বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্বশীল পদে অবস্থান করে বিভিন্ন বে-আইনী ও অবৈধ কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকার অভিযোগে সিটি মেয়র, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সচিবকে আইনী নোটিশ দিয়েছেন ৭ কাউন্সিলর। যৌথভাবে দেয়া এ আইনী নোটিশে ১৫ কার্য দিবসের মধ্যে লিখিত জবাব প্রেরণের অনুরোধ জানিয়ে তা রেজিস্ট্রি ডাকযোগে তিন জনের কাছেই পাঠান হয়েছে বলে জানা গেছে।
নগরীর ২৬নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিল হুমায়ুন কবির, ৪নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌহিদুল ইসলাম, ২৯নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরিদ আহমেদ, ২০নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জিয়াউর রহমান, ১নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আমির হোসেন বিশ্বাস, ২৪নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শরীফ মোঃ আনিছুর রহমান (আনিছ শরীফ) ও ২৩নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর এনামুল হক বাহার-এর পক্ষে বরিশাল জজ কোর্টের আইনজীবী এ্যাডভোকেট আজাদ রহমান এ নোটিস প্রদান করেছেন।
নোটিশ দাতাদের আইনজীবী আজাদ রহমান সাংবাদিকদের জানান, ২০১৮ সনের অনুষ্ঠিত বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়ে নিজ নিজ দায়িত্বে আছেন নোটিশদাতা ৭ কাউন্সিলর। কিন্তু সিটি মেয়রসহ অন্যান্যরা কর্পোরেশনের দায়িত্বশীল পদে থেকে বিভিন্ন বে-আইনী ও অবৈধ কর্মকান্ডে লিপ্ত আছেন।
বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের সকল কাউন্সিলরদের গত বছরের অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে সম্মানী ভাতা ও অন্যান্য ভাতা ৫০ হাজার টাকায় উন্নীত করা হয়। কিন্তু নোটিশ দাতাদের সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে পূর্বের ন্যায় ৪৩ হাজার ৫০০ টাকা করে প্রদান করেন। যা পরবর্তীতে একই হারে প্রদান করার কার্যক্রম অব্যাহত আছে। নোটিশ গ্রহীতাগণ একই আইনের অধীন দায়িত্বে থাকলেও নোটিশ দাতাদের সহিত এক রকম আচরণ করছেন এবং অন্যান্য কাউন্সিলরদের সাথে ভিন্নরূপ আচরণ করছেন। যা আইনগতভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। নোটিশ গ্রহীতাগণ সকল কাউন্সিলের ন্যায় নোটিশদাতা কাউন্সিলদের অক্টোবর ও নভেম্বর থেকে সম্মানী ও অন্যান্য ভাতাদি ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। কিন্তু কর্পোরেশনের ১ম সভায় নোটিশদাতা কাউন্সিলরদের সিটি কর্পোরেশনে যাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়। অথচ জনগণের স্বার্থে নোটিশ দাতাদের বিভিন্ন কাজে সিটি কর্পোরেশনে যাওয়া এবং সেখানে জনগণের জন্য কাজ করা আবশ্যকীয়।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ব্যতিরেকে এবং নোটিশ দাতাদের রেজুলেশনে স্বাক্ষর ব্যতিরেকে জনস্বার্থ উপেক্ষা করে হোল্ডিং ট্যাক্স কোন কোন ক্ষেত্রে ১০০০% পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। ফলে নোটিশ দাতাদের ওয়ার্ডের জনসাধারণের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে নোটিশ দাতাদের বিভিন্ন সময় জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হচ্ছে।
একই সাথে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের স্থায়ী বিভিন্ন কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের বে-আইনীভাবে ওএসডি করে নোটিশ গ্রহীতাগণ মাস্টার রোলে অদক্ষ বিভিন্ন কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ করে বে-আইনীভাবে সিটি কর্পোরেশনের কাজ পরিচালনা করে আসছেন। অথচ মাস্টার রোলে কর্মচারীদের দ্বারা এভাবে সিটি কর্পোরেশনের কর্মকান্ড পরিচালনার কোন সুযোগ নাই। মাস্টার রোলের কর্মচারীদের আইনগত কোন দায়বদ্ধতা না থাকায় সংগত কারণেই তাদের দিয়ে নোটিশ দাতা ও জনগণের অপূরণীয় ক্ষতি সাধিত হতে পারে। নোটিশ দাতাগণ মেয়র সহ অপর দুই কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে বিভিন্ন সময় দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। কিন্তু কোন কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় নাই।
স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন আইন) ২০০৯ এবং সংশ্লিষ্ট বিধি, প্রজ্ঞাপন, সরকারী আদেশ নির্দেশ অনুসারে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের কার্যক্রম পরিচালিত হওয়া সংগত। কিন্তু নোটিশ গ্রহীতাগণ আইন, বিধি, সরকারী নিয়মকানুন, প্রজ্ঞাপন মোতাবেক বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের কার্যক্রম পরিচালনা না করে খামখেয়ালী ভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে। যার ফলে কর্পোরেশনের কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়াছে এবং জন-অসন্তোষ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এছাড়া কর্পোরেশনের আওতাধীন হাট-বাজার সমূহ সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধি মোতাবেক টেন্ডারের মাধ্যমে ইজারা না দিয়ে এক শ্রেণীর ব্যক্তি স্বার্থ রক্ষা করে নির্দিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে দীর্ঘদিন যাবৎ ইজারা প্রদান করে আসছেন। বে-আইনীভাবে নিযুক্ত ইজারাদারদের অত্যাচারে জনসাধারণের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে নোটিশ দাতাদের এ বিষয়ে স্থানীয় জনগণের কাছে প্রতিনিয়ত জবাবদিহি করতে হচ্ছে।
নোটিশ প্রাপ্তির ১৫ কার্য দিবসের মধ্যে উল্লেখিত বিষয়ে লিখিত জবাব প্রেরণ করতে অনুরোধ করে তাতে ব্যর্থ হলে নোটিশ দাতাগণ ধরে নেবেন এ বিষয়ে তাদের কোন বক্তব্য নাই। যার কারণে নোটিশ দাতাগণ উপযুক্ত আদালতে আইনের আশ্রয় গ্রহণ করতে বাধ্য হবেন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
নোটিশের অনুলিপি স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সিনিয়র সচিব, বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার, স্থানীয় সরকার বিভাগের বরিশাল বিভাগীয় পরিচালক, জেলা প্রশাসক, স্থানীয় সরকার বিভাগের বরিশাল জেলার উপ-পরিচালক, জনতা ব্যাংক লিমিটেড বরিশাল কর্পোরেট শাখার ব্যবস্থাপক একই ব্যাংকের বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের মহা-ব্যবস্থাপক এর কার্যালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী আজাদ রহমান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।