Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৪ মে ২০২৪, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অনেক জবাবের ‘প্রথম’ ফিফটি

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৫ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০০ এএম

দুঃসময়ের প্রহর পেরিয়ে অবশেষে নিজেকে ফিরে পেলেন মুশফিকুর রহিম। দারুণ সব শটের পসরা সাজিয়ে ফিফটি স্পর্শ করলেন ৩২ বলে। ইনিংসে চার ৪টি, ছক্কা ২টি। আর তাতে একটি প্রথমের স্বাদ পেলেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের অভিজ্ঞ এই সেনানী। ২০০৭ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরে খেলেছিলেন মুশফিকুর রহিম। এরপর থেকে খেলেছেন প্রতিটি আসরেই। তবে এ টুর্নামেন্টে এতদিন কোনো ফিফটি ছিল না মুশফিকের। গতকাল সেই খরা কাটালেন অভিজ্ঞ এই টপঅর্ডার। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজের ২৯তম ম্যাচে এসে মুশফিক পেলেন প্রথম ফিফটির দেখা। কুমারার ফুললেংথের বলে ফ্লিক করে সিঙ্গেল নিয়ে ৩২ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন তিনি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ২৪ ইনিংস খেলে তার প্রথম ফিফটি এটি।
এর আগে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মুশফিকের সর্বোচ্চ স্কোর ছিল ৪৭, ২০১৪ সালে মিরপুরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সে ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। টি-টোয়েন্টিতে মুশফিকের এটি ষষ্ঠ ফিফটি, গতকালের আগে সর্বশেষ করেছিলেন ২০১৯ সালে ভারত সফরে। ১১ ইনিংসের খরার পর এলো তার এই ফিফটি। সবশেষ ২৮ ইনিংসে এটি তার কেবল দ্বিতীয় ফিফটি।

তবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে ও শুরুতে তার ফর্ম নিয়ে ফিসফাস ছিল। স্ট্রাইকরেটও নেমে যাচ্ছিল। বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচে স্কটল্যান্ডের ১৪০ রান তাড়া করতে গিয়ে চারে নেমে তার ৩৬ বলে ৩৮ রানের ইনিংস প্রশংসার চেয়ে সমালোচনাই বেশি কুড়িয়েছে। ওমানের বিপক্ষে পরের ম্যাচে নেমে যায় ব্যাটিং-অর্ডার। এবার মুশফিক নামলেন আটে। দেশ থেকে তামিম ইকবাল টিম ম্যানেজমেন্টের এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত হতে পারলেন না। বললেন, যেকোনো পরিস্থিতি চারে–পাঁচে নামা ব্যাটসম্যানের ওপর আস্থা রাখা উচিত। পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে পরের ম্যাচেই মুশফিক নামলেন চারে। তাতে ফল পাল্টায়নি, বরং মুশফিকের বাজে ফর্ম নিয়ে ফিসফিসানি আরও বাড়ল।

এসব টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডের অল্পসল্প গল্প। মুশফিক সে গল্পে ‘খলনায়ক’ বনে গেলেও পরিত্রাণের পথ খোলা ছিল সামনেই- টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভ। অনেকের মতেই ‘আসল’ বিশ্বকাপ- বড় বড় সব দল আর বড় খেলোয়াড়দের ভালো করার মঞ্চ। মুশফিক সেখানে বাজিমাত করলেন প্রথম দানেই। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নিজের চিরাচরিত জায়গা চার নেমে ৩৭ বলে তার অপরাজিত ৫৭ রানের ইনিংসটি অনেক কিছুরই জবাব। ফর্ম ও স্ট্রাইকরেট নিয়ে সমালোচনা, ব্যাটিং অর্ডারে নিচে নেমে যাওয়া, হাতে খুব বেশি শট নেই- এসব কথার। প্রতিপক্ষ যেহেতু শ্রীলঙ্কা, যাদের বিপক্ষে মুশির ব্যাট সব সময়ই চওড়া- অর্থাৎ তিনি যেন জানতেন আলো আসবেই।

শারজায় এদিন মুশফিকের ব্যাটে সেই আলোর স্ফুরণ ঘটল। তাতে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নিজেদের চিরাচরিত ব্যর্থতার জায়গা থেকেও বেরিয়ে এসেছে বাংলাদেশ। শেষ ৫ ওভারে রান তোলার গতিতে বাংলাদেশ দল বরাবরই যেন বনানী–মতিঝিল রুটের ৬ নম্বর বাস। কিন্তু আজ সেই লক্কর-ঝক্কড় বাস-ই মুশফিকের চালনায় পেল ভলভোর গতি। শেষ ৩০ বলে এসেছে ৫৩ রান- এই বিশ্বকাপে পাপুয়া নিউ গিনি ছাড়া আর কোনো দলের বিপক্ষেই শেষটা এত ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। কিন্তু শ্রীলঙ্কা ও পাপুয়া নিউ গিনির বোলারদের মধ্যে পার্থক্য তো সবারই জানা।

মুশফিক যে ধাতে গড়া তাই আন্দাজ করে নেওয়া যায়- তার ১৫৪.০৫ স্ট্রাইকরেটের ইনিংসটি নিন্দুকদের প্রতি একরকম বিবৃতিও। তার সাথে নাঈম শেখের ফিফটির্দ্ধো আরেকটি ইনিংসে বড় সংগ্রহ গড়েও বাজে ফিল্ডিং আর বোলিংয়ের পসরা সাজিয়ে ম্যাচটি হেরে গেছে বাংলাদেশ!



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: "টি২০ বাংলাদেশ"

৩ নভেম্বর, ২০২১
২ নভেম্বর, ২০২১
৩১ অক্টোবর, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ