নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
মাত্রই আড়াই মাস আগের ঘটনা। কিন্তু গত আগস্টে মিরপুরে বাংলাদেশের কাছে অস্ট্রেলিয়ার খাবি খাওয়া যেন কোন দূর অতীত। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদদের ঘরের মাঠের সহায়ক বাইশ গজ নেই, ফাঁপা আত্মবিশ্বাস বাস্তবতার ধাক্কায় হয়ে গেছে চৌচির। অস্ট্রেলিয়ার দলটাও সেই দল না। বিশ্বমঞ্চে আজ আরেকবার মুখোমুখি হবার আগে বাংলাদেশের সেই সিরিজের কথা মনে করিয়ে যেন ‘আয়ানা’ই দেখালেন অজি বাঁহাতি স্পিনার অ্যাস্টন অ্যাগার। বললেন, ‘দুবাইতে সবই থাকছে একদম ভিন্ন’।
প্রথম রাউন্ডে স্কটল্যান্ডের কাছে হার দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু হয়েছিল বাংলাদেশের। ওমানের বিপক্ষেও মাহমুদউল্লাহরা পড়েছিলেন চরম চাপে। সেই চাপ সামলে সুপার টুয়েলভে পা রাখার পর আবার হারের বৃত্তে। শ্রীলঙ্কা, ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজের পর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও পরাজিত লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। হাতে বাকি আর একটাই ম্যাচ। জিততে না পারলে ওমান ও পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে দুই জয় পুঁজি করে ফিরতে হবে দেশে। সুপার টুয়েলভে জয়বিহীন থাকা আর একটা জয় পাওয়ার মধ্যেও তাই আছে বড় ফারাক। আশা নিভে গেছে আগেই, সমালোচনা হানা দিচ্ছে চারপাশ থেকে।
আগের চূড়ান্ত ব্যাটিং ব্যর্থতায় ৮৪ রানে গুটিয়ে যাওয়ার বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে। এমন কোণঠাসা অবস্থা থেকেও ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা দেখছেন হেরাথ, ‘পেশাদার হিসেবে আমাদের শক্তভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। আমাদের আরও একটি খেলা আছে। আমাদের জেতার মানসিকতা রাখতে হবে, জেতার আত্মবিশ্বাস তৈরি করতে হবে। বাংলাদেশের ক্রিকেট সামনে তাকানোর কথা ভাবতে হবে। কাল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আমাদের আরেকটি সুযোগ। ছেলেরা বিশ্লেষণ করছে তারা কি করেছে এবং তাদের কি করতে হবে। আমি নিশ্চিত কাল আমরা শক্তভাবে ঘুরে দাঁড়াব।’
অনেক প্রতিশ্রুতিশীল ক্রিকেটারে ভরা দল হলেও পারফরম্যান্সে দেখা যায়নি তার কিছুই। হেরাথ তবু আরও একবার আশা রাখতে চান, ‘এবার বিশ্বকাপ আমাদের ভাল যায়নি। এটা খেলারই অংশ। আমাদের ভাবতে হবে কীভাবে দল ও ব্যক্তি হিসেবে উন্নতি করা যায়। কোচদের জন্য এটা চ্যালেঞ্জের। কিন্তু এই ছেলেরা ভালো পারফরম্যান্সের সামর্থ্য রাখে। আরেকটা খেলা বাকি। আমি নিশ্চিত সেখানে নিজেদের মেলে ধরবে। আমাদের পরে যে সিরিজগুলো আছে পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেগুলোর জন্য প্রস্তুত হতে হবে।’
ঘরের মাঠে প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়াকে ৪-১ ব্যবধানে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারিয়েছিল বাংলাদেশ। বেশ কয়েকজন সেরা তারকা ছাড়া খেলতে আসা অজিদের মন্থর ও টার্নিং উইকেটে মুস্তাফিজুর রহমানের স্লােয়ার আর স্পিনারদের বিষে নাকাল করেছিল মাহমুদউল্লাহর দল। টি-টোয়েন্টি সিরিজ হলেও ব্যাটসম্যানদের জন্য সে সিরিজে ছিল কঠিন পরীক্ষা। ১০০ রানের পুঁজিও মনে হচ্ছিল বিশাল কিছু।
সেই সিরিজের পর বিশ্বকাপে এসে দলের ভিন্ন অবস্থা। সুপার টুয়েলভে তিন ম্যাচে দুটিতে জিতে সেমিফাইনালের আশা জোরালোভাবে আছে অস্ট্রেলিয়ার। চার ম্যাচের সবগুলো হেরে বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে বাংলাদেশের। গতকাল ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে অগাস্টের সিরিজ প্রসঙ্গ টেনে অ্যাগার জানালেন, সব কিছু এখন কতটা ভিন্ন, ‘খুবই ভিন্ন রকম কন্ডিশন ছিল। সম্ভবত আমরা অনেকেই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে অমন কন্ডিশনে খেলেছিলাম। অবশ্যই আমাদের কাছে তা ছিল চ্যালেঞ্জিং। সত্যি কথা বলতে বাংলাদেশ ওই কন্ডিশনে খুব ভাল খেলেছিল। তারা ঘরের অমন কন্ডিশনে ভাল খেলবে এতে আমরা অবাক হইনি। এখন সব কিছু ভিন্ন।’
নিয়মিত অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ, ডেভিড ওয়ার্নার, স্টিভ স্মিথ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, প্যাট কামিন্স, মার্কাস স্টয়নিসসহ সব তারকাকেই পাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। কন্ডিশনের সঙ্গে শক্তির বিচারেও এখন তারা অনেকটাই আলাদা। সেই কথাও মনে করিয়ে দিলেন অ্যাগার, ‘একদম ভিন্ন রকমের দল এখন আমাদের। আর উইকেটও ওখানকার মতো আচরণ করবে না। দেখা যাক কাল (আজ) কি হয়। আমাদের জয় দরকার। ছেলেরা সবাই রোমাঞ্চিত, ভাল খেলে জিততে চায়। আমার মনে হয় ভাল ম্যাচ হবে।’
খাতায় কলমে যেটুকু সম্ভাবনা ছিল, আগের ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে বিধ্বস্ত হয়ে তাও মিলিয়ে গেছে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শেষ ম্যাচটা তাই অনেকটাই নিয়মরক্ষার। তবে স্পিন বোলিং কোচ রঙ্গনা হেরাথ মনে করছেন বাংলাদেশের ক্রিকেট এগিয়ে নেওয়ার স্বার্থে এই ম্যাচে জয় পাওয়াটা ভীষণ দরকার। ভুলের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে সেই কাজটা করে দেখাবেন তারা।
আজ বিকেল ৪টায় দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচে নামবে বাংলাদেশ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।