মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও ব্রিটেনের মধ্যে সম্পন্ন অকাস নিরাপত্তা চুক্তির বিরুদ্ধে এবার পাল্টা পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে চীন। তারা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় একটি পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত অঞ্চলের জন্য সমর্থন জানিয়েছে। অকাসের বিরুদ্ধে আঞ্চলিক জোটকে শক্তিশালী করতেই চীন এই পদক্ষেপ নিয়েছে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সোমবার আসিয়ানের নেতৃবৃন্দকে বলেছেন যে, চীন পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত অঞ্চল গড়ে তোলার প্রচেষ্টাকে সমর্থন করেছে এবং ‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব’ চুক্তিতে প্রটোকল স্বাক্ষর করতে ইচ্ছুক। তিনি আসিয়ানের সাথে নিরাপত্তা সহযোগিতা এবং উন্নয়ন তহবিল আরো বৃদ্ধি করারও প্রতিশ্রুতি দেন।
১৯৯৫ সালে আসিয়ান সদস্যদের দ্বারা স্বাক্ষরিত, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া পারমাণবিক অস্ত্র-মুক্ত অঞ্চলের চুক্তি এই অঞ্চলটিকে পারমাণবিক এবং অন্যান্য গণবিধ্বংসী অস্ত্র মুক্ত রাখার প্রতিশ্রুতি। বেইজিং ইঙ্গিত দিয়েছে যে, তারা কয়েক বছরের মধ্যে চুক্তিতে প্রটোকল স্বাক্ষর করতে ইচ্ছুক। কিন্তু এখনও পর্যন্ত, পাঁচটি স্বীকৃত পারমাণবিক শক্তি - চীন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ব্রিটেন এবং ফ্রান্স – কোন দেশই সেখানে স্বাক্ষর করেনি। প্রোটোকলের অধীনে, তারা পারমাণবিক অস্ত্রের বিকাশ, উৎপাদন বা মজুদ করতে বা এটি করার জন্য কোনও সহায়তা পেতে পারবে না।
গুয়াংজুতে জিনান ইউনিভার্সিটির ফিলিপাইন স্টাডিজের সেন্টারের পরিচালক ডাই ফ্যানের মতে, এই অঞ্চলে বিশেষ করে দক্ষিণ চীন সাগর এবং তাইওয়ান প্রণালীতে বেইজিং এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির সাথে আসিয়ান সদস্যরা প্রটোকল স্বাক্ষর করতে চায়৷ তিনি বলেন, ‘চীন-মার্কিন শত্রুতা বাড়ার সাথে সাথে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার নিরাপত্তা জোটগুলোকে শক্তিশালী করছে, যার মধ্যে একটি হচ্ছে অকাস, যা আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ।’ তিনি উল্লেখ করেছেন যে ইন্দোনেশিয়া এবং মালয়েশিয়া উভয়ই চুক্তির অধীনে অস্ট্রেলিয়ার পারমাণবিক চালিত সাবমেরিন অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে বেরিয়ে এসেছে এবং তাদের অবস্থান ‘চীনের অবস্থানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ’।
সেপ্টেম্বরে, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই তার মালয়েশিয়ান এবং ব্রুনিয়ার সমকক্ষকে বলেছিলেন যে, অকাস অংশীদারিত্ব এবং এর পারমাণবিক সাবমেরিন পরিকল্পনা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় একটি পারমাণবিক মুক্ত অঞ্চল প্রতিষ্ঠাকে জটিল করতে পারে। ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেন আসিয়ানের ওই চুক্তিতে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ পরিবর্তে, তারা বিভিন্ন অজুহাতে এই অঞ্চলে সামরিক পারমাণবিক প্রযুক্তি হস্তান্তর করেছে এবং এই অঞ্চলটিকে উচ্চ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম সামগ্রী সরবরাহ করেছে, যা আসিয়ান দেশগুলোর একটি পারমাণবিক মুক্ত অঞ্চল গড়ে তোলার প্রচেষ্টার বিপরীতে চলছে,’ ওয়াং বৈঠকে বলেছিলেন।
আসিয়ান সদস্যরা চুক্তির বিষয়ে পারমাণবিক অস্ত্রধারী রাষ্ট্রগুলোর সাথে আলোচনা অব্যাহত রেখেছে এবং সমস্যাগুলো সমাধান করতে চাইছে। বেইজিং-এর কার্নেগি-সিংহুয়া সেন্টার ফর গ্লোবাল পলিসির পারমাণবিক নীতি কর্মসূচির সিনিয়র ফেলো ঝাও টং বলেছেন, চীনের ফোকাস আঞ্চলিক সম্পর্কের দিকে সরে গেছে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বৈরিতার কারণে এটি অন্যান্য পারমাণবিক শক্তির সাথে সংহতি সম্পর্কে কম উদ্বিগ্ন। তিনি ‘প্রযুক্তিগত দৃষ্টিকোণ থেকে প্রোটোকলের বিষয়ে চীনের কোনো সারগর্ভ পরামর্শ নেই। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ অন্যান্য পারমাণবিক অস্ত্রধারী রাষ্ট্রগুলোর এখনও উদ্বেগ রয়েছে এবং তারা মনে করে যে, এই প্রোটোকল তাদের পারমাণবিক অস্ত্র প্ল্যাটফর্মের স্থাপনাকে সীমাবদ্ধ করবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘চীনের জন্য এই প্রটোকলের প্রতি সমর্থন দেখানোও আসিয়ানের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলার একটি উপায়।’ সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।