Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৭ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

৫ ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি ক্ষতির পূর্বাভাস আইএমএফের

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৮ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০৫ এএম

মহামারী-উত্তর বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ব্যাহত হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, আগামী পাঁচ বছরে বিশ্বব্যাপী অর্থনীতিতে ৫ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কভিড-১৯ টিকা প্রদানের হারে বৈষম্যের ফলে এ আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে। খবর আনাদোলু এজেন্সি ও দ্য ন্যাশনাল নিউজ ডটকম। আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ক্রিস্টালিনা জর্জিভা বলেন, আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে অপারগ। পরিস্থিতি এমন যে আমরা একটি পাথুরে পথ ধরে এগিয়ে চলছি। আগামী সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংকের সাথে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া বার্ষিক বৈঠকের প্রারম্ভে মঙ্গলবার ইতালির বোকোনি বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এমনটা বলেন তিনি। আইএমএফ এমডি বলেন, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কার্যক্রমের ভারসাম্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে ঝুঁকি ও প্রতিবন্ধকতা আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ পরিস্থিতি আমাদের চলার পথকে কঠিন করে তুলছে। এর আগে জুলাইয়ে আইএমএফের পূর্বাভাস অনুযায়ী চলতি বছরে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হতে পারে বলে জানা যায়। কিন্তু বিভিন্ন দেশে কভিড-১৯ টিকা প্রদানের মাত্রা যথাযথ পরিচালিত না হওয়ায় অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কার্যক্রম অসম গতিতে চলছে। এছাড়া ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি ও উচ্চ ঋণের হার আইএমএফকে তাদের পূর্বাভাস পরিবর্তনের ক্ষেত্রে প্রভাবিত করছে। এ পরিস্থিতিতে চলতি বছর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার মাঝারি মাত্রায় হ্রাস পেতে পারে বলে জানান ক্রিস্টালিনা জর্জিভা। বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা অনুযায়ী ২০২২ সাল নাগাদ যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ইউরোপের মতো উন্নত অর্থনীতির দেশ ও অঞ্চলগুলোর অর্থনৈতিক কার্যক্রম প্রাক-মহামারী পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে। তবে অধিকাংশ উন্নয়নশীল ও উদীয়মান অর্থনীতির দেশ ও অঞ্চলের ক্ষেত্রে এ পুনরুদ্ধার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আরো বেশ কয়েক বছর সময় অতিরিক্ত ব্যয় করতে হবে। এমন ধারণায় সমর্থন পোষণ করেছেন আইএমএফ এমডিও। জর্জিভা বলেন, বিশ্বের অনেক দেশেই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মাত্রা বেশ খারাপভাবে পরিচালিত হচ্ছে। কভিড ভ্যাকসিন প্রয়োগে নিম্নহার ও নীতিনির্ধারণী সহায়তা কার্যক্রমে নানা সীমাবদ্ধতা এর পেছনে অন্যতম অনুঘটন হিসেবে ভ‚মিকা রাখছে। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে এ পরিস্থিতি বেশি দেখা যাচ্ছে। অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে এ ধরনের বিচ্যুতি আরো স্থায়ীরূপ ধারণ করছে বলেও মন্তব্য করেন আইএমএফ এমডি। তিনি বলেন, অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কার্যক্রমে মন্থরগতির ফলে মহামারীজনিত ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা আরো কঠিন হয়ে উঠবে। ফলে অর্থনীতিতে দীর্ঘ সময়ের জন্য নেতিবাচক পরিস্থিতি বিরাজ করবে, যা পুনরুদ্ধারকে আরো প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন করতে ভ‚মিকা রাখবে। এ সময়ে চাকরিচ্যুতির মতো ঘটনা তরুণদের ক্ষতিগ্রস্ত করার পাশাপাশি নারী ও অপেশাদার কর্মীদের জন্য সবচেয়ে বড় আর্থিক আঘাত হিসেবে দেখা দেবে। অন্যদের তুলনায় বেশি কভিড সংক্রমণের শিকার কিছু দেশে মুদ্রাস্ফীতি শিরোনাম বেশ দ্রæতগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের এক তথ্যে এমনটা উঠে আসে বলে জানানো হয়। আএমএফ জানায়, ২০২২ সাল নাগাদ অধিকাংশ দেশেই দামের চাপ কমে আসবে। তবে উদীয়মান ও উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশগুলোতে এ চাপ আরো কয়েক বছর ধরে বজায় থাকতে পারে। মুদ্রাস্ফীতির ফলে সবচেয়ে বড় চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বিশ্বব্যাপী খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি, যা গত বছরে ৩০ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান ক্রিস্টালিনা জর্জিভা। তিনি বলেন, পাশাপাশি জ্বালানির দাম বৃদ্ধিও নানা আশঙ্কা তৈরি করছে। এ পরিস্থিতি নিম্নআয়ের পরিবারগুলোকে মারাত্মক চাপের মুখে ফেলবে। সাধারণত মুদ্রাস্ফীতির সম্ভাবনা অনেকটাই অনিশ্চিত থাকে। মুদ্রাস্ফীতির প্রবৃদ্ধিতে স্থায়িত্ব সুদহারের দ্রæত বৃদ্ধিতে আশা তৈরি করে, যা অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে আরো কঠিন করে তোলে। এটি উদীয়মান ও উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশগুলোতে উচ্চ ঋণের মাত্রাসহ বিশেষ প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করবে। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় ধনী দেশগুলোর প্রতি উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশগুলোতে কভিড টিকা সরবরাহ মাত্রা আরো বৃদ্ধি করার পরামর্শ দিয়েছেন আইএমএফ ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি বলেন, ধনী দেশগুলোর উচিত প্রতিশ্রুত পরিমাণ কভিড টিকা অনুদানগুলো তাৎক্ষণিকভাবে সরবরাহ করা। আমাদের ভ্যাকসিন উৎপাদন ও সরবরাহের সক্ষমতা আরো বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। চিকিৎসাসংক্রান্ত কাঁচামাল ও পণ্যের ক্ষেত্রে ব্যবসায়িক সীমাবদ্ধতা প্রত্যাহার করা আবশ্যিক। পাশাপাশি কভিড পরীক্ষা, শনাক্ত ও থেরাপিউটিকসের জন্য আমাদের অবশ্যই ২ হাজার কোটি ডলার সমপরিমাণ ঘাটতি পূরণ করা উচিত। আনাদোলু এজেন্সি, দ্য ন্যাশনাল নিউজ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আইএমএফ

১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ