পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি নিয়ে শুরু হয়েছে ভারতের নাটক। পাঁচ দিন বন্ধ রেখে গত শনিবার ভারতে আটকে পড়া পেঁয়াজ রফতানি শুরু করেন সে দেশের ব্যবসায়ীরা। কিন্তু কয়েক ঘন্টা পর রোববার হিলি ও সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে আবারও পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দিয়েছে ভারত। তবে বাংলাদেশে পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে। রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দাম কমার এ চিত্র পাওয়া গেছে।
এদিকে পেঁয়াজ নিয়ে ভারতের নাটক এবং দেশের বাজারে দাম বৃদ্ধির কারণে কাওয়ান বাজার ও শ্যামবাজারে পেঁয়াজ ব্যবসায়ীদের দোকান-আড়তে র্যাবের অভিযানে ব্যবসায়ীদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, পেঁয়াজ এমনিতেই পচনশীল পণ্য। তারপর ভারত থেকে যে পেঁয়াজ আসছে তার এক তৃতীয়াংশ পচা। অথচ যখন-তখন কারওয়ান বাজারসহ পেঁয়াজের বাজারে র্যাবের অভিযান পরিচালনা করে। শ্যামবাজার ও কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, তারা নিয়ম মেনেই ব্যবসা করেন। কিন্তু যখন-তখন অভিযান হলে তারা প্রতিবাদ কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যবসায়ী জানান, তারা বাস্তবতাকে মেনে নিয়েই ব্যবসা করেন। চাহিদার অনুপাতে পণ্যের সরবরাহ থাকলে বাজারে দাম স্থিতিশীল থাকে। সেদিকে নজর না দিয়ে অভিযানের নামে পণ্য নস্ট করে ব্যবসায়ীর সর্বনাশ তারা মেনে নিতে পারছেন না।
গতকাল রোববার বিকেল পর্যন্ত হিলি ও ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে কোনও পেঁয়াজবাহী ট্রাক দেশে প্রবেশ করেনি। নতুন করে নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ রফতানির সম্ভাবনা নেই বলেও জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তবে গুঞ্জন উঠেছে ২২০ ডলার থেকে বাড়িয়ে প্রতি টন পেঁয়াজ ৭৫০ মার্কিন ডলারে নতুন করে এলসি দেয়া হলে ভারত পেঁয়াজ রফতানি করতে পারবে। শনিবার আমদানি হওয়ায় ভালোমানের কিছু পেঁয়াজ গতকালের চেয়ে কেজিতে ১০ টাকা কমে আজ ৪০-৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির পর হিলি স্থলবন্দরে পেঁয়াজের দাম কমে এসেছে। প্রকার ভেদে এসব পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৪০ টাকা প্রতি কেজি দরে। অতিরিক্ত পঁচে যাওয়া পেঁয়াজের প্রতি ৫০ কেজির বস্তা বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ১০০ টাকায়।
তবে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকলেও অন্যান্য মালামাল আমদানি স্বাভাবিক রয়েছে। আজ সোমবার হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ১৪ ও ১৫ তারিখের রফতানি অনুমতি পাওয়া পেঁয়াজ পুনরায় দেশে আমদানি হতে পারে বলে বন্দরের ব্যবসায়ীরা বলছেন। এদিকে শনিবারের আমদানি করা পঁচা পেঁয়াজ নিয়ে বিপাকে পড়েছে আমমদানিকারকরা। এতে তাদের অর্ধ কোটি টাকার লোকশান গুনতে হবে।
হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক শাহিনুর ইসলাম জানান, গত ১৩ তারিখে রফতানির অনুমতি পাওয়া পেঁয়াজ গুলো গত শনিবার হিলি স্থলবন্দর দিয়ে প্রবেশ করেছে। এদিন ভারত থেকে ১১টি ট্রাকে মোট ২৪৬ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে এই বন্দর দিয়ে।
হিলি বন্দরের আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুনুর রশিদ বলেন, ৫ দিন ধরে পেঁয়াজ গুলো সীমান্তের ওপারে আটকা থাকায় এবং দেশে প্রবেশ করতে না পারায় অতি মাত্রার গরম ও বৃষ্টিতে ভিজে পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে। প্রতি ট্রাকের ৭৫ শতাংশ পেঁয়াজ পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে বলে জনিয়েছে বন্দরের ব্যবসায়ীরা। এ অবস্থায় ক্ষতির মুখে পড়েছে পেঁয়াজ আমদানিকারকরা। উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাফিউল আলম বলছেন, হিলিতে পেয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে।
অন্যদিকে, হিলির মতই ভোমরা বন্দর দিয়ে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। গতকাল রোববার বিকেল সোয়া চার পর্যন্ত কোনো পেঁয়াজের ট্রাক ভারত থেকে ভোমরা বন্দরে প্রবেশ করেনি। এর আগে পাঁচদিন বন্ধ থাকার পর গত শনিবার দুপুর থেকে ভারতে আটকে পড়া পেঁয়াজ ভর্তি ১৬৩ টি ট্রাকের মধ্যে মাত্র ৩১ টি ট্রাক ভোমরা বন্দরে প্রবেশ করে। তবে, আমদানীকৃত এসব পেঁয়াজের ৬০ শতাংশ পঁচে গেছে। ভারতে আটকে থাকা বাকী ট্রাকের পেঁয়াজের অবস্থাও ভালো নয় বলে জানা গেছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, আটকে পড়া ট্রাকের পেঁয়াজ দ্রুত খালাস না করলে সমস্ত পেঁয়াজই পঁচে যাবে। এতে পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা সর্বশান্ত হবে। ইতোমধ্যেই পেঁয়াজ আমদানিকারকদের কয়েক কোটি টাকার লোকসান গুনতে হচ্ছে। ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, শনিবার পেঁয়াজের গাড়ী ঢুকলেও রহস্যজনকভাবে গতকাল রোববার কোনো ট্রাক ঘোজাডাঙ্গা থেকে ভোমরা বন্দরে প্রবেশ করেনি। এ বিষয়ে একাধিকবার ঘোজাডাঙ্গা বন্দর ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দদের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তারা পরিষ্কারভাবে কিছু জানাচ্ছেন না। আদৌ আর কোনো পেঁয়াজেরট্রাক আসবে কি-না তা স্পষ্ট করছে না ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।
ভোমরা শুল্ক স্টেশনের সহকারী কমিশনার আমির মোমিন জানান, এখনো কয়েক হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ ভর্তি ট্রাক ঘোজাডাঙ্গায় রয়েছে বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায়। তবে, একদিন চালুর পর হঠাৎ করে পেঁয়াজের কোনো গাড়ী না আসার বিষয়ে তিনি স্পষ্টভাবে কিছু জানাতে পারেননি।
একি অবস্থা বেনাপোল বন্দরেও। ওপারে ভারতের পেট্রাপোল বন্দর এলাকায় আটকে থাকা পেঁয়াজের কোন ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করেনি। কবে নাগাদ আসবে তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি ওপারের রফতানিকারকরা। গত শুক্রবার রাতে ওপারে শুধুমাত্র আটকে থাকা পেয়াজের ট্রাক গুলো বাংলাদেশে রফতানির অনুমতি দেয় ভারতীয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বেনাপোলের ওপারে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে আটকে থাকা ট্রাকের পেঁয়াজ ৪০-৫০ ভাগ পঁচে যাওয়ায় পেয়াজের ট্রাকগুলো গত বৃহস্পতিবার রাতে ফিরিয়ে নিয়ে গেছে রফতানিকারকরা। তারা স্থানীয় বাজারে ও বিভিন্ন আড়তে কম দামে বিক্রি করে দিয়েছে। ফলে তাদের মোটা অঙ্কের লোকসান গুনতে হচ্ছে।
গতকাল রোববার বনগাঁও এলাকায় ১৫টি পেঁয়াজ বোঝাই ট্রাক গতরাতে ঘোজাডাংগা বন্দর থেকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে পেট্রোপোল বন্দর দিয়ে রফতানির জন্য। ওপারের রফতানিকারক ভজন দাস জানিয়েছেন, পেঁয়াজের পূর্বের রফতানিমূল্য ২২০ ডলার থেকে বাড়িয়ে প্রতিটন ৭৫০ মার্কিন ডলারে নতুন করে এলসি দেয়া হলে তারা পেঁয়াজ রফতানি করতে পারবে।
বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার আজিজুর রহমান জানান, বেনাপোল বন্দর দিয়ে অন্য সব ধরনের পণ্য আমদানি রফতানি চালু রয়েছে বর্তমানে। পেঁয়াজ আমদানি হলেও দ্রুত খালাসের জন্য মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।