মিত তেলাওয়াত করে। সকাল-সন্ধ্যা জিকির করে। জায়গামত মাসনূন দোয়া পাঠ করে। সৎ লোকের সঙ্গ অবলম্বন করে। নেককারদের মজলিসে যাতায়াত করে



 

Show all comments
  • Md. Mofazzal Hossain ২৫ মার্চ, ২০২২, ৭:৪৯ এএম says : 0
    সূরা নাহল:36 - আমি প্রত্যেক উম্মতের মধ্যেই রাসূল প্রেরণ করেছি এই মর্মে যে, তোমরা আল্লাহর এবাদত কর এবং তাগুত থেকে নিরাপদ থাক। অতঃপর তাদের মধ্যে কিছু সংখ্যককে আল্লাহ হেদায়েত করেছেন এবং কিছু সংখ্যকের জন্যে বিপথগামিতা অবধারিত হয়ে গেল। সুতরাং তোমরা পৃথিবীতে ভ্রমণ কর এবং দেখ মিথ্যারোপকারীদের কিরূপ পরিণতি হয়েছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Mir Irfan Hossain ২৫ মার্চ, ২০২২, ৭:৪৯ এএম says : 0
    আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লার প্রতি এবং আখিরাতে বিশ্বাসী মুসলিম ব্যক্তির জীবন ইবাদত নির্ভর। দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা ছাড়াও সকাল সন্ধ্যায় পালনীয় তার জন্য মাসনূন আমল এবং দোআ তাসবিহ রয়েছে।
    Total Reply(0) Reply
  • MD FOKHRUL ISLAM ২৫ মার্চ, ২০২২, ৭:৫০ এএম says : 0
    প্রত্যেক কাজেই তার জন্য রয়েছে নির্দিষ্ট দোআ তাসবিহ। এগুলো পাঠ এবং পালনের মাধ্যমে তাকে মেনে চলতে হয় ইসলামী শরিয়াতের বিধি-বিধান।
    Total Reply(0) Reply
  • Nazrul Islam ২৫ মার্চ, ২০২২, ৭:৫০ এএম says : 0
    শরয়ী এসব বিধি-বিধান ও নিয়ম কানূন অনুযায়ী নির্দিষ্ট নিয়ম এবং সীমার মধ্যে থেকেই জীবন পরিচালনা করতে হয়। যে কারণে জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ।
    Total Reply(0) Reply
  • Nazrul Islam Razib ২৫ মার্চ, ২০২২, ৭:৫১ এএম says : 0
    কাজকর্ম হওয়া চাই সুন্দর, সর্বোৎকৃষ্ট এবং শৃঙ্খলাপূর্ণ। তার আচার-আচরণ, কাজ-কর্ম, কথা-বার্তা, লেনদেন, চলাফেরা ইত্যাদি, মোটকথা সামগ্রিক বিচারে তাকে হতে হবে আলোকিত এমন একজন মানুষ যার কাজ দ্বারা কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, যার কথা দ্বারা কেউ কষ্ট পাবে না, যার আচরণে কেউ আহত হবে না, যার হাত ও মুখ অন্যের গ্রাস কেড়ে নিবে না।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মুসলিম


আরও
আরও পড়ুন