বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের ল্যাব টেকনোলজিস্ট সাইফুল ইসলামকে পিটিয়ে হত্যার সাথে জড়িতদের ৪৮ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করা না হলে সিলেট বিভাগে স্বাস্থ্য সেবা বন্ধ করে দেয়ার আল্টিমেটাম দিয়েছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। আজ (বুধবার, ২৯ ডিসেম্বর) হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের সামনে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় এ আল্টিমেটাম প্রদান করেন সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক হিমাংশু লাল দাশ। এসময় তিনি বলেন, ‘নিরীহ একজন স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রকাশ্য দিবালোকে রাস্তায় পিটিয়ে মেরে ফেলা খুবই নেক্কারজনক। এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি অনুরোধ জানাই আমরা ৪৮ ঘন্টার মধ্যে জড়িতদের গ্রেফতার করা না হলে সিলেট বিভাগে স্বাস্থ্য সেবা বন্ধ করে দেয়া হবে।’ হবিগঞ্জ জেলা বিএমএ’র সভাপতি ডা. মুশফিক হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘সাইফুল ইসলাম করোনার সময় হাজার হাজার মানুষকে সেবা দিয়েছে। নিজের জীবনের ঝুকি নিয়ে সে করোনার নমুনা সংগ্রহ করেছে। আজ এই ছেলেটাকা নির্মভাবে খুন করা হয়েছে। এতে শুধু আমরা স্বাস্থ্যকর্মীরা নই, পুরো হবিগঞ্জের মানুষ মর্মাহত। স্বাস্থা বিভাগ যে কর্মসুচি গোষণা দেবে তাদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করছি আমরা।’ প্রতিবাদ সভা শেষে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেন হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা, কর্মচারিরা। পরে নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা। এরআগে মঙ্গলবার হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ও জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা, কর্মচারীরা সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন করেন। হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের ল্যাব ইনচার্জ আহমেদ ইমতিয়াজ তুহিন জানান, সাইফুলের মা বাবা কেউই বেচে নেই। সে নবীগঞ্জের পুরানগাঁও গ্রামের তাহমিনা বেগম চৌধুরী নামে এক নারীকে ধর্ম মা ডেকেছেন। মঙ্গলবার দুপুরে তাহমিনা বেগম সদর হাসপাতালে করোনা টিকা নিতে আসেন। টিকা নেওয়া শেষে সাইফুল তাহমিনা বেগমকে বাড়ি যেতে রিকশাযোগে নবীগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে শহরের টাউন হল এলাকার স্যামসাং শো-রুমের সামনে কয়েকজন যুবক তাকে পিটিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাৎক্ষণিক উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেটে ওসমানী মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়। সেখানে নিয়ে যাওয়া পথে মারা যান সাইফুল । সাইফুলের সাথে থাকা নারী তাহমিনা বেগম চৌধুরী বলেন, ‘দুপুরে দুই যুবক রক্ত দিতে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে আসে। এ সময় সাইফুলের সাথে তাদের কথাকাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে সাইফুলকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে চলে যায় তারা। তিনি বলেন- ‘সাইফুল আমাকে গাড়িতে তুলে দিতে রিকশা দিয়ে নবীগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড (বর্তমান সিএনজি স্ট্যান্ড) উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। টাউনহল রোড এলাকার জুনিয়র হাই স্কুল এন্ড কলেজের রাস্তার প্রবেশমুখে রিকশা থেকে হঠাৎ টেনে নামায় এক যুবক। এ সময় পেছন থেকে আরও এক যুবক বড় একটি বাঁশ দিয়ে সাইফুলের মাথায় আঘাত করে। এরপর তারা সাইফুলকে মাটিতে ফেলে মারতে থাকে আবারও।’ ‘যখন তাকে সাইফুলকে মারছিল তখন সাহায্যের জন্য কেউ এগিয়ে আসেনি। দুই যুবক সাইফুলকে মেরে চলে যাওয়ার পর লোকজন এসে হাসপাতালে নিয়ে আসে।’ হবিগঞ্জ সদর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) দৌস মোহাম্মদ বলেন, ‘এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি। আমরা কয়েকটি সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করেছি, সেখান থেকে শনাক্তের চেষ্টা চলছে হত্যাকারীদের।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।