নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ভাগ্যের ফেরে প্রথম রাউন্ড পার হয়ে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল পর্বে খেলতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। প্রথম ম্যাচেই স্কটল্যান্ডের সাথে হেরে সেখানেও লেগেছিল গ্রহণ। তবে সব শঙ্কা উড়িয়ে সুপার টুয়েলভে মাহমুদউল্লাহ-সাকিবরা। কিন্তু কোন গ্রুপে? এটা নিয়েও নাটক কম হয়নি। টুর্নামেন্টের সূচি প্রকাশের সময় আইসিসি জানিয়েছিল, প্রথম পর্ব পেরিয়ে বাংলাদেশ সুপার টুয়েলভে গেলে ‘বি১’ বা ‘গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন’ হিসেবেই যাবে। তবে প্রথম পর্বের মাঝপথেই আইসিসি বলেছে, গ্রুপে যে দলের যেমন অবস্থান, পরের পর্বের সূচি হবে সে অনুযায়ীই।
গতপরশু শেষ ম্যাচে ওমানকে হারিয়ে তিন ম্যাচ জেতা স্কটল্যান্ড সুপার টুয়েলভে যাচ্ছে ‘বি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হয়ে। এর আগে পাপুয়া নিউগিনিকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে সুপার টুয়েলভ নিশ্চিত করা বাংলাদেশ হয়েছে ‘বি’ গ্রুপের রানার্স-আপ। এখন সুপার টুয়েলভে বাংলাদেশ খেলবে গ্রুপ ১-এ। সেখানে তাদের প্রতিপক্ষ গত আসরের চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ, রানার্স-আপ ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও প্রথম পর্বে গ্রুপ ‘এ’-এর চ্যাম্পিয়ন দল। সর্বশেষ দলটি শ্রীলঙ্কা হওয়ার সম্ভাবনা, খাতা-কলমে নিশ্চিত না হলেও রান-রেটের হিসাবে এই গ্রুপে বেশ এগিয়ে তারা।
গ্রুপ ‘এ’-এর চ্যাম্পিয়নের সঙ্গেই সুপার টুয়েলভে বাংলাদেশের প্রথম খেলা আগামী ২৪ অক্টোবর, বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টা, শারজায়। সুপার টুয়েলভে বাংলাদেশের সর্বশেষ ম্যাচ ৪ নভেম্বর, দুবাইয়ে। গ্রুপ ২-এ থাকলে বাংলাদেশের মাত্র একটা ম্যাচ হতো দিনে। তবে গ্রুপ ১-এ চলে আসায় বাংলাদেশের সব ম্যাচই এখন শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টায়। এ পর্বে বাংলাদেশের দুটি করে ম্যাচ শারজা ও আবুধাবিতে। দুবাইয়ে হবে একটি ম্যাচ।
খালি চোখে সাধারণ ক্রিকেট সমীকরণে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কন্ডিশনে ভারত-পাকিস্তান-আফগানিস্তানের গ্রুপকে এড়িয়ে একটু স্বস্তিই পাওয়ার কথা। তবে হাবিবুল বাশার এখানে বাড়তি স্বস্তির কিছু দেখছেন না। তিনি বরং খুশি ম্যাচগুলোর সময় নিয়ে। রাতের ম্যাচে এখানে শিশির ভেজা বলে বোলারদের কাজ কঠিন হয়ে ওঠে, বিশেষ করে স্পিনারদের জন্য বল গ্রিপ করাই হয়ে ওঠে চ্যালেঞ্জিং। দলের সঙ্গে থাকা প্রধান নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমনও জানেন বাংলাদেশের মূল শক্তি স্পিন। এই গ্রুপে তিনি বাড়তি সুবিধার কিছু দেখছেন না, তবে তার কাছ আশার জায়গা দিনের ম্যাচ বলে, ‘মূল রাউন্ডে যে গ্রুপই পড়তাম, কঠিনই হতো। কোনো গ্রুপই সহজ নয়। সব দলই কঠিন, সবাই ভালো দল। এখানে আসলে ওরকম পছন্দ করার কিছু নেই। জিততে হলে ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে, সেরা ক্রিকেট খেলতে হবে, তা যে গ্রুপেই আমরা পড়ি। এই গ্রুপে ভালো, ওই গ্রুপে খারাপ, আমার কাছে এরকম কিছু মনে হচ্ছে না। যে গ্রুপেই পড়ি, ভালো না খেললে জিততে পারব না। একটা সুবিধা হয়েছে এই গ্রুপে, আমাদের খেলাগুলি দুপুরবেলা। দুপুরে খেলা হলে যেটা হয়... রাতে স্পিন কম করে, দুপুরে খেলা আমাদের জন্য ভালো। এটা একটা সুবিধা হতে পারে। এটাই একটা বাড়তি সুবিধা মনে হচ্ছে।’
এখন যেমন পরের পর্বে গ্রুপিং বা ম্যাচের সময় নিয়ে কথা বলা যাচ্ছে, একদিন আগেও সেই বাস্তবতা ছিল না। প্রথম ম্যাচের পর তো টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যাওয়ার শঙ্কাই ঘিরে ধরেছিল প্রবলভাবে। ওমানে প্রস্তুতি পর্ব থেকেই দলের সঙ্গে থাকা হাবিবুল স্বীকার করলে, তারাও ভীষণ চাপে ছিলেন। সেই চাপ থেকে মুক্তির স্বস্তি এখন দলে দেখতে পাচ্ছেন হাবিবুল, ‘স্বস্তির তো বটেই। প্রথম ম্যাচ আসলেই একটা ধাক্কা ছিল। প্রচণ্ড চাপে ছিলাম আমা সবদিক থেকেই। চাপে থাকার জন্যই হয়তো দ্বিতীয় ম্যাচ ঠিক নিজেদের মতো খেলতে পারিনি। শেষ ম্যাচটা বরং অনেক নির্ভার হয়ে খেলে নিজেদের সেরাটা দিতে পেরেছি। দ্বিতীয় রাউন্ডে নিশ্চিতভাবেই এত চাপ আমাদের ওপর থাকবে না।’
তবে ম্যাচের চাপ না থাকলেও এই পর্বে যে লড়াইটা হবে কঠিন সেটিও জানেন সাবেক এই অধিনায়ক, ‘মূল পর্বে তো অবশ্যই অনেক কঠিন লড়াই হবে। এটাও আমরা জানি। তবে প্রথম রাউন্ডে খেলার একটা বাড়তি চাপ ছিল। যেটা প্রথম ম্যাচ শেষে আরও বেড়েছে। তবে দিনশেষে... হ্যাঁ, চ্যাম্পিয়ন (গ্রুপে) হতে পারলে ভালো হতো। তবে শেষ ম্যাচটি ভালো ছিল আত্মবিশ্বাসের জন্য ও নিজেদের ফিরে পাওয়ার জন্য। যেভাবে খেলা দরকার ছিল, সেভাবে খেলেছি। তবে এখনও আমাদের অনেক জায়গায় অনেক অনেক উন্নতি করতে হবে মূল পর্বে ভালো করতে হলে।’
প্রথম রাউন্ড উতরানোর পর বিশ্বকাপ আলোচনায় অবশ্য শুধু ক্রিকেটই নেই। পাপুয়া নিউ গিনির সঙ্গে রেকর্ড ব্যবধানের জয়ের পর সংবাদ সম্মেলনে অধিনয়ক মাহমুদউল্লাহ তাদের হতাশা-ক্ষোভের কথা জানান দলকে ‘ছোট’ করায়। সেখানে তার কাঠগড়ায় ছিল সংবাদমাধ্যম, সমর্থক, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে বোর্ড সভাপতি পর্যন্ত। ক্রিকেট মাঠের পারফরম্যান্সের পাশাপাশি অধিনায়কের সংবাদ সম্মেলনের পারফরম্যান্স নিয়েও আলোচনার ঝড় বইছে দেশের ক্রিকেট আঙিনায়। তাতে আবারও দলের মনোযোগ নড়ে যাওয়ার শঙ্কাও থাকছে।
হাবিবুল অবশ্য বললেন, দলের ভেতরের আবহ এখন খুব ভালো, ‘এমনিতে এখন সবাই ভালো আছে। প্রথম ম্যাচের পর সবাই একটু আপসেট ছিল। অবশ্যই হারার জন্যই সবাই হতাশ ছিল। হারটা কেউ মেনে নিতে পারছিল না। এখন সব ভালো। কালকের পর আর তেমন কিছু হয়নি। এখন সবাই সেট। পরবর্তী পর্যায়ে কী করব, সেটা নিয়ে ভাবছে সবাই। দলের ভেতর মুড এখন এটাই। আমরা মূল পর্বে ভালো খেলতে চাই। এটা ছাড়া অন্য কিছু আর কেউ চিন্তা করছে না।’
বাংলাদেশ সময় গতকাল বিকেল ৫টায় দুবাইয়ের পথে রওনা দিয়েছে বাংলাদেশ দল। দলের সঙ্গে হাবিবুল বাশারের যাওয়া নিশ্চিত নয়। ভিসা জটিলতায় তার যাওয়া পিছিয়ে যেতে পারে। তবে অনিশ্চয়তা কাটিয়ে দল সুপার টুয়েলভের ‘ভিসা’ পেয়ে গেছে, এতেই খুশি দলের সঙ্গে থাকা এই নির্বাচক।
সুপার-টুয়েলভে বাংলাদেশের সূচি
তারিখ প্রতিপক্ষ ভেন্যু বাংলাদেশ সময়
২৪ অক্টোবর শ্রীলঙ্কা শারজাহ বিকেল ৪টা
২৭ অক্টোবর ইংল্যান্ড আবুধাবি বিকেল ৪টা
২৯ অক্টোবর উইন্ডিজ শারজাহ বিকেল ৪টা
২ নভেম্বর দ.আফ্রিকা আবুধাবি বিকেল ৪টা
৪ নভেম্বর অস্ট্রেলিয়া দুবাই বিকেল ৪টা
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।