পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বগুড়া শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অস্থায়ীভাবে পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করতেন আসাদুল ইসলাম মীর ধলু। দৈনিক মজুরিভিত্তিক হিসেবে হাসপাতালটিতে প্রায় ৬ বছর ধরে কাজ করছিলেন তিনি। বেলা ২টা পর্যন্ত তার নির্ধারিত দায়িত্ব থাকলেও এরপরে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে আগত রোগীদের সহায়তার নামে দালালি করতেন। গত মঙ্গলবার রাতে ধলু দাবি করা বকশিসের টাকা না পেয়ে রোগীর মুখে থাকা অক্সিজেন মাস্ক খুলে দেয়। এতে মারা যায় সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত বিকাশ চন্দ্র দাস। পরে গতকাল সকালে রাজধানীর আব্দুল্লাহপুর এলাকা থেকে আসাদুল ইসলাম মীর ধলুকে গ্রেফতার করে র্যাব।
এ দিন দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আলম মঈন। তিনি জানান, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সাইকেলযোগে বাড়ি ফেরার পথে গাইবান্ধার সাঘাটায় মোটরসাইকেলের সঙ্গে দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত বিকাশ চন্দ্র দাশ নামে এক কিশোর। স্থানীয় হাসপাতালের ডাক্তারের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে আনুমানিক রাত সাড়ে ১০টার দিকে বগুড়ার শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। জরুরি বিভাগের সামনে রোগীকে সহায়তার নামে স্বজনদের কাছে ৫০০ টাকা দাবি করেন দালাল আসাদুল ইসলাম মীর ধলু। পরবর্তীতে ২০০ টাকায় দফারফা হলে রোগীকে জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। পরে চিকিৎসক রোগীকে জরুরি সেবা দিয়ে অক্সিজেন লাগিয়ে দেন এবং ওয়ার্ডে ভর্তি করেন।
রোগীকে তৃতীয় তলার সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে নিয়ে গেলে বেড না থাকায় ফ্লোরে বিছানা পাতা হয়। এরপর ভিকটিমের অভিভাবকের কাছে বকশিসের টাকা চাইলে তাদের কাছে সর্বসাকুল্যে ১৫০ টাকা থাকায় ধলুকে ১৫০ টাকা দেয়া হয়। তখন তিনি বাকি আরও ৫০ টাকা দাবি করে উত্তেজিত হয়ে কিশোর বিকাশের অক্সিজেন মাস্ক খুলে গালি-গালাজ শুরু করেন। নাকের অক্সিজেন নলও টান দিয়ে খুলে ফেলেন তিনি। এরপরই শ্বাসকষ্টজনিত কারণে বিকাশের মৃত্যু হয়। হাসপাতালের অন্যান্য রোগীর স্বজনরা উত্তেজিত হয়ে পড়লে নিরাপত্তাকর্মীরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্ট করেন। সুযোগ বুঝে ধলু পালিয়ে যান। হাসপাতাল থেকে ধলু পালিয়ে নওগাঁয় চলে যান। পরে ধলু ঢাকা হয়ে চট্টগ্রামে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। এর মধ্যেই ঢাকার আব্দুল্লাহপুর থেকে ধলুকে গ্রেফতার করা হয়।
বগুড়া থেকে আমাদের বিশেষ সংবাদদাতা মহসিন রাজু জানান, বিকাশ চন্দ্র দাশ গাইবান্ধার স্থানীয় একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছিল। পড়াশোনার পাশাপাশি স্থানীয় একটি ওয়ার্কশপে ওয়েল্ডিংয়ের কাজ করতো সে। সেখানে কাজ করে নিজের পড়াশোনার ও পরিবারের খরচ চালাতো বিকাশ। বিকাশের মৃত্যুর ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার বগুড়া সদর থানায় আসাদুল ইসলাম মীর ধলুকে আসামি করে একটি মামলা (নং-২৯) দায়ের করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এক প্রশ্নের জবাবে র্যাব কর্মকর্তা খন্দকার আল মঈন বলেন, হাসপাতাল থেকে মামলায় অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগ আনা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও মামলায় উল্লেখ করেছেন, অক্সিজেন মাস্ক সরিয়ে নেওয়ায় ভিকটিমের মৃত্যু হয়েছে। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন কাজ করার সুবাদে দালালদের হাসপাতালের ভেতরে অনেকের সঙ্গে সুসম্পর্ক হয়। এ সুযোগে দালালরা বিভিন্নভাবে জনসাধারণকে প্রতারিত করছে। বিভিন্ন সেবা প্রতিষ্ঠানের সামনে দালালির মাধ্যমে জনসাধারণকে হেনস্থা করা হয়। এ ধরনের দালালদের বিরুদ্ধে র্যাব বিভিন্ন সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছে। ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।