Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চলতি বছরেও নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে নেতৃত্ব দেবে চীন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৪ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০৪ এএম

আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে বৈশ্বিক নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে শীর্ষস্থান দখলের লক্ষ্যমাত্রা হাতে নিয়েছে দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীন। নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে ভর্তুকি বন্ধ ও অত্যধিক কয়লানির্ভরতা সত্ত্বেও এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আশা প্রকাশ করেছে দেশটি। যদিও চলতি বছরেও এসব প্রতিবন্ধকতা অনেকটা অপরিবর্তিত থাকবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। খবর সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট। গত দুই বছরে বিশ্বব্যাপী শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি দেখেছে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাত। নতুন প্রজন্মের এ জ্বালানি উৎস থেকে ২০২০ সালে উৎপাদন হয়েছে প্রায় ২৮০ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ, যা ২০১৯ সালের তুলনায় ৪৫ শতাংশেরও বেশি। ১৯৯৯ সালের পর থেকে এটি বছরভিত্তিক হিসেবে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধির দৃশ্য। ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির (আইইএ) তথ্যমতে এমনটা জানা যায়। সদ্যসমাপ্ত বছরের নভেম্বরে গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত আবহাওয়া সম্মেলনে (কপ২৬) এ খাতের জন্য আরো শক্তিশালী নীতিমালা ও আবহাওয়া লক্ষ্যমাত্রা পূরণে অধিকতর উচ্চাকাক্সক্ষা প্রকাশ করা হয়। এ অনুযায়ী ২০২০ থেকে ২০২৬ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী নবায়নযোগ্য জ্বালানি সক্ষমতা ৬০ শতাংশের বেশি বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করছেন বিশ্লেষকরা। উল্লিখিত সময়ে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে আহরিত বিদ্যুতের পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ৪ হাজার ৮০০ গিগাওয়াট পরিমাণ। আইইএর তথ্যমতে, ব্যতিক্রমভাবে উচ্চ ক্ষমতার সংযোজন ২০২২ সালে অত্যন্ত স্বাভাবিক হয়ে উঠবে। এ সময়ে নতুন সংযোজিত বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোর ৯০ শতাংশই নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎস হিসেবে ভূমিকা রাখবে। চলতি বছরে ফটোভোল্টাইক সোলার প্রযুক্তির উন্নয়নও অন্যান্য সময়ের তুলনায় সর্বোচ্চ পরিমাণ ঘটবে। ২০২২ সালে এ প্রযুক্তির মাধ্যমে ১৬২ গিগাওয়াট অতিরিক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হবে, যা মহামারী-পূর্ব ২০১৯ সালের প্রবৃদ্ধির তুলনায় প্রায় ৫০ শতাংশ বেশি। আইইএর তথ্য বলছে, নতুন বছরে বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলোর অতিরিক্ত উৎপাদনক্ষমতা কিছুটা স্থবির হয়ে আসতে পারে। তবে বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের পরিমাণ ২০১৭ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে উৎপাদিত বিদ্যুতের তুলনায় ৫০ শতাংশ বেশি থাকবে। ২০২০ সালে পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় এ খাত থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ ৯০ শতাংশের বেশি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১৪ গিগাওয়াট। কয়েক বছর ধরেই নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বৈশ্বিক সরবরাহ ও চাহিদার মূল কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত হয়ে আসছে চীন। ২০১৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত মোট নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাত প্রবৃদ্ধির ৪০ শতাংশে চীনের অংশগ্রহণ রয়েছে। একই সাথে ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতেও নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বেড়েছে। উল্লিখিত চার অঞ্চল ২০১৫-২০ সাল পর্যন্ত বিশ্বের মোট নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতের ৮০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে। ২০২১-২৬ সাল পর্যন্ত এর পরিমাণ ৮৭ শতাংশের বেশি বাড়তে পারে বলেও আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। ২০২০ সালে চীনের নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে ৫০ শতাংশের বেশি শেয়ার বেড়েছে। সরকারি ভর্তুকি বন্ধের আগেই বিভিন্ন প্রকল্প শেষ করার জন্য এ বছর বেশ তড়িঘড়ি করা হয়। গত দুই বছরে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতের পরিসর বৃদ্ধির পর ২০২২ সালে এর গতি কিছুটা মন্থর হয়ে উঠতে পারে। আইইএর তথ্য বলছে, চলতি বছরে ধীরগতির পরও আগামী পাঁচ বছর নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে শীর্ষস্থান ধরে রাখবে চীন। বিশ্বব্যাপী নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রবৃদ্ধির ৪৩ শতাংশই চীনের দখলে রয়েছে। চীনের সরকারি নীতিমালা অনুসারে ২০৬০ সালের মধ্যে দেশটির মোট ব্যবহূত জ্বালানির ৮০ শতাংশ আসবে পরিচ্ছন্ন জ্বালানি উৎস থেকে। ২০৩০ সালের মধ্যে সৌর ও বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে ১ হাজার ২০০ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহের পরিকল্পনা করছে দেশটি। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চীন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ