Inqilab Logo

শনিবার ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ২৯ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

হয়রানি-অনিয়ম রোধে ঢামেকে নতুন পোশাক চালু

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৪ নভেম্বর, ২০২১, ১২:৩৫ পিএম

দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিন হাজারো মানুষ চিকিৎসা নিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে আসেন। এ সময় বহু রোগী ও তাদের স্বজনরা নানান হয়রানি ও অনিয়মের শিকার হন। ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক এসব অনিয়ম-হয়রানি বন্ধে নতুন উদ্যোগ নিয়েছেন।
চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনরা বেশিরভাগই দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে নেওয়া কর্মচারীদের অনিয়ম-হয়রানির শিকার হন। তাই এসব কর্মচারীদের নামসহ নতুন পোশাক দেওয়া হয়েছে। সহজেই তাদের নাম-পরিচয় বের করার জন্য নতুন এই উদ্যোগ নিয়েছে হাসপাতালের পরিচালক। সরেজমিনে ঢামেক হাসপাতাল ঘুরে এমন তথ্যই জানা গেছে।
নতুন এই পোশাকের সামনে ইংরেজিতে নাম লেখা এবং পেছনেও বড় করে বাংলায় নাম লেখা। তাদের কেউ অর্থ দাবি করলে ৩০-৪০ গজ দূর থেকেই নাম দেখেই চেনা যাবে। কোনো অভিযোগ থাকলে তাদের নাম সহজেই আমরা পেয়ে যাব
ঢামেক হাসপাতালের বহির্বিভাগের ওয়ার্ড মাস্টার আবুল বাশার শিকদার বলেন, পরিচালক রোগীদের হয়রানি-অনিয়ম বন্ধের কথা চিন্তা করে ডেইলি বেসিক কর্মচারীদের নতুন একটি পোশাক দিয়েছেন। দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা বিভিন্ন সময়ে হয়রানির শিকার হন। তারা যাতে কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হন সেই জন্য এই পোশাকের ব্যবস্থা করেছেন। এই পোশাক পরে ডিউটিরত অবস্থায় তারা কোনো ধরনের আর্থিক লেনদেন করলে সহজেই তাদেরকে শনাক্ত করা যাবে।
নতুন পোশাক পাওয়া একজন কর্মচারী তমাল বলেন, নতুন পোশাক পেয়ে আমরা অনেক খুশি। পরিচালক স্যার রোগীদের সেবা সহজ করার জন্যই এই পোশাক দিয়েছেন। আমরা যে হাসপাতালের কাজ করি সেটা শনাক্ত করতেই আধুনিক ডিজাইনের এই পোশাক দিয়েছেন। এখন পোশাক দেখে সহজেই রোগীরা আমাদের কাছে সহযোগিতা চাইতে পারবেন।
এ বিষয়ে ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক বলেন, আমাদের এখানে সরকারি ও দৈনিক মজুরির ভিত্তিক জনবল রয়েছে। যারা দৈনিক মজুরিতে কাজ করেন তাদের শনাক্ত করা কষ্ট। অনেক অভিযোগ আসে আমাদের কাছে। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তারা আর নাম-পরিচয় বলতে পারেন না।
তিনি বলেন, কেউ অর্থ দাবি ও হয়রানি করলে যাতে তাদের শনাক্ত করা যায় এমন একটি ভাবনা থেকে নতুন এই উদ্যোগ নিয়েছি। আইডি কার্ড দিয়ে তাদের শনাক্ত করা সম্ভব নয়, এটা সহজে নকল করা যায়।
ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক বলেন, আমাদের এখানে ৫০০ দৈনিক মজুরির লোকবল আছে। তাদেরকে যাতে দূর থেকেই চেনা যায় এমনটি পোশাকের ডিজাইন করি। এটা করতে আমাদের সময় লেগেছে। পোশাকের সামনে ইংরেজিতে নাম লেখা এবং পেছনেও বড় করে বাংলায় নাম লেখা। তাদের কেউ অর্থ দাবি করলে ৩০-৪০ গজ দূর থেকেই তাদের নাম দেখেই চেনা যাবে। কোনো অভিযোগ থাকলে তাদের নাম সহজেই আমরা পেয়ে যাব। পর্যায়ক্রমে আমরা সরকারি কর্মচারীদেরও এ ধরনের পোশাকের ব্যবস্থা করব।
এই পোশাকধারী লোকেরা বুঝতে পারবে যে, কেউ কোনো অর্থ দাবি করলে ও হয়রানি করলে সহজেই পরিচয় ফাঁস হয়ে যাবে। সেই ভয়ে তারা অনৈতিক কাজ থেকে বিরত থাকবে।
তিনি আরও জানান, প্রতিটি পোশাকে ৭০০/৮০০ টাকার মতো খরচ হয়েছে। এটা করতে আমাদের প্রায় ৫ লাখ টাকা লেগেছে। এটা আমরা সরকারি ফান্ড থেকে নেইনি। একটি প্রতিষ্ঠান আমাদের ডোনেশন করেছে।
মো. নাজমুল হক বলেন, এই পোশাক দেখে যে কেউ বুঝতে পারবে তারা দৈনিক মজুরির লোকবল ও হাসপাতালের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। তাদের কাছে রোগী ও তাদের স্বজনরা সাহায্য চাইতে পারবেন। পোশাক ছাড়া কেউ সাহায্য করতে চাইলে রোগী ও স্বজনরা বুঝতে পারবেন যে তারা হাসপাতালের কেউ নন। ফলে প্রতারণা ও হয়রানি বন্ধ হবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঢামেক

১১ ডিসেম্বর, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ