Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

লিবিয়ায় আটক চার হাজার অভিবাসী ভূমধ্যসাগরে মৃত্যু ২০ হাজার : ইইউ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৪ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০৯ এএম

ভূমধ্যসাগরে ২০১৪ সালের পর থেকে ২০ হাজারেরও বেশি অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে। ইউরোপীয় কমিশনের এক রিপোর্টে এ তথ্য জানানো হয়। রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ২০২১ সালের প্রথম থেকে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৩৬৯ অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে ভূমধ্যসাগরের বিভিন্ন রুটে। একই বিষয়ে অভিবাসন বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা আইওএম স¤প্রতি আরেকটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল। এতে বলা হয়েছিল, এ বছরের প্রথম ৬ মাসে ভ‚মধ্যসাগরে প্রাণ হারিয়েছেন ১ হাজার ১৪৬ অভিবাসী। এই সংখ্যা গত বছরের একই সময়ের দুইগুণ। মে মাসে অভিবাসীদের মৃত্যু বৃদ্ধির কারণ অনুসন্ধান করে বৃটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান। এক রিপোর্টে গণমাধ্যমটি জানায়, কোভিড মহামারির মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত রাষ্ট্রগুলোর অভিবাসীদের সমুদ্রে ঠেলে দেয়ার প্রবণতা বেড়েছে। অপরদিকে, অভিবাসী বিরোধী অভিযানে লিবিয়ায় আটক করা হয়েছে কমপক্ষে ৪ হাজার মানুষকে। গারগারেশ শহরে চালানো এই অভিযানে আটক ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন কয়েক শত নারী ও শিশু। তবে এর মধ্যে কোনো বাংলাদেশি আছেন কিনা তা জানা যায়নি। কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা। এতে আরো বলা হয়েছে, গারগারেশ শহরে ওই অভিযান চালানো হয়েছে শুক্রবার। কর্তৃপক্ষ বলেছে, অবৈধ অভিবাসী এবং মাদক পাচারকারীদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তামূলক অভিযান চালানো হয়। এর মধ্যে কোনো পাচারকারী বা মাদক পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে কিনা তা উল্লেখ করেনি লিবিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। শুক্রবার দিনের শুরুতে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল তারা অবৈধ ৫০০ অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করেছে। কিন্তু শনিবারের রিপোর্টে বলা হয় এ সংখ্যা ৪ হাজারে পৌঁছে গেছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল-জাজিরা। গারগারেশ হলো রাজধানী ত্রিপোলি থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার পশ্চিমের একটি শহর। কয়েক বছরে সেখানে অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযান চালানো হয়েছে। তবে সর্বশেষ চালানো এই অভিযানকে সবচেয়ে তীব্র বলে বর্ণনা করেছেন অধিকারকর্মীরা। শুক্রবার নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিলের লিবিয়া বিষয়ক পরিচালক ড্যাক্স রোক বলেছেন, আমরা শুনতে পেয়েছি নারী ও শিশু সহ কমপক্ষে ৫০০ অভিবাসীকে আটক করা হয়েছে খেয়ালখুশি মতো। তারা নির্যাতিত ও অশোভন আচরণের ঝুঁকিতে আছেন। লিবিয়ায় অভিবাসী এবং শরণার্থী- যাদের আইনগতভাবে দেশটিতে থাকার বৈধতা নেই, তারা খেয়ালখুশি মতো গ্রেপ্তারের ঝুঁকিতে আছেন। বন্দিশিবিরগুলোতে নির্যাতন, যৌন সহিংসতা এবং চাঁদাবাজি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যেসব ছবি পোস্ট করেছে তাতে দেখা যায়, যানবাহনের ভিতরে ডজন ডজন অভিবাসী বসে আছেন। তাদের হাতে হাতকড়া পরানো। এ অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এসব বন্দিকে ত্রিপোলিতে ‘কালেকশন অ্যান্ড রিটার্ন সেন্টারে’ নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন এর প্রধান পুলিশ কর্নেল নুরী আল গ্রেটলি। পরে তিনি আরো জানিয়েছেন, আটক অভিবাসীদেরকে রাজধানী ত্রিপোলি এবং আশপাশের শহরগুলোতে ভাগ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তারা বলেছেন, এসব অভিবাসীকে যতটা দ্রæত সম্ভব তাদের দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয়া হবে। তারা বৈধ ডকুমেন্ট ছাড়াই বছরের পর বছর বসবাস করছিলেন লিবিয়ায়। উল্লেখ্য, দেশটির দীর্ঘদিনের নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে ক্ষমতাচ্যুত ও হত্যা করার পর মানব পাচারের একটি বড় ট্রানজিট রুট হয়ে ওঠে লিবিয়া। আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধ ও দারিদ্র্য কবলিত দেশগুলোর জনগণের কাছে এই ট্রানজিট রুটটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। তারা ইউরোপে উন্নত জীবনের লক্ষ্যে ঝুঁকি নিয়ে উত্তাল সমুদ্র পাড়ি দেয়া শুরু করেন। তেলসমৃদ্ধ লিবিয়ায় বিশৃংখল অবস্থার মধ্যে সুবিধা নিতে থাকে মানবপাচারকারীরা। তারা অর্থের বিনিময়ে বহু মানুষকে বিদেশে পাচার করেছে এবং করছে। এক্ষেত্রে তাদের সঙ্গে যুক্ত ৬টি দেশের সীমান্তকে ব্যবহার করেছে। আল-জাজিরা, রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইইউ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ