মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
পেন্টাগন অবশেষে স্বীকার করেছে যে, গত মাসে কাবুলে তাদের বিমান হামলায় ৭ শিশুসহ ১০ আফগান নাগরিক নিহত হয়েছে। পেন্টাগন একটি নিবন্ধে কদর্যভাবে স্বীকার করে যে, আফগানিস্তানে ২৯ আগস্ট ড্রোন হামলা একটি ‘মর্মান্তিক ভুল’ ছিল যা ১০ জন বেসামরিক লোককে হত্যা করেছে। ড্রোন দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অমানবিক বেসামরিক-হত্যা কর্মসূচি সম্পর্কে গোপন সরকারি তথ্য ফাঁস করার অপরাধে ড্যানিয়েল হেলকে প্রায় ৪ বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার ১ মাস পর এ তথ্য বেরিয়ে আসে।
জেনারেল ম্যাককেঞ্জি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘যেহেতু আমরা আসলে আমাদের তদন্তে কাজ করেছি, আমরা সব প্রাপ্ত তথ্য ব্যবহার করেছি।’ পেন্টগনের এ লোক দেখানো তদন্তে নিউইয়র্ক টাইমসের কয়েকজন অনুসন্ধানী প্রতিবেদকের কাজ অন্তর্ভুক্ত ছিল। কারণ তারাই প্রথম প্রকাশ করে যে, এই হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের তথাকথিত আইএসআইএস-কে ছিল প্রকৃতপক্ষে জেমারি আহমদী নামক একজন নিরীহ ত্রাণকর্মী। পেন্টাগন শুধুমাত্র এ একটি বিশেষ ক্ষেত্রে বেসামরিক নাগরিকদের অন্যায়ভাবে হত্যার কথা স্বীকার করেছে কারণ গণমাধ্যম এই একটি বিশেষ বিমান হামলায় প্রকৃত অনুসন্ধানী তদন্ত করেছে।
এনওয়াই টাইমসের প্রতিবেদন বলছে যে, গত বিশ বছরে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের উছিলায় কমপক্ষে ৫৮ লাখ থেকে ৬০ লাখ মানুষের মৃত্যু ঘটেছে। কোড পিংক-এর প্রতিবেদন বলছে যে, যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররা গত ২০ বছর ধরে তথাকথিত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামে প্রতিদিন গড়ে ৪৬টি বোমা হামলা চালিয়েছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের পরিচালিত বোমা হামলার বিষয়ে প্রতিদিন গড়ে ৪৬টি সংবাদ প্রতিবেদন কি প্রকাশিত হয়েছে? মূলধারার সংবাদে প্রতিদিন অন্তত একটি মার্কিন বোমা হামলার কথা ঠাঁই পেয়েছে? খুব সম্ভবত না। তাই এ অভিযোগ শুধু পেন্টাগনের সামরিক হামলার প্রোটোকলের বিরুদ্ধেই অভিযোগ নয়, এটি গণমাধ্যমগুলোর বিরুদ্ধেও একটি অভিযোগ। মার্কিন জোট কয়েক দশক ধরে দক্ষিণমেরুর দরিদ্র মানুষের ওপর আকাশ থেকে বিস্ফোরক বর্ষণ করে আসছে এবং মূলধারার সংবাদগুলো প্রায় কোনও ক্ষেত্রেই সেই খবর প্রকাশ করে না।
তবে, গত ২৯ আগস্টের বিমান হামলা এবং এর আগে আমেরিকার ৯/১১ যুদ্ধের পর হাজার হাজার হমলার মধ্যে পার্থক্য এটাই যে, এটিকে রাজনৈতিক রূপ দেয়া হয়েছে। কারণ সেনা প্রত্যাহার ও যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ সমাপ্তি বিরোধিতা করে বাইডেনকে কটাক্ষ এবং কাবুল বিমানবন্দরের হামলার পর সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর নজরদারি জন্য বাইডেন প্রশাসন নির্দেশ দিয়েছিল (বেশিরভাগ হতাহতের ঘটনা সম্ভবত মার্কিন এবং/অথবা মিত্র বাহিনীর গোলাগুলির কারণেই হয়েছিল), যাতে হামলাটিকে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কঠোর দেখায়।
সামরিক হামলায় নিরীহ মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়াকে পেন্টাগন পাত্তা দেয় না। সামরিক বাহিনী থেকে অবসর নেওয়ার পর প্রতিরক্ষা শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য এর দালাল, পরামর্শদাতা, বোর্ড সদস্য এবং নির্বাহীরা তাদের ভবিষ্যত সুরক্ষিত করতে এটা সব সময়ই করে থাকে এবং তারা আরও বহু কিছুই করবে। এবং গণমাধ্যমগুলোও এসব বিষয় আমলে নেয় না। কিন্তু এবার তারা কেবলমাত্র অত্যন্ত রাজনৈতিকভাবে পরিচালিত একটি বিশেষভাবে বিমান হামলাকে গুরুত্ব দিয়েছে। কারণ গণমাধ্যমগুলো আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের সময় কোনও সামরিক অংশগ্রহনের তীব্র বিরোধিতা করেছিল।
পেন্টাগন ভুল স্বীকার করেছে, কিন্তু ত্রুটিপূর্ণ প্রমাণের ভিত্তিতে একজন ত্রাণ কর্মী ও ৭ শিশুসহ ১০ জনকে হত্যার দায় স্বীকার করেনি। গত বিশ বছরে যদি সংবাদ মাধ্যম তাদের কাজ করত এবং তাদের বিপুল সম্পদ ব্যবহার করে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা করতো, তাহলে এমন মার্কিন জোটের কদর্য কুকীর্তির এমন বহু খবর বিশে^র দরবারে পৌছে যেত এবং যুদ্ধবাজদের কাজ করা কঠিন হয়ে যেতো।
গণমাধ্যমের মাফিয়া, যারা হলুদ সাংবাদিকতা করে এবং অবজ্ঞা ভরে গণহারে সামরিক হত্যাগুলো ঢেকে রাখতে কাজ করে, তারা মানুষ হত্যার হীনযজ্ঞে জড়িত। তবে, সংবাদ মাধ্যগুলো দেখিয়েছে যে, তারা মার্কিন সামরিক হামলার বৈধতা সম্পর্কে এসব তদন্ত করতে পারে এবং তারা দেখিয়েছে যে, তারা গত দুই দশক ধরে কিছু না করে নির্বিকার থাকার পথ বেছে নিয়েছে। সূত্র : স্কুপ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।