Inqilab Logo

রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

তালেবানের সাথে যুক্ত হওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে আহ্বান খলিলজাদের

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৮ অক্টোবর, ২০২১, ৪:৪৫ পিএম

আফগানিস্তানের জন্য সাবেক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত জালমে খলিলজাদ বলেছেন, বাইডেন প্রশাসনের উচিত তালেবানদের সাথে জড়িত হওয়া এবং সেখানে এখন যে মানবিক সঙ্কট উদ্ভূত হচ্ছে, তা সমাধান করতে সহায়তা করা।

বুধবার কার্নেগি এনডাউমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের সাথে দেয়া একটি সাক্ষাতকারে খলিলজাদ এই মন্তব্য করেন। এটি একটি ওয়াশিংটন-ভিত্তিক থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক যারা ভূ-রাজনীতির উপর কাজ করে।

আফগানিস্তানে ২০ বছরের সামরিক উপস্থিতির অবসান ঘটিয়ে মার্কিন প্রত্যাহারের বিষয়ে তালেবানের সাথে আলোচনায় নেতুত্ব দিয়েছিলেন খলিলজাদ। সাক্ষাতকারে তিনি শান্তি আলোচনার ব্যর্থতা এবং কাবুলের পতনের জন্য সাবেক আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনিকে দায়ী করার পাশাপাশি চুক্তি এবং তালেবান নেতৃত্বকে সমর্থন দিয়েছেন।

সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত সতর্ক করে বলেন, কাবুলে নতুন তালেবান সরকারের পতন হতে দিলে তা একটি ‘বিশাল মানবিক সংকট’ তৈরি করবে এবং লাখ লাখ আফগান শরনার্থী হতে শুরু করবে। যা ওই অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করবে এবং ‘সন্ত্রাসবাদের জন্য জায়গা তৈরি করবে’। তিনি বলেন, তালেবানরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ‘স্বাভাবিক সম্পর্ক’ চাইছে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কাবুলে তাদের দূতাবাস পুনরায় চালু করতে, আর্থিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে এবং অর্থনৈতিক সহায়তা দিতে চায়।

খলিলজাদ বলেন, ‘তালেবানের আচরণের (মানবাধিকারের বিষয়ে) বিষয়টি বিবেচনা করে আমাদের একটি রোডম্যাপে সম্মত হওয়ার জন্য তাদের সাথে বসতে হবে। এর বিনিময়ে আমরা যে পদক্ষেপগুলো নেব, তা একে অপরের প্রতি অবিশ্বাস দূর করবে বলে আমরা আমরা আশা করি। তিনি বলেন, ‘তালেবানরা অনেক ক্ষেত্রে পরিবর্তিত হয়েছে। তবে কিছু উপায়ে তারা একই রকম রয়েছে। তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পনা করার অনুমতি না দেয়ার চুক্তিতে অটল রয়েছে।’

তালেবানের প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘সন্দেহবাদ’ বৈধ কিন্তু কূটনীতির জন্য সুযোগের ‘অন্বেষণ’ করা উচিত। এই মন্তব্য করে খলিলজাদ বলেন, ‘আমরা সবাই ক্ষমতায় থাকার জন্য জেদ করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট গনির উদাসীনতায় বিস্মিত হয়েছি।’ তিনি বলেন, গনির ‘মহা ভুল গণনা ছিল যে, তিনি ধারণা করেননি আমরা প্রত্যাহারের বিষয়ে সিরিয়াস ছিলাম। তিনি মনে করেছিলেন আমরা কখনই প্রত্যাহার করব না।’ খলিলজাদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে চুক্তিতে তালেবান নেতৃত্বের আনুগত্যকে মূলত রক্ষা করেছেন। তিনি বলেছেন যে, তারা আল-কায়েদা এবং আইএসআইএল (আইএসআইএস) এর মতো গোষ্ঠীগুলোর জন্য নিরাপদ আশ্রয়ের অনুমতি না দেয়ার প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছে। দুই গ্রুপ এখনো আফগানিস্তানে রয়েছে।

খলিলজাদ গত ১৫ অক্টোবর আফগানিস্তান পুনর্মিলনের জন্য মার্কিন বিশেষ প্রতিনিধি হিসাবে তার পররাষ্ট্র দপ্তরের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। শান্তি আলোচনার ব্যর্থতার জন্য তিনি সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন। তার জায়গায় তার ডেপুটি ও সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী টম ওয়েস্ট স্থলাভিষিক্ত হন। মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহার এবং এই মাসের শুরুতে দোহাতে তালেবানের ক্ষমতায় উত্থানের পর থেকে সিনিয়র তালেবান কর্মকর্তা এবং মার্কিন প্রতিনিধিরা তাদের প্রথম ব্যক্তিগত বৈঠক করেছেন। খলিলজাদ সেসব আলোচনায় জড়িত ছিলেন না।

আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোল্লা আমির খান মুত্তাকি বলেছেন, দোহায় তালেবান প্রতিনিধি দলের ফোকাস ছিল মানবিক সহায়তা এবং যুক্তরাষ্ট্রকে আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক রিজার্ভের উপর থেকে স্থবিরতা তুলে নেয়ার বিষয়ে জোর দেয়া। তিনি যোগ করেছেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র করোনা ভ্যাকসিন সরবরাহ করবে। তবে এখন পর্যন্ত, বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলেছেন যে, আফগান জনগণকে মানবিক সহায়তা পাওয়ার উপায় খোঁজার পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তালেবানের উপর আর্থিক ও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা বজায় রাখবে। সূত্র: আল-জাজিরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আফগানিস্তান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ