পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জিপিএ-৫ পেয়েছেন মর্মান্তিক লঞ্চ দুর্ঘটনায় বাবা-মা-ভাই হারানো হাফসা। পিতা-মাতা-াইকে হারিয়ে এসএসসি পরীক্ষার পাসের আনন্দ ভেসে যাচ্ছে চোখের পানিতে। হাফসারই এখন দায়িত্ব নিতে হবে ছোট দুই ভাই-বোনের। ভ‚মিহীন পরিবারের বড় সন্তান হাফসা ছোট ছোট দুটি ভাই বোনের চিন্তায় এখন অনেকটা দিশেহারা। অভিযান-১০ ট্রাজেডির পর গত ৭ দিনেও স্বজন ব্যতিত আর কেউ তাদের পাশে দাঁড়ায়নি। এখনো পায়নি কোন সরকারি সহায়তা।
বরগুনা সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের দক্ষিণ বড় লবনগোলা মানিকখালী গ্রামের হাকিম শরীফ ও পাখি বেগম দম্পতি। তারা চার সন্তানকে বাবা-মা ও শ্বশুর-শাশুড়ির উপর চাপিয়ে দিয়ে চরম দরিদ্রতার মুখোমুখি হয়ে একসময়ে কাজের সন্ধানে আশ্রয় নেন ঢাকা শহরে। স্ত্রী পাখি বেগম ঢাকার কোন এক গার্মেন্টসে কর্মসংস্থান খুঁজে নেন। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এসএমসি ওরস্যালাইন কোম্পানিতে নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে চাকরি নেন হাকিম শরীফ। স্বামী-স্ত্রী দুজনের আয়-উপার্জনে ভালোই চলছিল তাদের সংসার। অনেক স্বপ্ন ছিল এই দম্পতির। ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া করবে, মানুষের মত মানুষ হবে। নিজেদের উপর যতই পরিশ্রম করা লাগুক না কেন সন্তানরা কখনোই অভাব-অনটনের মুখোমুখি না হয় এই ব্রত নিয়েই তারা একনিষ্ঠভাবে কর্মকান্ড চালিয়ে আসছিলেন।
বড় মেয়ে হাফসা এবছর বরগুনার সদর উপজেলার কালীরতবক দাখিল মাদরাসা থেকে দাখিল পরীক্ষা দিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে। পার্শ্ববর্তী উপজেলা বেতাগীর সরিষামুড়ি ইউনিয়নে ঢাকার একটি বায়িং হাউজে কর্মরত পাত্র দেখে রেখেছিলেন অভিবাবকরা। গতকাল শুক্রবার উভয়পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে বিয়ের দিনক্ষণ নির্ধারণ করা হয়েছিলো। লঞ্চ দুর্ঘটনায় পিতা-মাতা ভাই নিখোঁজ হয়ে বিয়ের কথাবার্তা সব ভেস্তে গিয়েছে।
মেয়ে হাফসার বিয়ের কেনাকাটা করতে ২০ ডিসেম্বর আড়াই বছরের শিশুপুত্র নসরুল্লাহকে নিয়ে ঢাকা যান পাখি বেগম। ঢাকাতে বিয়ের কেনাকাটা সেরে ২৩ ডিসেম্বর স্বামী হাকিম শরীফ ও আড়াই বছরের পুত্র নসরুল্লাহকে নিয়ে অভিযান-১০ লঞ্চে ওঠেন পাখি বেগম। সাথে বিয়ের অনেক মালামাল এবং নগদ টাকা থাকায় তারা লঞ্চের স্টাফ কেবিন ভাড়া নেন।
২৩ ডিসেম্বর রাত তিনটার দিকে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এতে অসংখ্য যাত্রী হতাহত হয়। ইতোমধ্যেই প্রায় অর্ধশত লাশ উদ্ধার করা হয় এবং অগ্নিদগ্ধ জীবিত অনেকেই বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। অনেকেই লঞ্চ থেকে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে সাঁতরিয়ে জীবন রক্ষা করতে পেরেছেন। নিখোঁজ রয়েছেন অনেক যাত্রী।
অভিযান-১০ লঞ্চের ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের পর থেকেই নিখোঁজ রয়েছেন বরগুনা সদর উপজেলার দক্ষিণ বড় লবনগোলা মানিকখালী গ্রামের আব্দুল হাকিম শরীফ, তার স্ত্রী পাখি বেগম এবং তাদের আড়াই বছরের পুত্রসন্তান নসরুল্লাহ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।