বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
টাঙ্গাইলের সখিপুর উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান "সখিপুর পিএম পাইলট মডেল গভঃ স্কুল এন্ড কলেজের" পুরাতন ছাত্রাবাসটি দীর্ঘদিন ধরে অব্যবহৃত। জীর্ণশীর্ণ টিনের ঘরের চারপাশে ঝোপঝাড় তৈরি হয়ে ভুতুড়ে পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে পুরানো ওই ছাত্রাবাস মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ীদের নিরাপদ বিচরণ ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে । স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, মাদকসেবীরা যাতায়াত করে নিয়মিত, সম্প্রতি জুয়াড়ি ও যৌনকর্মীদের আনাগোনাও লক্ষ্য করা যাচ্ছে পরিত্যক্ত ওই ছাত্রাবাসটিতে। এতে যেকোন সময় বড় ধরনের অঘটন ঘটার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের আবাসন সঙ্কট দূর করতে ২০০৭ সালে ছাত্রাবাসটি প্রতিষ্ঠিত হয়। পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের গড়গোবিন্দপুর এলাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও জমিদাতা শেখ হায়েত আলী সরকারের নাম অনুসারে ছাত্রাবাসের নাম দেওয়া হয় "হায়েত আলী ছাত্রাবাস"। চালু থাকা অবস্থায় ওই ছাত্রাবাসে অষ্টম-দশম শ্রেণীর নিয়মিত ১৫০ থেকে ১৮০ জন শিক্ষার্থী বসবাস করত। পরে সখিপুর পিএম পাইলট মডেল গভঃ স্কুল এন্ড কলেজ প্রাঙ্গণে পাকা ভবন নির্মাণ হলে ২০১৫ সালে পুরোনো ওই ছাত্রাবাসটি বন্ধ হয়ে যায়। সেই থেকেই ছাত্রাবাসটি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। কলেজ কর্তৃপক্ষও এর কোনো রকম রক্ষণাবেক্ষণ করছে না।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন ছাত্র ওই ছাত্রাবাসে ২০১০ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত বসবাসকারী মুস্তাকিম মুস্তাক বলেন, স্কুল জীবনের গুরুত্বপূর্ণ দুটি বছর কেটেছে ওই ছাত্রাবাসে। ওইখানে রয়েছে আমাদের কত শত সোনালী অতীত স্মৃতি! কিন্তু বর্তমানে ছাত্রাবাসের এই অবস্থা দেখে খুবই কষ্ট হয়। তিনি আরও বলেন, গ্রামের কত শিক্ষার্থী আবাসিক সঙ্কটের কারণে শহরে থেকে পড়ালেখা করতে পারে না, অন্তত তাদের জন্য হলেও ছাত্রাবাসটি পুনরায় চালু করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।
বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মো. আহাদুল্লাহ মিয়া জানান, আমি দায়িত্বে থাকা অবস্থায় ওই ছাত্রাবাসটি খুব ভালোভাবেই দেখভাল করেছি, অবসর নিয়েছি ২০১৩ সালে, কিন্তু কি কারণে ছাত্রাবাসটি বন্ধ হয়েছে আমি তা জানি না।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির অন্যতম দাতা সদস্য শেখ হায়েত আলী সরকারের নাতী শেখ মোহাম্মদ হাসনাত জানান, আমার দাদার নামে প্রতিষ্ঠিত ছাত্রাবাসটি অজানা কারণেই বন্ধ হয়ে গেছে। অযত্নে অবহেলায় দীর্ঘদিন ধরে এভাবেই পড়ে আছে। ওই ঘরে এখন মাদকাসক্ত, জুয়াড়িদের আনাগোনাসহ নানা অসামাজিক ও অপকর্ম সংগঠিত হচ্ছে। প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করেও সমাধান পাইনি। ওই প্রতিষ্ঠানের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও জমিদাতা পরিবারের সদস্য হিসেবে আমি এর সংস্কার ও পুনরায় ছাত্রাবাসটি চালু করার জোর দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সখিপুর পিএম পাইলট মডেল গভঃ স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ কেবিএম খলিলুর রহমান মোবাইল ফোনে বলেন, ওই ছাত্রাবাসটি পুনরায় চালু করার বিষয়ে আমাদেরও পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু আমাদের প্রতিষ্ঠানটি জাতীয়করণ হওয়ায় সরকারি কিছু বিধিনিষেধ রয়েছে। এ কারণে আমি ব্যক্তিগতভাবে কোন পদক্ষেপ নিতে পারি নাই। আত্তীকরণ (অঙ্গীভূতকরণ) হওয়ার পর একটি প্রকল্পের মাধ্যমে ছাত্রাবাসটি পুনরায় চালুর পরিকল্পনা রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।