Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা দেশ ও ইসলামবিরোধী শক্তির ষড়যন্ত্র

১৭ নভেম্বর ঢাকায় জাতীয় সেমিনার শীর্ষ ওলামা মাশায়েখ মতবিনিময় সভায় পীর সাহেব চরমোনাই

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৮ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০৩ এএম

কুমিল্লায় পবিত্র কোরআন অবমাননা ও সংখ্যালঘুদের মন্দিরে হামলা ও বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ দেশ ও ইসলাম বিরোধী শক্তির গভীর ষড়যন্ত্র। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। সংখ্যালঘুদের জান-মালের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিয়েছে ইসলাম। এদেশের সংখ্যালঘুরা রাষ্ট্রীয় সকল সুযোগ সুবিধা মুসলমানদের চেয়ে বেশী ভোগ করছে।

সংখ্যালঘুদের ব্যবহার করে কেউ স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিরোধী গভীর ষড়যন্ত্র সাজিয়েছে কি-না, তা’খতিয়ে দেখতে হবে। ইসলাম ও স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিরোধী কোনো ষড়যন্ত্র সফল হবে না। গতকাল বুধবার পুরানা পল্টনস্থ আইএবি মিলনায়তনে শীর্ষস্থানীয় ওলামা-মাশায়েখ ও রাজনীতিবিদদের মতবিনিময় সভায় ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। দেশ বিরোধী চক্রান্ত মোকাবেলা ও চলমান সঙ্কট উত্তরণে পীর সাহেব চরমোনাই আগামী ১৭ নভেম্বর ঢাকায় জাতীয় সেমিনার কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

দলের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমানের পরিচালনায় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন্দ, দৈনিক ইনকিলাবের সহসম্পাদক মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের ভারপ্রাপ্ত খতিব মুফতি মুহিবুল্লাহ বাকি নদভী, দলের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমাদ, জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি আক্কাস আলী, জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সভাপতি আল্লামা নূরুল হুদা ফয়েজী, বগুড়া জামিল মাদরাসার মুহাদ্দিস আল্লামা আব্দুল হক আজাদ, মুফতি ওমর ফারুক সদ্বীপী, গবেষক ড. মোশতাক আহমদ, বেফাকুল মাদারিসিলের মহাসচিব মুফতি মোহাম্মদ আলী, চট্টগ্রাম জিরি মাদরাসার প্রতিনিধি মাওলানা খোবাইর আহমদ, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির নেতা মাওলানা শেখ লোকমান হোসেন, খেলাফত মজলিসের প্রতিনিধি মুফতি আব্দুর রহিম সাঈদ, বাংলাদেশ ফরায়েজী আন্দোলনের মহাসচিব আব্দুর রহমান খান, বরিশাল মাদরাসার প্রতিনিধি মাওলানা উবায়দুর রহমান মাহবুব। এতে আরো উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় সংহতি পরিষদের প্রধান সমন্বয়কারী মাওলানা এ কে এম আশরাফুল হক, ইসলামী আন্দোলন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির মাওলানা ইমতিয়াজ আলম ও উত্তরের আমির প্রিন্সিপাল মাওলানা ফজলে বারি মাসউদ, মাওলানা আহমদ আব্দুল কাইয়ূম, মাওলানা কে এম আতিকুল ইসলাম ও শহিদুল ইসলাম কবীর।

পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে বিক্ষুব্ধ জনতার উপর পুলিশের গুলিতে ৫ জন নিহত এবং নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় হিন্দুদের মন্দিরে আক্রমণ এবং রংপুরের মাঝি পলি¬তে অগ্নি সংযোগ, এগুলো কোন ইসলামী সংগঠনের কাজ নয়। বরং দেশ বিরোধী ও ইসলাম বিরোধী শক্তির গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। এসব ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি শ্রেণি সারাদেশে বিক্ষোভ করছে। সংবিধান বিরোধী এবং ইসলাম ও মুসলমান বিরোধী শে¬াগান দিচ্ছে।

পীর সাহেব বলেন, একটি শ্রেণি সংবিধান থেকে বিসমিল¬াহ ও রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম তুলে দেয়ার শে¬াগান দিচ্ছে। তাদের শে¬াগানের সঙ্গে ভারতের উগ্রবাদী সংগঠন বিজিপির শে¬াগানের মিল রয়েছে। বাংলাদেশের কিছু মিডিয়া এবং বুদ্ধিজীবী দেশে কোন সাম্প্রদায়িক ঘটনা ঘটলেই আলেম ওলামা ও ইসলামী সংগঠনগুলোকে একতরফা দায়ী করে। ৭২-এর সংবিধানে ফিরে যাওয়ার নামে এদেশে ইসলামপন্থীদের সকল তৎপরতা বন্ধের দাবী তুলছে।
তিনি বলেন, সৃষ্ট সঙ্কট নিরসনে দলমত নির্বিশেষে সকল দেশপ্রেমিক শক্তির জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।

মাওলানা মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী বলেন, বাংলাদেশের ওপর কালো মেঘের ঘনঘটা শুরু হয়েছে। কুমিল্লার ঘটনা একটি ষড়যন্ত্র। ইসলাম ও মুসলমানদের ধ্বংসের চক্রান্ত স্বরূপ এটা করা হয়েছে। এ ঘটনার সাথে আলেম-ওলামা, ইসলামী সংগঠনের কেউ জড়িত প্রমাণ করতে পারেনি। বিজেপি নেতারা ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে সৈন্য পাঠাতে বলা প্রমাণ করে ষড়যন্ত্র কতটুকু গড়িয়েছে। তিনি বলেন, এসব অনাকাঙ্খিত ঘটনার পেছনে উগ্রবাদি ইসকন ষড়যন্ত্র করছে। মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী বলেন, বাংলাদেশে ৮ ভাগ অমুসলিমদের ওপর কোন নির্যাতন হয়নি। কোরআন সুন্নার আলোকে অন্য ধর্মের দেব- দেবিকে গালি দিতে নিষেধ করা হয়েছে। তা’না হলে তারা আল্লাহকে গালি দিবে। বিদ্যমান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রাষ্ট্রের অবদান নয়, দেশের পীর মাশায়েখ ও ইসলামের অনুশীলনের কারণেই সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, ৭২’এর সংবিধানে যাওয়ার সুযোগ নেই। এদেশে ইসলামের রাজনীতি না চললে মার্কসবাদী, সাম্রাজ্যবাদী রাজনীতিও চলবে না। তিনি কুমিল্লা ও রংপুরের ঘটনা তদন্ত করে শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানান। তিনি গুলিতে শহীদ পরিবাদের ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবি জানান। বায়তুল মোকাররম মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা মুহিব্বুল্লাহিল বাকী নদভী বলেন, দেশে যে সব ঘটনার অবতারণা তা সাম্প্রদতায়িক নয়, সাম্প্রদায়িক বলে রং দেয়া হয়েছে। এর সাথে ধর্মপ্রাণ মানুষ জড়িত নয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পীর সাহেব চরমোনাই


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ