পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রোজার আভাস পেতেই অসহনীয় হয়ে উঠছে নিত্যপণ্যের দাম। হঠাৎ করেই রাজধানীর বাজারগুলোতে অস্বাভাবিক বেড়েছে পেঁয়াজের দাম, এক লাফে হয়েছে প্রায় দ্বিগুণ। দুই-তিন দিন আগেও যে পেঁয়াজের কেজি ছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। বর্তমানে ২৫ টাকা বেড়ে তা দাঁড়িয়েছে ৬০ টাকায়। রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে। একই অবস্থা সারা দেশেই। যদিও বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশী দাবি করেন ২৫ টাকা দরেই বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। গত শুক্রবার রংপুর সার্কিট হাউস মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী যখন ২৫ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রির দাবি করেন; তখন তার সংবাদ সম্মেলনস্থল থেকে কয়েকগজ দূরে রংপুর সিটি করপোরেশন মার্কেটে ৫০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছিল। বাণিজ্যমন্ত্রী দাবি, পেঁয়াজের দাম এখন কমে গেছে। কৃষকরা দাম পাচ্ছেন না। প্রতি কেজি পেঁয়াজ উৎপাদনে কৃষকদের খরচ ১৮ থেকে ২০ টাকা। সেখানে বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকায়।
অথচ সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ২৫ টাকা পর্যন্ত। ব্যবসায়ীরা দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি করছেন ৬০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে এই পেঁয়াজের কেজি ছিল ৩০-৩৫ টাকা। দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে ব্যবসায়ীরা বৃষ্টিকেই দায়ী করেন। তারা বলছেন, বৃষ্টির কারণে অনেক ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। অনেক পেঁয়াজ পচে গেছে।
রাজধানীর খুচরা বাজারে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ দিন প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৩০-৩৫ টাকা। পাশাপাশি প্রতিকেজি আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ৪০ টাকা ছিল। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) দৈনিক দ্রব্যমূল্য তালিকা অনুযায়ী, সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ৫০ শতাংশ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ বেশি দরে।
রাজধানীর কাওরান বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা সোনাই আলী বলেন, পাইকারি বাজারে হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছে। যে কারণে বেশি দামে এনে বাড়তি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। কিন্তু পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের কোনো সংকট নেই। এ বাজারের ক্রেতা শাকিল বলেন, একে একে সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়ছে। শুধু পেঁয়াজ বাকি ছিল, রমজানের আগে সেটিরও দাম বাড়ানো হয়েছে। রাজধানীর সর্ববৃহৎ পাইকারি আড়ত শ্যাম বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী শংকর চন্দ্র ঘোষ বলেন, কয়েকদিন আগে হঠাৎ বৃষ্টির কারণে পেঁয়াজের অনেক ক্ষতি হয়েছে। এ কারণে এখন দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। পাশাপাশি দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কমায় আমদানি করা পেঁয়াজের চাহিদা বেড়েছে, ফলে দাম বেড়েছে।
চট্টগ্রাম নগরীতে পেঁয়াজের দাম প্রতিকেজিতে মানভেদে ১২ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। দেশি পেঁয়াজ চারদিন আগে পাইকারি বাজারে কেজিপ্রতি বিক্রি হয়েছিল ২৮ টাকা থেকে ৩০ টাকা, যা এখন ৩৮ থেকে ৪০ টাকা। আর খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা থেকে ৫২ টাকা কেজি দরে। চারদিন আগে পাইকারি বাজারে ভারতীয় ভালোমানের পেঁয়াজ দাম ছিল ৩৩ টাকা থেকে ৩৫ টাকা, যা এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৪৭ টাকা। আর খুচরা বাজারে ভালোমানের ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৮ টাকায়। গত সপ্তাহে পাইকারি বাজারে মিয়ানমারের পেঁয়াজের দাম ছিল কেজিপ্রতি ৩০ টাকার মতো।
পাইকারি বাজারে এখন মিয়ানমারের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৪০ টাকা দামে। আর খুচরা পর্যায়ে মিয়ানমারের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫২ টাকা। খাতুনগঞ্জের পেঁয়াজের বৃহত্তর পাইকারি মার্কেট হামিদুল্লাহ মিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিস বলেন, দেশি পেঁয়াজের দাম প্রতিকেজিতে প্রায় ১৫ টাকার বেশি বেড়েছে। ভারতীয় ভালোমানের পেঁয়াজের দামও কেজিপ্রতি ১০ টাকার বেশি বেড়েছে। ভারতীয় রফতানিকারক, ব্যবসায়ী ও মজুদদাররা সিন্ডিকেট করে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে পেঁয়াজের তেমন সংকট নেই।
এছাড়া হিলি বাজারে তিন দিনের ব্যবধানে কেজিপ্রতি মানভেদে ১০ টাকা বেড়েছে দেশি পেঁয়াজের দাম। সরবরাহ কমায় দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এ বাজারে দেশি পেঁয়াজ ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজ কিনতে আসা রায়হান কবির জানান, প্রায়ই নিত্যপণ্যটির দাম বাড়ছে। এতে আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষদের বিপাকে পড়তে হচ্ছে। তিনি নিয়মিত বাজার তদারকির দাবি জানান। হিলি বাজারের ব্যবসায়ী শাকিল মাহমুদ জানান, দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ ও ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানি কম। সেই জন্য দাম বেড়েছে। সরবরাহ বৃদ্ধি হলে আবারও দাম কমতে পারে।
একই চিত্র জামালপুরেও। ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ। জামালপুরে মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার যেখানে খুচরা বাজারে প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হতো ৩০ টাকা। গতকাল সেটির দাম হয়েছে ৬০ টাকা।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষক ড. জায়েদ বখত বলেন, করোনা মহামারিতে মানুষের আয় কমেছে, অন্যদিকে বেড়েছে নিত্যপণ্যের দাম। এতে সবচেয়ে বেশি অসুবিধায় পড়ে সীমিত আয়ের মানুষজন। নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত মনিটরিংয়ের পাশাপাশি মুনাফাখোরদের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থান থাকা জরুরি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।