Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জ্বালানির দাম রুবলে দিতে হবে : পুতিন

ন্যাটোর সাথে সরাসরি সংঘর্ষ সম্পর্কে শীতল সতর্কতা ল্যাভরভের

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৫ মার্চ, ২০২২, ১২:২০ এএম

বন্ধু নয় এমন কোনও দেশ রাশিয়া জ্বালানি কিনলে দাম পরিশোধ করতে হবে রুশ মুদ্রা রুবলে। বুধবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন এ কথা জানিয়েছেন। রাশিয়ার এই পদক্ষেপে ইউরোপে জ্বালানির দাম আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর পর রাশিয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় দেশগুলো। কিন্তু বিদ্যুৎ উৎপাদনে রুশ জ্বালানির ওপর ব্যাপক নির্ভরতা রয়েছে ইউরোপের। ফলে রাশিয়ার জ্বালানি খাতের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অভ্যন্তরে মতবিরোধ রয়েছে। পুতিন স্পষ্ট বার্তায় জানিয়ে দেন, ‘জ্বালানি চাইলে আমাদের মুদ্রায় কিনুন’। তবে ইতোমধ্যে সই হয়ে যাওয়া যেসব চুক্তিতে ইউরোতে মূল্য পরিশোধের কথা বলা আছে সেসব চুক্তি বদলানোর ক্ষমতা এককভাবে রাশিয়ার রয়েছে কিনা তা এখন পর্যন্ত স্পষ্ট নয়। পুতিনের ঘোষণার পরই ডলারের বিপরীতে বেড়েছে রুবলের দাম। এদিকে বুধবার ইউরোপের কয়েকটি পাইকারি গ্যাসের মূল্যও বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ। ইউরোপের মোট জ্বালানি চাহিদার প্রায় ৪০ শতাংশের যোগানদাতা রাশিয়া। এই বছর ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) প্রতিদিন রাশিয়া থেকে ২০ থেকে ৮০ কোটি ডলারের গ্যাস আমদানি করেছে। বুধবার সরকারের মন্ত্রণালয়গুলোর সঙ্গে এক বৈঠকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন বলেন, ‘রাশিয়া নিশ্চিতভাবে পরিমাণ এবং মূল্যের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রাকৃতিক সরবরাহ অব্যাহত রাখবে... আগে শেষ হওয়া চুক্তি অনুযায়ী।’ তিনি বলেন, ‘পরিবর্তন শুধু হবে মূল্য পরিশোধের মুদ্রায়, যা রুশ রুবলে পরিশোধ করতে হবে।’ তবে জার্মান অর্থমন্ত্রী রবার্ট হাবেক বলেছেন, পুতিনের দাবি চুক্তির লঙ্ঘন। রুশ জ্বালানির অন্য ক্রেতারাও একই মনোভাব প্রকাশ করেছেন। অপরদিকে, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, রাশিয়ার অভিযানের মধ্যে যদি ন্যাটো ইউক্রেনে শান্তিরক্ষী পাঠায়, তবে এটি রাশিয়ান বাহিনী এবং জোটের মধ্যে সরাসরি সামরিক সংঘর্ষের দিকে নিয়ে যাবে। লাভরভের বুধবার সকালের বক্তব্য উল্লেখ করে তাস জানায়, ‘ইউক্রেনে ন্যাটো শান্তিরক্ষীদের পাঠানোর ফলে রাশিয়ান ফেডারেশনের সশস্ত্র বাহিনী এবং জোটের মধ্যে সরাসরি সংঘর্ষ হবে’। জাতিসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড রোববার ইউক্রেনের অভ্যন্তরে শান্তিরক্ষা অভিযানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অংশ নেওয়ার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে বলেছেন যে, বাইডেন প্রশাসন দেশে মার্কিন সেনা পাঠাবে না। থমাস-গ্রিনফিল্ড বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট খুব স্পষ্ট বলেছেন যে, আমরা ইউক্রেনের মাটিতে আমেরিকান সৈন্যদের রাখব না’। ‘আমরা এটিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে যুদ্ধে পরিণত করতে চাই না’। তিনি যোগ করেন, ‘তবে আমরা আমাদের ন্যাটো মিত্রদের সমর্থন করব’। বাইডেন ‘স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, যদি আমাদের ন্যাটো মিত্রদের ওপর কোনো আক্রমণ হয়, আর্টিকেল ৫-এর অধীনে আমরা সেই দেশগুলোকে সমর্থন করব এবং সেসব দেশকে রক্ষা করব’। পোলিশ আউটলেট ওনেট.পিএল পোল্যান্ডের জাতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি গোপন প্রকল্পে অ্যাক্সেস পেয়েছে, যার লক্ষ্য ইউক্রেনে ন্যাটো দেশগুলোর বেশ কয়েকটি শান্তিরক্ষী মোতায়েন করা। ওয়ারশ আজ ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে এটি উপস্থাপন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অংশগ্রহণ করবে না, তবে কিছু অন্যান্য দেশকে জড়িত করে একটি মিশনে সম্মত হতে পারে। ল্যাভরভের সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে যে, রাশিয়া ন্যাটো শান্তিরক্ষীদের উপস্থিতিকে সামরিক বৃদ্ধি এবং জোটের বিরুদ্ধে যুদ্ধের কারণ হিসেবে বিবেচনা করবে। রাশিয়ার উচ্চতর সৈন্য সংখ্যা অপ্রত্যাশিতভাবে ভয়ঙ্কর ইউক্রেনীয় প্রতিরোধের মধ্যে চলে যাওয়ায় যুদ্ধ প্রায় এক মাস ধরে চলছে। দক্ষিণের বন্দর শহর মারিউপোলের জন্য যুদ্ধ ক্রমশ ভয়ানক হয়ে উঠেছে, যখন ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ এবং এর দ্বিতীয় শহর খারকিভের মতো শহরগুলো কার্যকরভাবে অবরোধের মধ্যে রয়েছে। রাশিয়া পোল্যান্ডের সীমান্ত থেকে খুব দূরে দেশের পশ্চিমের শহরগুলোকেও লক্ষ্যবস্তু করেছে, যেখানে ইউক্রেনের ৩০ লাখ শরণার্থীর মধ্যে ২০ লাখেরও বেশি পালিয়ে গেছে বলে জানা গেছে। আরটি,তাস।

 

 



 

Show all comments
  • Enamul Shahin ২৫ মার্চ, ২০২২, ৭:৪০ এএম says : 0
    পুতিনের মাথায় যে ভাবনা ঘুরছে তা হচ্ছে আমেরিকা ও তার মিত্রদেশসমূহের আধিপত্যবাদকে রুখে দেয়া এবং নিজের বলয় তৈরি করা।
    Total Reply(0) Reply
  • Hajrat Ali ২৫ মার্চ, ২০২২, ৭:৪১ এএম says : 0
    পুতিন বা রাশিয়া কি চায় সেটা তো স্পষ্ট করে দিয়েছেন। পশ্চিমা বিশ্ব রাশিয়ার দোরগোরায় গিয়ে হাডুডু খেলতে চাইলে রাশিয়ার কি করা উচিৎ সেটা নিয়ে গবেষণা করা উচিৎ। রাশিয়ার দরকার সম্মান বা স্বীকৃতি। তাদের চাওয়ার সেটা অধিকারও আছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Mir Nashir Faruque ২৫ মার্চ, ২০২২, ৭:৪১ এএম says : 0
    পুতিনের মাথায় একটা জিনিস কাজ করে শক্তি আরো শক্তি প্রয়োগ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পুতিন

২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ