গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
রাজধানীর ভাটারার নূরের চালা এলাকার একটি বাসা থেকে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিবিএ’র এক শিক্ষার্থী নাজমুল আলম সেজানের (২১) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ বলছে- এটি ‘অস্বাভাবিক’ মৃত্যু।
গতকাল মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় সেজানকে অচেতন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান, সেজানকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসেন এক তরুণী ও তার মা। পরীক্ষা করে সেজানকে মৃত ঘোষণা করেন সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক।
পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই তরুণী ও তার মাকে আটকে রাখা হয়েছে। নূরের চালা এলাকার যে বাসা থেকে সেজানকে হাসপাতালে আনা হয় সেটি ওই তরুণীদের বাসা।
ওই তরুণী পুলিশকে জানিয়েছেন, ‘মঙ্গলবার দুপুরের পর তাদের ভাড়া বাসায় আসেন সেজান। এ সময় তিনি নিজের ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। পরে উঠে দেখেন বাসার ড্রইং রুমে সেজানের লাশ ঝুলছে!’
সেজানের ছোট ভাই নাফিজুল শাহ জানান, ওই তরুণীর সঙ্গে তার ভাইয়ের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। ভাইয়ের মৃত্যুতে তরুণীর দায় রয়েছে বল তিনি মনে করেন।
তবে সেজান কখন ও কেন ওই তরুণীর বাসায় গিয়েছিলেন এবং সেখানে কী ঘটেছিল তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।
ভাটারা থানার ওসি সাজেদুর রহমান জানান, পুলিশ দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।
জানা যায়, সেজানের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার কাশিমপুরে। তবে সে বাবা-মায়ের সঙ্গে গুলশানের কলাচাঁদপুরে থাকতেন। তিন ভাইয়ের মধ্যে সে সবার বড় ছিল।
বান্ধবী পরিচয় দেওয়া নারী হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যদের কাছে দাবি করেছেন, দুইজনেই ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন এবং তারা ভালো বন্ধু। মঙ্গলবার দুপুরে সেজান তাদের বাসায় আসে। সে তার পারিবারিক নানা বিষয় নিয়ে আলাপ করে। দুপুরে খাওয়ার পর তিনি নিজের কক্ষে ঘুমিয়ে যান। তার মা বাইরে যান। সন্ধ্যার আগে মা বাসায় ফিরে কলিং বেল দিলে তিনি ঘুম থেকে উঠে দেখেন, ড্রয়িং রুমের সিলিং ফ্যানের হুকের সঙ্গে দুইটি গামছায় গলায় ফাঁস দিয়ে সেজান ঝুলছে। প্রতিবেশীদের সহায়তায় সেজানকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
খবর পেয়ে হাসপাতালে যান সেজানের বাবা রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী সাইফুল আলম। তিনি বলেন, সোমবার তার ছেলে বাসা থেকে বের হয়। রাতে আর ফেরেনি। এরপর তারা মোবাইল ফোনটিও বন্ধ ছিল। হাসপাতাল থেকে পুলিশের ফোন পেয়ে এসে দেখি ছেলের লাশ।
তিনি জানান, তার ছেলের আত্মহত্যার কোনো কারণ তিনি পাচ্ছেন না। বান্ধবীর বাসায় সেজানকে হত্যা করা হতে পারে। তিনি ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।