Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সীমান্ত বন্ধের প্রভাব ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পেঁয়াজের দামে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৭ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০১ এএম

ভারতে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এ অবস্থায় সরকার দেশটির সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করার ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে বাজারে পেঁয়াজের দামে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা দিয়েছে। যদিও ঘোষণায় বলা রয়েছে, ভারতের সঙ্গে সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের জনচলাচল বন্ধ থাকলেও চালু থাকবে পণ্য আমদানি-রফতানি। তারপরও কেন পেঁয়াজের দাম বাড়ছে তার সঠিক কোনো কারণ বলতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা।

জানা গেছে, বাংলাদেশের প্রয়োজনীয় আমদানির দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎস দেশ ভারত। মোট আমদানির প্রায় ১৩ শতাংশ আসে প্রতিবেশী এ দেশ থেকে। শিল্পের কাঁচামাল, মেশিনারিজ ও রাসায়নিক আমদানি হয় বেশি। আমদানির তালিকার ওপরের দিকে রয়েছে মোটরগাড়ি ও এর যন্ত্রাংশ। এ ছাড়া চাল, কাঁচামরিচ, টমেটো, পেঁয়াজের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যও আমদানি করেন ব্যবসায়ীরা। দেশের স্থল সীমান্তের বড় অংশ ভারতের সঙ্গে। অধিকাংশ আমদানি হয় স্থল সীমান্ত দিয়ে। কিছু পণ্য আসে নৌপথে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ভারত থেকে বাংলাদেশ ৫৮০ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) ভারত থেকে ৩৭০ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করেছে বাংলাদেশ। অন্যদিকে, ভারত বাংলাদেশের জন্য বড় রফতানি বাজার হতে চলেছে। দেশটিতে বাংলাদেশের রফতানি বছরে গড়ে ১০০ কোটি ডলার। সা¤প্রতিক বছরগুলোতে রফতানি বাড়ছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা ভারতের বাজারে ৯৬ কোটি ৪১ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছেন।
গতকাল রাজধানীর রামপুরা, মধুবাগ ও মালিবাগ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দেশি ও হাইব্রিড পেঁয়াজে (ভারতীয়) কেজিপ্রতি দাম বেড়েছে ৪-৫ টাকা। বাজারঘুরে দেখা গেছে, দেশি ভালো মানের পেঁয়াজ কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকায়। পাইকারি বাজারে যার দাম ৩৭ থেকে ৩৮ টাকা। অন্যদিকে লাল বড় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৪০ টাকায়। পাইকারি বাজারে যার দাম কেজিপ্রতি ৩৬ থেকে ৩৬ টাকা ৫০ পয়সায়। দু’একদিন আগেও বাজারে দেশি পেঁয়াজ কেজিপ্রতি বিক্রি হয়েছে ৩৮-৪০ টাকায়। আর হাইব্রিড পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩৪-৩৬ টাকায়। হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে রামপুরা বাজারের ব্যবসায়ী মাহিম বলেন, সঠিক কারণ আমাদের জানা নেই। পাইকারি বাজারে দাম বেড়েছে, তাই খুচরা পর্যায়েও পেঁয়াজ বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। আসলে সরকারের মনিটরিং নেই। শুনলাম ভারতের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ, এরপরই বাজার অস্থির। এটা কেন হবে, আমার মাথায় আসে না।
এছাড়া দাম বৃদ্ধির ইঙ্গিত মিলেছে ভোজ্য তেলেও। পাইকারি বাজারে ইতোমধ্যে তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে বলে দাবি খুচরা ব্যবসায়ীদের। কারণ বোতলজাত তেলে পাইকারি পর্যায়ে দাম বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে। আগামীকালই (মঙ্গলবার) সয়াবিন তেলের খুচরা পর্যায়ে দাম বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
এছাড়া বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেল (৫ লিটার) ৬৬০ থেকে ৬৮০ টাকা, আদা ১০০ টাকায়, রসুন ১২০ থেকে ১২৫, ছোলা ৭৫ থেকে ৮০, দেশি মসুর ডাল ১১০ থেকে ১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে গরুর মাংস ৫৮০ থেকে ৫৯০ টাকা, মুরগির ডিম ডজনপ্রতি ৯০ থেকে ৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ভারতে করেনাভাইরাস পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করায় গত রোববার দেশটির সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। ওই ঘোষণা অনুযায়ী ১৪ দিন সীমান্ত বন্ধ থাকবে। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় গঠিত জাতীয় কারিগরি কমিটির পরামর্শে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে পণ্য আমদানি-রফতানি এই নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত থাকবে। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ভারত থেকে আসা পণ্যবাহী যানবাহনগুলো বাংলাদেশের সীমানায় ঢোকার আগে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। যানবাহনের চালক ও সহায়তাকারীদের কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। তবে এই দুই সপ্তাহে, পণ্য পরিবহনে সড়কের চেয়ে রেল যোগাযাগকে উৎসাহিত করছে সরকার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পেঁয়াজের বাজার

২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
২২ সেপ্টেম্বর, ২০২০
২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ