Inqilab Logo

বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

বিহারে সাংবাদিককে অপহরণ করে পুড়িয়ে হত্যা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৪ নভেম্বর, ২০২১, ৫:৫৫ পিএম

এক সাংবাদিক তথা সমাজকর্মীর দগ্ধ লাশ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বিহারের মধুবনীতে। নিহতের নাম বুদ্ধিনাথ ঝা ওরফে অবিনাশ ঝা (২২)। শুক্রবার তার লাশ উদ্ধার হয়েছে পাশের গ্রাম বেতুনের কাছে জাতীয় সড়কের উপর থেকে।

পুলিশ সূত্রে খবর, মঙ্গলবার থেকে নিখোঁজ ছিলেন বুদ্ধিনাথ। তাকে শেষবারের মতো দেখা গিয়েছিল ওই দিন রাত ১০টায় স্থানীয় একটি বাজারে। পেশায় সাংবাদিক বুদ্ধিনাথ ছিলেন এক জন সমাজকর্মীও। স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমে কাজ করতেন তিনি। সম্প্রতি ফেসবুকে মেডিক্যাল ক্লিনিক নিয়ে একটি পোস্ট করেছিলেন। তার অভিযোগ ছিল ওই ক্লিনিকগুলো ভুয়া। সেই ফেসবুক পোস্ট ভাইরাল হওয়ার পরই এমন বেশ কয়েকটি ক্লিনিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় প্রশাসন। বেশ কয়েকটি বন্ধও করে দেয়া হয়। এই কাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের জরিমানাও করা হয়।

সেই ফেসবুক পোস্টের পর থেকেই বুদ্ধিনাথের কাছে লাখ লাখ টাকার প্রস্তাব আসে। শুধু তাই নয়, হুমকি ফোনও আসতে শুরু করে বলে অভিযোগ। কিন্তু নিজের কাজে অটল ছিলেন বুদ্ধিনাথ। পুলিশ জানিয়েছে, তার বাড়ি বেনিয়াপট্টির কাছে থাকা একটি সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে মঙ্গলবার রাত ৯টা নাগাদ বাড়ির সরু গলিতে হাঁটতে হাঁটতে ফোন করছিলেন বুদ্ধিনাথ। তার পর মূল রাস্তায় যান। বাড়ির রাস্তাতেই কিছুটা দূরে তার কাজ করার একটি ঘর ছিল। সেখানেও যেতে দেখা গিয়েছে সাংবাদিককে।

স্থানীয় সময় রাত ৯টা ৫৮ মিনিটে তাকে ফের বাড়ি থেকে বেরোতে দেখা যায়। গলায় হলুদ রঙের একটা স্কার্ফ জড়ানো ছিল। লোহিয়া চক এবং বেনিয়াপট্টি থানা পেরিয়ে যেতে দেখা গিয়েছিল তাকে। এক প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি, রাত ১০টা ১০ মিনিটে বুদ্ধিনাথকে স্থানীয় এক বাজারে দেখেন তিনি। শেষ বারের মতো ওই বাজারেই দেখা গিয়েছিল বুদ্ধিনাথকে। তার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি।

বুধবার সকালে বুদ্ধিনাথকে খুঁজে না পেয়ে বিচলিত হয়ে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। বাড়িতে তার মোটরসাইকেল ছিল। ক্লিনিকের দরজা খোলা ছিল। এমনকি যে ল্যাপটপ নিয়ে কাজ করতেন সেটাও তখন চলছিল। ফলে পরিবারের সদস্যরা ভেবে বসেন, হয়তো কাছেপিঠেই কোথাও কাজে গিয়েছেন বুদ্ধিনাথ। কিন্তু দিন পেরিয়ে গেলেও বুদ্ধিনাথের পাত্তা নেই দেখে পরিবারের সদস্যরা থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন।

অভিযোগ পেয়ে পুলিশ বুদ্ধিনাথের মোবাইলের অবস্থান চিহ্নিত করার চেষ্টা করে। দেখা যায় বুধবার সকাল ৯টাতে সেই ফোন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বেনিয়াপট্টি থেকে ৫ কিমি দূরে বেতুনে মোবাইলের অবস্থান দেখাচ্ছে। সেখানে গিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু কোনও সূত্র পায়নি। বৃহস্পতিবার কেটে গেলেও বুদ্ধিনাথের কোনও খোঁজ মেলেনি। অবশেষে শুক্রবার বুদ্ধিনাথের ভাতিজা মোবাইলে ফোন আসে যে, বেতুনে জাতীয় সড়কের উপর দগ্ধ একটি দেহ পড়ে রয়েছে। পরিবারের সদস্যরা বুদ্ধিনাথের আংটি, গলার চেন দেখে তাকে শনাক্ত করেন।

সাংবাদিকের দেহ উদ্ধারের পর থেকেই ওই এলাকা ক্ষোভে ফুটছে। স্থানীয় বাসিন্দারা প্রশ্ন তুলেছেন বুদ্ধিনাথের বাড়ি থেকে ৪০০ মিটার দূরে বেনিয়াপট্টি থানা থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে তাকে অপহরণ করল দুষ্কৃতীরা। সূত্র: টাইমস নাউ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: লাশ উদ্ধার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ