বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
আড়াই বছর পর আবারো পরিবর্তন হলো বগুড়া জেলা বিএনপির নেতৃত্ব। জেলা আহ্বায়কের পদ থেকে বগুড়া সদরের এমপি জিএম সিরাজকে সরিয়ে দিয়ে নতুন আহ্বায়ক করা হয়েছে পৌর মেয়র রেজাউল করিম বাদশাকে। আহ্বায়ক পদে পরিবর্তনের পাশাপাশি বগুড়া-৪ সংসদীয় আসনের এমপি মোশারফ হোসেনকে দলের ৩ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক এবং বিএনপি নেতা শহীদুল ইসলাম বাবলু (শেরপুর) ৩৪ ও মাফতুন আহম্মেদ খান রুবেলকে ৩৫ নম্বর সদস্য করা হয়েছে ।
তবে ঠিক কারণে এই পরিবর্তন সেটা নিয়ে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভিন্ন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কেউ বলছেন জাতীয় সংসদ অধিবেশনে সম্প্রতি দেয়া একটি বক্তব্যে জি এম সিরাজ বলেন, ছাত্রজীবনে তিনি একজন ব্যাক বেঞ্চার (পেছনের সারির) ছাত্রলীগ কর্মী ছিলেন। এখনও তিনি তার হৃদয়ে বঙ্গবন্ধুকে লালন করেন। তার এই বক্তব্য গত কয়েকদিন ধরে স্যোশাল মিডিয়ায় ব্যাপক ভাবে প্রচার করা হচ্ছে। যেটা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান এবং দলের সিনিয়র নেতাদের ভীষণ ভাবে ক্ষুব্ধ ও বিরক্ত করেছে।
অনেকে বলছেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই বগুড়া জেলা বিএনপির সম্মেলনে যেন তিনি সভাপতি নির্বাচিত হতে পারেন সেকারণেই তাকে দলের আহ্বায়ক পদ থেকে কৌশলগতভাবে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। এই গ্রুপটির মতে দলের আহ্বায়ক পদ থেকে তাকে সরিয়ে যাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সেই রেজাউল করিম বাদশা জিএম সিরাজের কাছের লোক। অন্যদিকে নতুনভাবে নিযুক্ত ৩ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক মোশারফ হোসেন এমপি এবং শহীদুল ইসলাম বাবলু এবং মাফতুন আহম্মেদ রুবেলও জিএম সিরাজের আস্থাভাজন ও ঘনিষ্ঠ।
উল্লেখ্য, তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন ও সম্মেলনের মাধ্যমে পুর্ণাঙ্গ জেলা কমিটি গঠনের দায়িত্ব দিয়ে ২০১৯ সালের মে মাসে জেলা বিএনপির তৎকালীন কার্যনির্বাহি কমিটি ভেঙে দিয়ে জিএম সিরাজ এমপিকে আহবায়ক করে কমিটি গঠন করা হয়। সে সময় ওই কমিটির বিরুদ্ধে দলের তৃণমূল পর্যায়ে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখা দেয়। সিরাজ বিরোধি গ্রুপের নেতাকর্মীরা দলের কার্যালয়ে তালা দিয়ে দিনরাত সেখানে অবস্থান করে ও সিরাজের কুশপুত্তলিকা দাহ এমনকি তার বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল করে।
এই ঘটনার জের ধরে দল থেকে সিনিয়র নেতা জানে আলম খোকা, দেলোয়ার হোসেন হিরু, পরিমল চন্দ্র দাস, তৌহিদুল ইসলাম বিটু, শাহ মেহেদী হাসান হিমু যুবদল সভাপতি শিপার আল বখতিয়ার প্রমুখ বহিষ্কৃত হন। পরে অবশ্য শিপার আল বখতিয়ার বাদে অন্যদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার হয়। তবে ওই ঘটনার পর থেকে বগুড়া জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ভিপি সাইফুল ইসলাম এবং তার অনুসারিরা এখন পর্যন্ত দলের কর্মকাণ্ডে একদমই অংশ গ্রহন করছেন না।
এ প্রসঙ্গে দলের সিনিয়র নেতা ও নতুন আহ্বায়ক কমিটির ৩৫ নম্বর সদস্য মাফতুন আহম্মেদ রুবেল সাংবাদিকদের জানান, গত শনিবার দুপুরে বেন্দ্রীয় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বগুড়ার পৌর মেয়র রেজাউল করিম বাদশাকে আহ্বায়ক, মোশারফ হোসেন এমপিকে ৩ নং যুগ্ম-আহবায়ক এবং শহিদুল ইসলাম বাবলুকে ৩৪ নং ও এইচএস মাফতুন আহমেদ খান রুবেলকে ৩৫ নং সদস্য মনোনিত করে বগুড়া জেলা বিএনপি পুনর্গঠন করা হয়েছে। আগের ৩১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির মধ্যে শুধুমাত্র আহবায়ক পদেই পরিবর্তন করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, ২০১৯ সালের ১৫ মে জিএম সিরাজকে আহ্বায়ক এবং অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম ও ফজলুল বারী তালুকদার বেলালকে যুগ্ম-আহ্বায়ক করে বগুড়া জেলা বিএনপির ৩১ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের কয়েকজন সিনিয়র নেতা অবশ্য আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, তিন মাসের জন্য জন্য গঠিত ওই কমিটি জাতীয় সংসদের উপনির্বাচন, করোনা পরিস্থিতি, এবং পৌর নির্বাচনকে অজুহাত দেখিয়ে ইতোমধ্যেই আড়াই বছর সময় পার করেছে। সামনেই আসছে নতুন সংসদ নির্বাচনের ডামাডোল কাজেই আদতেই পূর্বঘোষিত রোডম্যাপ মোতাবেক চলতি বছরের ডিসেম্বরে যে সম্মেলন ও গোপন ব্যালটে ভোট হওয়ার কথা সে বিষয়ে তারা সন্দিহান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।