মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
গত কয়েক মাসে উল্লেখযোগ্য অস্ত্র-সম্পর্কিত খবরগুলো দু’বার শিরোনাম দখল করেছে। প্রথমটি, তাড়াহুড়ো করে আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারের সময় রেখে যাওয়া বিমান এবং অন্যান্য অস্ত্রের খবর। পরেরটি, এইউকেইইউএস নামে পরিচিতি অস্ট্রেলিয়ার নৌবাহিনীর জন্য যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া এবং যুক্তরাজ্যের অংশীদারিত্বে নিউক্লিয়ার সাবমেরিনের একটি ছোট বহর তৈরির উদ্যোগ।
এসব খবর পৃথিবীর দুই মেরুর দুই পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র এবয় চীনের মধ্যকার দ্বন্দ্বের চিত্রকে তুলে ধরে। এটি আরও দেখায় যে, শতাব্দী ধরে বিশে^র আধিপত্যবাদী শক্তিগুলো এই দুটি মেরু ঘিরে কীভাবে ঘুরপাক খাচ্ছে এবং বিশ্বব্যাপী সঙ্ঘাত এবং অস্ত্র সংগ্রহ একটি চক্রাকার ধারা অনুসরণ করে চলেছে। বিলিয়নেয়ার জর্জ সোরোস আগস্টের ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের মতামতে লিখেছেন, ‘চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক দ্রুত অবনতি হচ্ছে এবং যুদ্ধের দিকে নিয়ে যেতে পারে।’
বর্তমানে এই আধিপত্যবাদের এর মূল লক্ষ্য এশিয়া। তবে, বিগত দুই দশক ধরে এই অঞ্চলে বিরোধিতা মোকাবিলা করে আধিপত্য ধরে রাখতে অস্ত্রকে অগ্রাধিকার দেওয়ার বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ফলপ্রসূ হয়নি। কারণ চীনের সাথে দেশটির সংঘর্ষের ঝুঁকি ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছে। সর্বোপরি, প্রশান্ত মহাসাগরে স্বল্প-পরিসরে অস্ত্র ব্যবহার করে চীনের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার কোনও সুযোগ নেই।
আফগানিস্তানে পরিত্যক্ত মার্কিন হালকা সামরিক পরিবহন, পুরনো মডেলের হেলিকপ্টার, কৌশলগত মানহীন বিমান ব্যবস্থা এবং প্রপেলার লাইট অ্যাটাক এয়ারক্রাফ্টগুলো দূরবর্তী অঞ্চলে কম-তীব্রতার সংঘর্ষের জন্য ব্যবহৃত সরঞ্জামগুলো তুলনামূকভাবে সস্তা এবং খুচরা যন্ত্রাংশ ছাড়া সেগুলো দ্রুত অকার্যকর হয়ে যায়। বিপরীতে, এইউকেইইউএস-এর সাবমেরিনগুলো চীনের মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে কার্যকর। এগুলো অনেক বড় পরিসরে যুদ্ধ করার এবং টিকে থাকার ক্ষমতা সম্পন্ন। সাবমেরিনগুলি ট্র্যাক করা অত্যন্ত দুঃসাধ্য, যাতে বেইজিংয়ের খুব কম অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং এটি করার জন্য তার হাতে খুব কম সরঞ্জাম রয়েছে।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের দশকে জার্মানির বিরুদ্ধে ব্রিটেন এবং ফ্রান্সের মতো প্রতিপক্ষের বিস্মিয়কর উত্থান দ্বারা সৃষ্ট অতীতের শাসন চক্রগুলির মতো, আধিপত্যের লড়াইয়ে আকস্মিক এবং বিস্ময়করভাবে চীনের উদয়ম হয়েছে। মার্কিন সৈন্যরা আফগানিস্তান এবং ইরাক থেকে বেরিয়ে গেছে এবং এই অঞ্চলে একটি ক্রমবর্ধমান শক্তি হিসাবে চীনকে নিয়ে একটি ক্রমবর্ধমান দ্বিপক্ষীয় উদ্বেগ রয়েছে।
তবে মার্কিন সামরিক বাহিনী চীনের মতো একটি শক্তিশালী এবং ক্রমবর্ধমান সম্ভাব্য প্রতিপক্ষের সাথে লড়াইয়ের জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত নয়। গত ২০ বছরে, যুক্তরাষ্ট্র ভারী ব্যয় করেছে হালকা সাঁজোয়া যানবাহন, বডি আর্মার, কৌশলগত এবং স্বল্প-পরিসরের রিকনেসান্স সিস্টেম এবং স্বল্প-পরিসরের পরিবহন হেলিকপ্টারগুলোতে। কৌশলগত সরঞ্জামগুলির ক্ষেত্রে দেশটি সামান্যই ব্যয় করেছে, যা একটি পরাক্রমশালী শক্তিকে দুর্দান্ত করে তোলে।
কেউ কেউ বিশ্বাস করেন যে, ভিয়েতনাম যুদ্ধের সবচেয়ে বড় প্রশ্নটি ছিল, কিভাবে যুক্তরাষ্ট্র আরও ভালো প্রতিঘাত কৌশল দিয়ে জয়লাভ করতে পারত। ঘনিষ্ঠ পশ্চিমা মিত্রদের রক্ষা করার চেয়ে মার্কিন সম্পদের উত্তম ব্যবহার করার জন্য ভিয়েতনাম একটি সমকক্ষীয় প্রত্যক্ষ প্রতিপক্ষ হিসেবে সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল কিনা, তার চেয়েও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন এটি। যুক্তরাষ্ট্র যদি পরের প্রশ্নটিতে আরও মনোযোগ দিত, তাহলে ভিয়েতনাম কৌশলগতভাবে বিদ্রোহ মোকাবেলা করতে বিমুখ হওয়ার বিপদ সম্পর্কে একটি শিক্ষনীয় পাঠ হয়ে উঠতে পারত।
আফগানিস্তানে মার্কিন প্রত্যাহার অত্যন্ত খারাপভাবে কার্যকর করা হয়েছিল এবং একটি মানবিক বিপর্যয় ছিল। কিন্তু আফগানিস্তান আজকাল সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের জন্য বিশেষভাবে প্রাসঙ্গিক নয়, যেমনটি সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষজ্ঞ পল আর পিলার সম্প্রতি ফরেন পলিসিকে যুক্তি দিয়েছেন। এখন প্রশান্ত মহাসাগরে এর থেকেও বেশি গূরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ এবং চাপা উদ্বেগ রয়েছে। আর সেটি হ’ল চীন।
এখন, মার্কিন প্রতিরক্ষা বাজেট পুনরায় সেসব ব্যবস্থার উপর লক্ষ্য নির্ধারণ করছে, যা চীনকে মোকাবেলা করে যুক্তরাষ্ট্রকে আবার একটি মহান শক্তিতে পরিণত করবে। বাইডেন প্রশাসনের প্রথম বাজেটে গবেষণা উন্নয়ন পরীক্ষা এবং মূল্যায়নের জন্য রেকর্ড পারিমাণ ব্যয় রাখা হয়েছে, যা নতুন, উচ্চ প্রযুক্তির অস্ত্র তৈরি এবং অত্যাধুনিত নতুন প্রযুক্তির ভিত্তি তৈরি করবে। সূত্র : ফরেন পলিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।