Inqilab Logo

সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অবশেষে র‌্যাবের খাঁচায় বন্দী প্রদীপ রায়কে জেল হাজতে প্রেরণ

দিরাই উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩০ অক্টোবর, ২০২১, ৩:৫৪ পিএম

অবশেষে র‌্যাবের খাঁচায় বন্দী হয়ে জেল যেতে হল বহুল আলোচিত-সমালোচিত সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায় (৫৫)-কে। শনিবার সকাল ৯টায় তাকে দিরাই থানা থেকে সুনামগঞ্জ আদালতে পাঠানো হয় বলে জানান অফিসার ইন-চার্জ আজিজুর রহমান।
জানা যায়, দিরাইয়ের আলোচিত রুহেদ হত্যা মামলার প্রধান আসামী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায়কে গোপন সংবাদে ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে শুক্রবার রাত ১১টায় সিলেট শহরের মদীনা মার্কেট এলাকা থেকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-৯ এর একটি আভিযানিক দল। পরে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় শহরতলির ইসলামপুরস্থ র‌্যাবের কার্যালয়ে। রাত ৩টায় দিরাই থানায় হস্তান্তর করে র‌্যাব-৯। এর আগে ২০১৭ সালে উপজেলার জারলিয়া জলমহাল দখল নিয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ত্রিপল মার্ডার মামলারও আসামী প্রদীপ রায়।
দিরাই থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার উদির হাওর জলমহালের দখল নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে রুহেদ নামে একজন নিহত হয়। এ ঘটনার পাঁচ দিন পর নিহতের ভাই বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। দিরাই থানায় করা ওই মামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায়সহ ৭৩ জনকে আসামি করা হয়।
২২ অক্টোবর রাতে দিরাই থানায় মামলাটি দায়ের করেন নিহত রুহেদ মিয়ার ভাই সুহেদ মিয়া। এর আগে গত ১৮ অক্টোবর বিকেলে উদির হাওর জলমহালের দখল নিয়ে উপজেলার ভাটিপাড়া দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে ওই গ্রামের যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা কাজল নূরের পক্ষের রুহেদ মিয়া (৪০) নিহত হন। আহত হন আরও অর্ধশতাধিক।
অভিযোগ আছে, স্থানীয় একটি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির নামের জলমহালটি ইজারা নিলেও এর পেছনে রয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায়। তিনিই এটি নিয়ন্ত্রণ করলেও ভাটিপাড়া গ্রামে তার পক্ষের নেতৃত্ব দেন শাহ আলম। সংঘর্ষে নিহত রুহেদ মিয়া কাজল নূরের চাচাতো ভাই। দিরাই থানা অফিসার ইনচার্জ আজিজুর রহমান জানান, হত্যা মামলায় আসামী প্রদীপ রায়কে আইনি প্রক্রিয়ায় সুনামগঞ্জ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
২০১৭ সালের ১৭ জানুয়ারিতে উপজেলার জারলিয়া জলমহালের দখল নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ-যুবলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনজনের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় পরে প্রদীপ রায়কে প্রধান আসামী করে দিরাই পৌরসভার তৎকালীন মেয়র মোশাররফ মিয়া এবং দিরাই উপজেলা পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান তালুকদারসহ ৩৯ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়। ওই মামলায় বর্তমানে প্রদীপ রায় জামিনে আছেন।
এদিকে রুহেদ হত্যা মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই আজিজুর রহমান জানান, ঘটনার বিষয়ে অধিকতর তদন্তের স্বার্থে দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায়কে শনিবার আদালতে নিয়ে পাঁচ দিনের রিমান্ড চাওয়া হলে বিজ্ঞ আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তাকে আজকেই (গতকাল) দিরাই থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলেও তিনি জানান।
দিরাই থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) আজিজুর রহমান দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায়কে গ্রেফতারের বিষয়টি স্বীকার করে জানান, শনিবার সকাল ৯টায় আমরা তাকে আদালতে প্রেরণ করেছি। তাকে দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামের রুহেদ হত্যা মামলার প্রধান আসামী হিসেবে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জেল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ