বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরা ক্রমান্বয়ে নিয়ন্ত্রণে এসে গেছে। সারাদেশে সংক্রমন মনে এসেছে। দেশের ৬টি বিভাগে গত এক দিনে করোনাভাইরাস আক্রান্ত কারও মৃত্যু হয়নি। তবে দুই বিভাগে নতুন কোনো রোগীও শনাক্ত হয়নি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ২৯৪ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এ সময়ে মৃত্যু হয়েছে আরও ৬ জনের। এই ৬ জনই ছিলেন ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের বাসিন্দা। রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি।

এর আগে গত বুধবার ঢাকা বিভাগে শ‚ন্য মৃত্যুর খবর দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গতবছরের এপ্রিলের পর ঢাকা বিভাগে সেটাই ছিল প্রথম মৃত্যুহীন দিন। এর আগের দিন মঙ্গলবার ঢাকা, বরিশাল, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগে নতুন করে কারও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েনি। দেশের ২৬টি জেলা থেকে নতুন কোনো রোগী শনাক্তের খবর আসেনি।

গত এক দিনে শনাক্ত নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ৬৮ হাজার ৮৫৭ জন। আর মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৭ হাজার ৮৪৭ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে ২৪ ঘণ্টায় সেরে উঠেছেন ২২৭ জন। তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত দেশে সুস্থ হয়ে উঠলেন ১৫ লাখ ৩২ হাজার ৬৯৫ জন।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২০০২ সালের ৮ মার্চ। চলতি বছরের ৩১ অগাস্ট তা ১৫ লাখ পেরিয়ে যায়। এর আগে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তারের মধ্যে ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।

প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ বছর ১৪ সেপ্টেম্বর তা ২৭ হাজার ছাড়িয়ে যায়। তার আগে ৫ অগাস্ট ও ১০ অগাস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে। যা মহামারীর মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যের সংখ্যা।
বিশ্বে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৪৯ লাখ ৭১ হাজার ছাড়িয়েছে। আর শনাক্ত হয়েছে ২৪ কোটি ৪৯ লাখের বেশি রোগী।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত এক দিনে সারা দেশে মোট ১৯ হাজার ৫৩৫টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ১ কোটি ৩ লাখ ১ হাজার ৫৯৩টি নমুনা। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা অনুযায়ী শনাক্তের হার ১ দশমিক ৫০ শতাংশ; যা আগের দিন ১ দশমিক ৫৩ শতাংশ ছিল। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৫ দশমিক ২৩ শতাংশ। মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৭৭ শতাংশ।

গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে ৪ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ১ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছর এবং ১ জনের বয়স ছিল ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। তাদের মধ্যে ৪ জন সরকারি হাসপাতালে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে দেশে করোনা নিয়ন্ত্রণে এসে গেছে। তবে সবার টিকা গ্রহণ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।