মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে পরিচিত নিউইয়র্ক মেট্রো এলাকায় বসবাসরত বাংলাদেশিদের ২০ শতাংশ দারিদ্রসীমার নিচে দিনাতিপাত করছে। এশিয়ান আমেরিকান ফেডারেশনের সর্বশেষ জরিপে (২০১৯) এমন উদ্বেগজনক তথ্য উদঘাটিত হয়েছে। চার সদস্যের একটি পরিবারের বার্ষিক আয় যদি ২৬ হাজার ডলারের কম হয় তাহলে তাদেরকে চরম দারিদ্রের সাথে বসবাসরকারি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
ফেডারেশনের কর্মকর্তা মীরা ভ্যানুগোপাল রবিবার জরিপের বিবরণ প্রদানকালে করোনা পরবর্তী সময়ের জরিপ প্রকাশ পেলে আরো উদ্বেগের তথ্য সামনে আসবে বলে উল্লেখ করেছেন।
তিনি জানান, নিউইয়র্ক, নিউজার্সি, ফিলাডেলফিয়া, কানেকটিকাট অঞ্চলে বসবাসরত এশিয়ান-আমেরিকানদের মধ্যে সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় বাংলাদেশীরা। এর আগে ২০১০ সালের জরিপের তুলনায় বাংলাদেশীদের সংখ্যা হাডসন ভ্যালিতে ১৯২%, নিউইয়র্ক সিটিতে ১১২%, নিউজার্সি ও ফিলাডেলফিয়ায় ১৭৬% বাড়লেও দারিদ্র মুক্তির ক্ষেত্রে তেমন হেরফের ঘটেনি।
এর কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, বাসা ভাড়াসহ নিত্য প্রয়োজনীয় সবকিছুর মূল্যবৃদ্ধির সাথে সঙ্গতি রেখে কারোরই আয়-রোজগার বাড়েনি। এ অবস্থায় বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি বাফেলো, শিকাগো, বিংহামটন, আপার ডারবি, হিউস্টন, ডালাসে পাড়ি জমালেও পারিবারিক কোটায় নবাগতরা নিউইয়র্কে বসতি গড়েছেন। অর্থাৎ এরা স্বদেশী আমেজে স্বদেশী কালচারে দিনাতিপাত করতে অভ্যস্থ হওয়ায় অর্থ সংকটকে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছেন বলে জরিপ পরিচালনাকারীরা উল্লেখ করেছেন।
জরিপে প্রকাশ, মোট জনসংখ্যার এক পঞ্চমাংশই গরিবের চেয়েও গরিবানা হালে দিনাতিপাত করছেন বাংলাদেশি, চায়নিজ, পাকিস্তানী এবং নেপালিরা। তুলনামূলকভাবে ভারতীয়দের অবস্থান অনেক ভালো। বাংলাদেশিদের দ্বিতীয় প্রজন্ম যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চ শিক্ষা লাভের পর নিজেদের অবস্থানকে সুসংহত করেছেন এবং তারা সবচেয়ে দামী এলাকায় বসতি গড়েছেন। যা অনেক আগেই ভারতীয়দের বেলায় ঘটেছে। এশিয়ান আমেরিকান ফেডারেশনের জরিপ পরিচালনাকারিরা মন্তব্য করেছেন, বাংলাদেশি, পাকিস্তানি, নেপালি এবং চীনাদের দারিদ্র মুক্তির জন্যে ভাষাগত সমস্যা দূর করার পাশাপাশি জাতিগত ঐক্য সংহত করতে হবে। সাধ্যমত শিক্ষালাভে মনোযোগী হতে হবে। জরিপ পরিচালনাকারীরা পরামর্শ দিয়েছে, বয়স্কদের সেবামূলক কার্যক্রমকে এশিয়ান কালচারে উজ্জীবিত রাখতে হবে।
জরিপের তথ্য অনুযায়ী, এশিয়ান আমেরিকানদের মধ্যে ১০ বছরের ব্যবধানে চরম দারিদ্রের সংখ্যা ১৫% বেড়েছে। ২০১০ সালে ছিল ২ লাখ ৫২ হাজার, ২০১৯ সালে তা ২ লাখ ৯০ হাজার হয়েছে। নিউইয়র্ক মেট্র এলাকায় দারিদ্র সীমার নীচে বসবাসকারি এশিয়ানের হার ১০.৪%। ২০১০ সালে তা ছিল ৯.২%। জরিপের তথ্যে আরো বলা হয়েছে, এশিয়ানদের মধ্যে সবচেয়ে বেশী বাড়ছে বাংলাদেশীর সংখ্যা। কঠোর শ্রম দিচ্ছেন, কিন্তু স্বপ্ন পূরণের পথে ধাবিত হতে সক্ষম হচ্ছেন না।
এর কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, সিটি, স্টেট এবং ফেডারেল প্রশাসনে বিদ্যমান অনেক সুযোগ-সুবিধার সাথে তারা পরিচিত না থাকায় ন্যায্য পারিশ্রমিক দূরের কথা ব্যবসায়িক সুবিধাও হারাচ্ছেন। মূলধারার রাজনীতিতে তারা জোরালো ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে সক্ষম হননি এখনও। ভোটের ময়দানেও পিছিয়ে রয়েছেন বাংলাদেশীরা। এমন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ ঘটানোর তাগিদ দিয়েছেন এশিয়ানদের বন্ধু কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং। তিনি এই জরিপের ইতিবাচক প্রসঙ্গে বলেন, অভিবাসী সমাজের নাজুক অবস্থার অনেক কিছুই আমরা জানতে সক্ষম হলাম। এখন সে সব ইস্যুতে সরব হবো।
স্টেট সিনেটর জন ল্যু অভিন্ন ভাষায় বলেছেন, এশিয়ানরা নানাভাবে বঞ্চিত হচ্ছেন। তা দূর করতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। স্টেট এ্যাসেম্বলীওম্যান জেনিফার রাজকুমার বলেছেন, এশিয়ান আমেরিকান ফেডারেশনের এই জরিপ আমাদের চোখ-কান খুলে দিয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।