পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
গরুর গোশতে ভারতের ওপর নির্ভরতা কাটিয়ে উঠার পর পেঁয়াজেও প্রতিবেশী দেশটির ওপর নির্ভরতা কাটিয়ে উঠছে বাংলাদেশ। প্রতিবছর সেপ্টেম্বর মাসে হঠাৎ করে পেঁয়াজের ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশে নিষিদ্ধ করায় দেশের বাজারে পণ্যটির দাম বেড়ে যায়। বিপদে পড়েন ভোক্তারা। রসুুঁই ঘরের মশলা জাতীয় এই পণ্যটিতে স্বাবলম্বী হতে কাজ করছে দেশের কৃষি বিজ্ঞানী ও কৃষকরা। পেঁয়াজের সঙ্কট মোকাবিলায় আসছে আগাম জাতের পেঁয়াজ বারি-৫। উত্তরাঞ্চলের ১০টি জেলার কিছু এলাকায় এই পেঁয়াজ ক্ষেতে শোভা পাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কৃষকদের সহায়তা করা হলে পেঁয়াজের জন্য ভারতের দিকে আর তাকাতে হবে না।
দেশে প্রতিবছর পেঁয়াজের চাহিদা প্রায় ২৮ থেকে ৩০ লাখ টন। উৎপাদন হয় ২২ থেকে ২৬ লাখ টন। তবে ৪ থেকে ৬ লাখ টন পেঁয়াজ নস্ট হয়ে যায়। ফলে প্রতি বছর ৬ থেকে ৯ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। মিশর, তুরস্ক, পাকিস্তান, মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আনা হলেও পরিবহন খরচ কম হওয়ায় বেশির ভাগ পেঁয়াজ আমদানি করা হয় ভারত থেকে। ফলে ভারত সেই দুর্বলতা বুঝতে পেরেই প্রতিবছর বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয়। এবার পুজার উপহার ইলিশ পাওয়ার পরপরই পেঁয়াজ বন্ধ করে দেয়া হয়। কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, বারি-৫ জাতের পেঁয়াজ উৎপাদন করা গেলে সঙ্কটের সময় পেঁয়াজের আমদানি নির্ভরতা কমানো যাবে এবং দামও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
উল্লেখ নরেন্দ্র মোদি ভারতের রাষ্ট্্রীয় ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশে গরু রফতানি বন্ধ করে দেয়। এতে করে বাংলাদেশ গরুর গোশতের সঙ্কটে পড়ে। পরবর্তীতে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় ও চরাঞ্চলের কৃষকরা ব্যাপকহারে গরু লালনপালন শুরু করে। এতেকরে দেশি গরু-ই সারাবছরের গোশতের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি কোরবানির পশুর চাহিদাও মেটাচ্ছে।
জানা গেছে, সারাদেশে পেঁয়াজের দামে যখন মানুষ দিশেহারা; তখন নিজের জমিতে আগাম জাতের পেঁয়াজ লাগিয়ে ভালো ফলন পাওয়ার আশায় পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার মহাদেবপুর গ্রামের কৃষক শাহিনুর রহমান এখন নিশ্চিন্ত। শাহিনুরের মতো বগুড়া, গাইবান্ধা, জয়পুরহাট, পাবনার অনেক কৃষক আগাম পেঁয়াজ নিয়ে আশায় বুক বাঁধছেন।
জানা যায়, বগুড়ার মসলা গবেষণা কেন্দ্র উদ্ভাবিত বারি-৫ জাতের উচ্চ ফলনশীল পেঁয়াজ এ বছর পরীক্ষামূলক আবাদ করেছেন শাহিনুর রহমান। পাবনা জেলা কৃষি স¤প্রসারণ বিভাগের তত্ত্বাবধানে ২ বিঘা জমিতে এই আগাম জাতের উচ্চফলনশীল পেঁয়াজের গাছ বড় হচ্ছে। বগুড়া মসলা গবেষণা কেন্দ্র জানিয়েছে, দেশের মসলার মধ্যে পেঁয়াজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। তাই পেঁয়াজের উন্নত জাত আবিষ্কারে তারা নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে পেঁয়াজের ছয়টি জাত নিয়ে গবেষণা করলেও বারি-৫ জাতের এ পেঁয়াজ গবেষণায় সফলতা পেয়েছে। ফলে, কৃষক পর্যায়ে পরীক্ষাম‚লক আবাদ করা হচ্ছে।
জানা গেছে, গবেষণায় সফলতা পাওয়ায় বারি-৫ জাতের এ পেঁয়াজ পরীক্ষাম‚লক আবাদের জন্য এ বছর দেশের ১০টি জেলাকে বাছাই করা হয়েছে। এসব জেলার প্রায় ৫০ বিঘা জমিতে পরীক্ষামূলক নতুন জাতের এ পেঁয়াজ বর্ষার শেষে আবাদ করা হয়েছে। এ ছাড়াও চিনিকলের জমিতে পেঁয়াজ চাষ হচ্ছে। নির্ধারিত জেলা ছাড়াও বেশি পেঁয়াজ উৎপাদনকারী জেলার মধ্যে, পাবনা, কুষ্টিয়ার আগ্রহী কৃষকের কাছেও পরীক্ষাম‚লক আবাদেও জন্য বীজ সরবরাহ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে পরীক্ষাম‚লক আবাদ সম্পন্ন হয়েছে। এখন উৎপাদনে সফলতা পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে।
পরীক্ষাম‚লক আবাদে সফলতা পাওয়া গেলে আগামী বছর থেকে নতুন জাতের এ পেঁয়াজ বাণিজ্যিকভাবে চাষ করার উদ্যোগ নেয়া হবে বলে জানায় গবেষণা কাজে নিয়োজিত দপ্তরটি।
বগুড়া মসলা গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. হামিম রেজা বলেন, বারি-৫ জাতের এ পেঁয়াজ আবাদের জন্য প্রথমে বীজতলা করতে হবে। বীজতলায় বারি-৫ জাতের পেঁয়াজের বীজ থেকে চারা উৎপাদন করার পর ৪০ থেকে ৪৫ দিন বয়সী চারাগুলো উঁচু জমিতে বপন করতে হবে। যাতে জমিতে পানি না জমে। জমিতে চারা রোপণের ৬০ দিনের মধ্যে ফলন পাওয়া যাবে। সে হিসাবে ৯০ থেকে ১০০ দিনের মধ্যে এ পেঁয়াজের উৎপাদন করা যাবে। ৯০ থেকে ১০০ দিনের মধ্যে এ পেঁয়াজের উৎপাদন করা যাবে।
জানা যায়, জুন-জুলাই মাসে বীজতলা করে এই পেঁয়াজের বীজ বপন করতে হয়। যাতে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসের মধ্যেই এর ফলন পাওয়া যায়। বারি-৫ জাতের এ পেঁয়াজ বছরের অন্য সময়েও রোপণ করা যাবে বলে তিনি জানান।
উচ্চফলনশীল জাতের এই পেঁয়াজ বিঘা প্রতি ৪০ থেকে ৪৫ মণ পর্যন্ত ফলন পাওয়া যাবে বলে জানা গেছে। নদীমার্তৃক বাংলাদেশে বর্ষার শেষে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে প্রতিবছর পেঁয়াজের সঙ্কট হয়। কারণ এ সময় মাঠে কোনো পেঁয়াজ থাকে না। কৃষকের ঘরেও পর্যাপ্ত পেঁয়াজ থাকে না। ফলে, সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে প্রতিবছর পেঁয়াজের দাম বাড়ে।
জানা গেছে, কৃষক পর্যায়ে পরীক্ষামূলক উৎপাদনে সফলতা এলে আগামী বছর থেকে নতুন জাতের এ পেঁয়াজ বাণিজ্যিকভাবে সারাদেশে আবাদের উদ্যোগ নেয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।