পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েপ এরদোগান সোমবার ফের বলেছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের জেরে কোনো দেশের সাথেই সম্পর্ক ছিন্ন করতে চায় না তুরস্ক। তিনি দুই দেশের সাথেই সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চান। যুদ্ধ বন্ধে তুরস্ক ১৯৩৬ সালের মন্ট্রিক্স সনদের আওতায় পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। ওই সনদ অনুযায়ী, যুদ্ধ চলাকালে তুরস্কের প্রণালী দিয়ে বিদেশি যুদ্ধজাহাজ চলাচলে বাধা দিতে পারবে তুরস্ক। রাশিয়া ও ইউক্রেনের সাথে তুরস্কের পানিসীমা রয়েছে এবং দুই দেশের সাথেই তুরস্কের সম্পর্ক ভালো। ন্যাটোর মিত্র তুরস্ক রবিবার রাশিয়ার অভিযানকে ‘যুদ্ধ’ বলে অভিহিত করে। ইউক্রেনের বিষয়ে ‘সিদ্ধান্তহীনতায়’ ভোগার জন্য এরদোগান যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্রদের সমালোচনা করেছেন। রয়টার্স এ খবর জানায়। এদিকে, ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে চলমান যুদ্ধের মধ্যেই বসফরাস ও দার্দানেলিস প্রণালী দিয়ে যুদ্ধজাহাজ চলাচল বন্ধের ঘোষণা করেছে তুরস্ক। সোমবার রাজধানী আঙ্কারায় মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মওলুদ চাভুশওলু এই ঘোষণা করেন। মওলুদ চাভুশওলু বলেন, মনট্রো চুক্তি অনুযায়ী তুরস্ক কৃষ্ণসাগর উপকূলীয় ও বাইরের দেশগুলোকে সতর্ক করছে, তারা যেন তুরস্কের সমুদ্রসীমা দিয়ে যুদ্ধজাহাজ চলাচল করানো থেকে বিরত থাকে। ১৯৩৬ সালে ফ্রান্সের মনট্রো শহরে তুরস্ক ও ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়াসহ বিশ্বের অন্য নয়টি দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত এই চুক্তি অনুযায়ী তুরস্কের ভূখণ্ডের দার্দানেলিস ও বসফরাস প্রণালীর ওপর নিয়ন্ত্রণ পায় আঙ্কারা। এই চুক্তি অনুসারেই যুদ্ধের সময় ভূমধ্যসাগর ও কৃষ্ণসাগরকে সংযোগ করা এই দুই প্রণালীর মধ্যে যুদ্ধজাহাজ চলাচলে বাধা দেয়ার ক্ষমতা পায় তুরস্ক। সংবাদ সম্মেলনে মওলুদ চাভুশওলু বলেন, ‘আমরা তীরবর্তী ও তীরবর্তী নয় সকল দেশকেই এই প্রণালী দিয়ে যুদ্ধজাহাজ চলাচল করানোর জন্য সতর্ক করছি।’ চাভুশওলু বলেন, ‘আজ পর্যন্ত রাশিয়া আমাদের কাছে জিজ্ঞেস করেছিলো আমরা কোথায় কোথায় মনট্রো চুক্তি প্রয়োগ করবো। আমরা তাদের বলেছি এই চুক্তি আমরা কঠোরভাবে পালন করবো।’ এর আগে ইউক্রেন তুরস্কের কাছে রাশিয়ার যুদ্ধজাহাজের জন্য ভূমধ্যসাগর থেকে কৃষ্ণসাগরে চলাচলে তুরস্কের প্রণালী বন্ধ করার আহ্বান করার পর আঙ্কারা এই পদক্ষেপ নেয়। তবে তুরস্কের এই সিদ্ধান্তে ইউক্রেন-রাশিয়ার মধ্যে সংঘর্ষে কী প্রভাব ফেলবে তা এখনো স্পষ্ট নয়। ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার ছয়টি যুদ্ধজাহাজ ও একটি সাবমেরিন তুরস্কের এই প্রণালী পার হয়েছিলো। তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই ঘোষণা দেশটির প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগানের ‘মনট্রো চুক্তি’ প্রয়োগের পরিকল্পনা ঘোষণার পরেই এলো। এরদোগান জানান, তুরস্ক রাশিয়া বা ইউক্রেন কারো সাথেই সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করবে না। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের জাতীয় স্বার্থ বিসর্জন দিতে পারি না। কিন্তু আমরা আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ভারসাম্যকে উপেক্ষা করতে পারি না।’ গত ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে পূর্ব ইউক্রেনের রুশপন্থী বিদ্রোহী ও সরকারি বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এর জেরে সোমবার বিদ্রোহীদের দুই রাষ্ট্র ‘দোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিক’ ও ‘লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিক’কে স্বীকৃতি দিয়ে শান্তি রক্ষায় ওই অঞ্চলে সৈন্য পাঠায় রাশিয়া। পরে ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশপন্থী বিদ্রোহীদের সহায়তার লক্ষ্যে রুশ স্থল, নৌ ও বিমান বাহিনীকে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার অভিযানের নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ইউক্রেনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রুশ আগ্রাসনে দেশটিতে রোববার পর্যন্ত ১৪ শিশুসহ ৩৫২ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। রয়টার্স, আল-জাজিরা,আনাদোলু এজেন্সি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।