পবিত্র লাইলাতুল বরাত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ, বিপদমুক্তি ও
বহুল আলোচিত কপ-২৬ সম্মেলন শেষ হয়েছে।স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে ৩১ অক্টোবর থেকে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত এ সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঐকমত্য না হওয়ায় সময় একদিন বর্ধিত করা হয়। এছাড়া, পরবর্তী ২০২২ ও ২০২৩ সালের কপ সম্মেলন মিসর ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে হওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কপ-২৬ সম্মেলনে জাতিসংঘের প্রধান লক্ষ্য ছিল, ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নির্গমন অর্ধেকে নামিয়ে আনা, যা অর্জন করতে হলে কার্বনের নির্গমন ৪৫% কমাতে হবে। আর ২০৫০ সালের মধ্যে নির্গমন আনতে হবে শূন্য শতাংশে। এ সম্মেলনে জাতিসংঘের দ্বিতীয় লক্ষ্য ছিল, দরিদ্র দেশগুলোকে জলবায়ু সংকটে সহায়তা বৃদ্ধি করা, যাতে তারা অভিযোজন ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় ব্যয় করতে পারে। জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সাম্প্রতিক দশকে বৈশ্বিক তাপমাত্রা ০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস করে বৃদ্ধি পেতে পেতে বর্তমানে ১.১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে এসে ঠেকেছে। এতেই বিশ্বব্যাপী বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড়, দাবানলসহ নানা প্রাকৃতিক বিপর্যয় বেড়েছে অস্বাভাবিকভাবে। আর জাতিসংঘ বলেছে, বর্তমানে যে হারে কার্বন নিঃসরণ হচ্ছে, তা অব্যাহত থাকলে তাপমাত্রা বৃদ্ধির পরিমাণ ২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে দাঁড়াবে। এ জন্য জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি ১০০% দায়ী বলে জানিয়েছেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী পরিচালক ড. অটো।
জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য বছরে ১০০ বিলিয়ন ডলার করে সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল ২০০৯ সালে। বলা হয়েছিল, ২০২০ সালের মধ্যে এই সহায়তা কার্যকর হবে। তবে তা আবার ২০২৩ সাল পর্যন্ত পেছানো হয়েছে। কিন্তু এই প্রতিশ্রুতি পূর্ণভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে না! ফলে, জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার হওয়া গরিব দেশগুলো চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। জাতিসংঘের আইপিসিসি বলেছে, বছরে ১০০ বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণে জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত গরিব দেশগুলোর কিছুই হবে না। এখন তাদের ক্ষতি মোকাবেলায় বছরে এক ট্রিলিয়ন ডলার করে লাগবে। তাপমাত্রা যদি দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়ে, তাহলে শুধু আফ্রিকাতেই প্রতিবছর কয়েক বিলিয়ন ডলার খরচ লাগবে। আইপিসিসি আরও বলেছে, জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় অবকাঠামো নির্মাণ, কৃষিকাজ, ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সংরক্ষণের মতো খাতগুলোতে আগামী এক দশকে ১.৮ ট্রিলিয়ন ডলার খরচ করলে তা থেকে ৭.২ ট্রিলিয়ন ডলার ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো যাবে। অন্যদিকে, বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এখনই যদি কঠিন জলবায়ু নীতি বাস্তবায়ন করা না হয়, তাহলে ২০৫০ সাল নাগাদ বছরে ২০ কোটি মানুষের নতুন করে মানবিক সাহায্যের প্রয়োজন হবে। যা এখনকার তুলনায় দ্বিগুণ।
যা’হোক, কপ-২৬ সম্মেলনে বায়ুমণ্ডলের উঞ্চতা হ্রাস করার পদ্ধতির ব্যাপারে ঐকমত্য না হওয়ায় পরপর তিনটি খসড়া চুক্তি তৈরি করা হয়। শেষাবধি চীন ও ভারতের চাপে চুক্তিতে কয়লার ব্যবহারের ক্ষেত্রে ‘ফেজ আউটে’র পরিবর্তে ‘ফেজ ডাউন’, কথাটি সংযোজন করা হয়। জলবায়ু সংকটের ক্ষতিপূরণ প্রদান ২০২৫ সাল পর্যন্ত বৃদ্ধি ও প্রতিটি দেশকে প্রতিবছর তাদের এনডিসি হালনাগাদ করা ইত্যাদি ভিত্তিক ‘গ্লাসগো ক্লাইমেট প্যাক্ট’ নামে চুক্তিতে সন্মত হয়েছে দু’শতাধিক দেশ। এখন এতে জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোর স্বাক্ষর করতে বেশ সময় লাগবে। শেষ পর্যন্ত কতটি দেশ স্বাক্ষর করবে তা এখন বলা কঠিন। এদিকে, চুক্তির পক্ষে-বিপক্ষে ব্যাপক আলোচনা চলছে সারা বিশ্বেই। তাতে বেশিরভাগ আলোচক নেতিবাচক মনোভাব ব্যক্ত করেছে। বিশেষ করে স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর মানুষ এবং পরিবেশবিদরা। তরুণরা এ সম্মেলনকে ‘গ্রিনওয়াশ’ বলে আখ্যায়িত করেছে। সম্মেলনের চেয়ারম্যান ব্রিটিশ মন্ত্রী অলোক শর্মা বলেছেন, ‘ঠুনকো বিজয়’। গ্রিনপিস বলেছে, চুক্তিটিতে কেবল ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার লক্ষ্য টিকিয়ে রাখা হলো।গ্রেটা থুনবার্গ বলেছেন, ব্লা, ব্লা, ব্লা বা ফাঁকা বুলি। জাতিসংঘের মহাসচিব বলেছেন, ‘এটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ তবে যথেষ্ট নয়। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী জনসন বলেছেন, ‘বড় পদক্ষেপ’। মার্কিন জলবায়ু দূত জন কেরি বলেছেন, প্যারিস ক্ষেত্র তৈরি করেছিল এবং গ্লাসগোর দৌড় সেখান থেকে শুরু হয়েছে। আর বিশেষজ্ঞদের অভিমত, গ্লাসগো সম্মেলনে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হলে বায়ুমণ্ডলের উঞ্চতা কাক্সিক্ষত পর্যায়ে না কমলেও বৃদ্ধি রোধ হবে, যা বিশ্ববাসীর জন্য কল্যাণকর। কিন্তু চুক্তি হলেই যে তা পূর্ণভাবে বাস্তবায়িত হবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই, যার জ্বলন্ত প্রমাণ প্যারিস চুক্তি। ঐ চুক্তি পূর্ণভাবে বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে বিশ্ববাসীকে তার চরম খেসারত দিতে হচ্ছে। গ্লাসগো চুক্তির ক্ষেত্রেও তাই হতে পারে। অবশ্য বলাই বাহুল্য, চুক্তি হচ্ছে আশার আলো, যাকে ভিত্তি করে এগিয়ে চলা যায়।
কপ-২৬ সম্মেলনের চুক্তির বাইরেও ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নির্গমন হ্রাস করার জন্য কয়েকটি বিষয়ে অঙ্গীকার হয়েছে। যেমন: কয়লার ব্যবহার বন্ধ, বনভূমি রক্ষা, মিথেন গ্যাস হ্রাস, জলবায়ু সহনীয় ও নিম্ন কার্বন নিঃসরণমূলক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা গড়ে তোলা, জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক গাড়ি নির্মাণ বন্ধ, নেট জিরো ইত্যাদি। এছাড়া, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষয় ক্ষতি (লস এন্ড ডেমেজ) মোকাবেলায় অর্থায়নের জন্য স্কটল্যান্ড প্রতীকী অর্থ বরাদ্দ দিয়ে (১৪ লাখ মার্কিন ডলার) অর্থায়নের সূত্রপাত করেছে। কপ-২৬ সম্মেলনের সবচেয়ে বড় চমক জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় আমেরিকা ও চীন একসঙ্গে কাজ করার ঘোষণা। অপ্রত্যাশিত এই ঘোষণায় বলা হয়েছে, এই দুই দেশ এই দশকের মধ্যেই বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ধরে রাখতে একসঙ্গে কাজ করবে। জাতিসংঘ ও ইইউ এই ঘোষণাকে বেশ জরুরি ও উৎসাহজনক পদক্ষেপ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।স্মরণীয় যে, বিশ্বের মোট কার্বন নির্গমনের প্রায় অর্ধেক করে এই দুই দেশ। তারপর সর্বাধিক করে ভারত, রাশিয়া ও ইইউ। এখন তারা যদি চীন-আমেরিকার উদ্যোগে শামিল হয়, তাহলে কার্বন নির্গমনের হার অনেক কমে যাবে।
কয়লার ব্যবহার বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ১৯০টি দেশ ও সংস্থা। অনেক দেশ ও সংস্থা কয়লা খাতে অর্থায়ন বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে। এই অঙ্গীকার বাস্তবায়িত হলে কার্বন নির্গমনের পরিমাণ অনেক হ্রাস পাবে। তাই বাকী দেশগুলোও এই পথে এগিয়ে আসবে বলে অনুমেয়। আর সেটা হলে নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে মহাযজ্ঞ শুরু হবে বিশ্বব্যাপী। বিদ্যুতের চাহিদা পূরণের জন্য পরমাণু বিদ্যুতের ব্যবহারও অনেক বেড়ে যাবে। বন ধ্বংস বন্ধ করার জন্য ১২৪টি দেশ অঙ্গীকার করেছে। ধরিত্রীকে বাচানোর পথগুলোর অন্যতম হচ্ছে প্রয়োজনীয় বনভূমি তথা ২৫% বনাঞ্চল, যা সৃষ্টি করতেই হবে সব দেশকে। আর সেটা হতে হবে ফলজ, ভেষজ ও বনজভিত্তিক। ফলজ বৃক্ষ রোপণ করলে পুষ্টির চাহিদা পূরণ হবে। পাশাপাশি আসবাব পত্রের কাঠের চাহিদাও পূরণ হবে। আর ভেষজ বৃক্ষ রোপন করলে ওষুধের চাহিদা পূরণ হবে। তাই বৃক্ষ রোপনের ক্ষেত্রে এসবকে গুরুত্ব দিতে হবে। উপকূল এলাকায় ঝড়-বন্যা-জলোচ্ছ্বাস ও লবণাক্ত মোকাবেলা করার মতো লম্বা ও মজবুত বৃক্ষ আর মরু অঞ্চলে প্রচণ্ড খরা সহিঞ্চ বৃক্ষ রোপণ করতে হবে। এই সঙ্গে বনাঞ্চল রক্ষা করার সার্বক্ষণিক ব্যবস্থা করতে হবে। নতুবা বন খেকোরা একটু সুযোগ পেলেই বর্তমানের মতো বন সাবাড় করে করে ফেলবে। বনাঞ্চল সৃষ্টিতে বিপুল কর্মসংস্থান হবে। সামাজিক বনাঞ্চল দারিদ্র বিমোচনের জন্য অনেক সহায়ক। তাই পরিকল্পিতভাবে প্রয়োজনীয় বনাঞ্চল সৃষ্টি এবং তা রক্ষা করা যেমন সরকার ও সমাজের দায়িত্ব, তেমনি ব্যক্তি পর্যায়েও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহযোগিতায় ৫০টি দেশ জলবায়ু সহনীয় ও নিম্ন কার্বন নিঃসরণমূলক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা গড়ে তোলার অঙ্গীকার করেছে। এটা বাস্তবায়িত হলে মানুষের অনেক কল্যাণ হবে। নেট জিরো অর্জনে বেসরকারি অর্থায়নের ব্যবস্থা করতে ৯০টি দেশ অঙ্গীকার করেছে। এটা বাস্তবায়িত হলে পরিবেশের অনেক উন্নতি হবে।
কপ-২৬ সম্মেলনে শতাধিক দেশ ২০৩০ সালের মধ্যে গ্রিন হাউজ গ্যাস মিথেনের নিঃসরণ ৩০% কমানোর অঙ্গীকার করেছে। এটা কিভাবে করা হবে তা অবশ্য বলা হয়নি। সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণা রিপোর্ট মতে, বিশ্বের ১২% গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণের জন্য দায়ী কৃষি, যার বেশির ভাগই ঘটে মিথেন গ্যাসের কারণে। আর কৃষি ও গবাদিপশু মিলে প্রায় ৪০% মিথেন উৎপাদন করে। গবাদিপশুর মধ্যে গরুই সবচেয়ে বেশি মিথেন নিঃসরণ করে। একটি গরু বছরে প্রায় ২২০ পাউন্ড মিথেন ছাড়ে। জাতিসংঘের মতে, গরুর মাংস ও দুধ খাওয়ার প্রবণতা আগামী কয়েক বছরে ৭০% বাড়বে।এতে বাড়বে গরুর সংখ্যাও। ফলে সমানুপাতিক হারে নিঃসৃত হবে মিথেন। তাই বৈশ্বিক উষ্ণতা আরও বাড়বে। কিন্তু এ ব্যাপারে দুঃশ্চিন্তার কারণ নেই। কারণ, গরুর মিথেন থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ব্রিটেনের জেল্প ও যুক্তরাষ্ট্রের কার্গিল মিলে গরুর বিশেষ মাস্ক তৈরি করেছে। মাস্কের মতো হলেও এটা আসলে একটি যন্ত্র, যা গরুর নাকের ওপর আটকে দেওয়া হয়। যন্ত্রটি বিশেষ প্রক্রিয়ায় নিঃসৃত মিথেনকে ফিল্টার করে কার্বন ডাই-অক্সাইডে পরিণত করে। তাই এখন প্রয়োজন সব গরুকে মাস্ক পরানোর ব্যবস্থা করা। তাহলেই মিথেন গ্যাসের পরিমাণ কমে যাবে। বিশেষজ্ঞরা কার্বন নির্গমন কমানোর জন্য খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন করার কথা বলেছেন। বিশ্বে প্রতিবছর ১৪.৫% গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসৃত হয় প্রাণীজ খাবারের জন্য। সমুদ্রের তলদেশে কার্বন ধারণের গতি আরো বাড়াতে পারলে বায়ুমণ্ডলে কার্বনের মাত্রা অনেক কমানো সম্ভব বলে বিজ্ঞানীদের অভিমত।
ব্রিটিশ সরকার জানিয়েছে, কপ-২৬ সন্মেলনকালে ২০৪০ সালের মধ্যে জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক গাড়ি তৈরি বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে বিশ্বের অন্যতম ৬টি গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান (ভলভো, ফোর্ড মোটরস, জেনারেল মোটরস, মার্সিডিজ বেঞ্জ, বিওয়াইডি ও ল্যান্ড রোভার)। এতে টয়োটা, ফক্সওয়াগন এজি, স্টেলান্টিস, হোন্ডা, নিশান, বিএমডব্লিউ ও হুন্দাই শামিল হয়নি। কিন্তু বিশ্বকে কার্বনশূন্য করতে তাদেরও শামিল না হয়ে উপায় নেই। কারণ,বিভিন্ন দেশ ইতোমধ্যেই জ্বালানিভিত্তিক যানবাহন ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। ২০৩০ সালের মধ্যে বেশিরভাগ দেশও তাই করবে। আইএএ’র তথ্য মতে, বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণের জন্য ২৫% দায়ী পরিবহন খাত। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দায় সড়কযানের। বিল গেটস কপ-২৬ সন্মেলনে অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতা ও পারিপার্শ্বিক বিষয় ভিত্তিক প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলেছেন, ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বকে শূন্য কার্বন নিঃসরণে করতে হবে। এটি অর্জনের জন্য একটি সবুজ শিল্প বিপ্লবের প্রয়োজন হবে। যেখানে আমরা কার্যত সমগ্র ভৌত অর্থনীতিকে কার্বনমুক্ত করব। এর মধ্যে থাকবে জিনিসপত্র তৈরি, বিদ্যুৎ উৎপাদন, ঘোরাঘুরি, খাদ্য উৎপাদন ও ভবন শীতল-গরম করার বিষয়।তবে এ জন্য ব্যাপক উদ্ভাবনের দরকার হবে। পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তি উদ্ভাবনে গুরুত্ব দিতে হবে।
যা’হোক, ধরিত্রীকে বাঁচাতে হবে। রক্ষা করতে হবে মানুষ,প্রাণীকুল ও জীব বৈচিত্র্যকে।সে জন্য ২০৩০ সালের মধ্যে বায়ুমণ্ডলের উঞ্চতা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার জন্য কপ-২৬ সম্মেলনের চুক্তি ও অঙ্গীকারসমূহ পূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। এ দায়িত্ব বিশ্বের সব মানুষের ও দেশের। তবে, সর্বাধিক দায়িত্ব ধনীদের। কারণ, বায়ুমণ্ডলের উঞ্চতা বৃদ্ধির প্রধান দায় তাদের। গরিবদের চেয়ে তাদের কার্বন নির্গমনের পরিমাণ ৩০ গুণ বেশি।তাই কার্বন নির্গমন শূন্য করার দায়িত্ব তাদেরই বেশি। ধনীদের সবুজ বিপ্লব বাস্তবায়নে গরিব ও উন্নয়নশীল ১৩৪টি দেশকে সহায়তা করতে হবে। কারণ, সে সামর্থ্য তাদের নেই। এ ক্ষেত্রে প্রধান দায়িত্ব বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ ও আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থাগুলোর। নতুবা দেশগুলোর সবুজ বিপ্লবে সফল হবে না। ফলে কার্বন নির্গমনের ক্ষতি অব্যাহত থাকবে। বলা অপেক্ষা রাখে না, শুধুমাত্র ধনীদেশগুলোর উপর নির্ভর করে বসে থাকলে চলবে না। গরিব ও উন্নয়নশীল দেশগুলোরও সচেষ্ট হতে হবে সাধ্যমত।
লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।