মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
সউদী আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল সউদ তার প্রথম ভারত সফরে বলেছেন, আফগানিস্তানে স্থিতিশীল অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসন ব্যবস্থা তালেবানদের দায়িত্ব। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে কৃত ওয়াদা তাদের পূর্ণ করতে হবে এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে তাদের দেশে শিকড় গাড়তে দেয়া হবে না।
গত রোববার ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সাথে সাক্ষাতের পর প্রিন্স ফয়সাল বলেন, ‘তালেবানরা এখন কাবুলে দায়িত্বে আছে। আফগান জনগণের প্রতি স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, আফগানিস্তানের জনগণের জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা প্রদান, প্রয়োজনীয় অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং অন্যান্য কাঠামো প্রদান করতে পারে এমন সরকার প্রদান করার জন্য তাদের একটি দায়িত্ব রয়েছে। এবং একমাত্র উপায় যা আমি অর্জন করতে পারি, তা হল, অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে এবং তাদের সমাজের সকল সেক্টরকে অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে। ‘এর বাইরে, তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে নিরাপত্তার ব্যাপারে এবং কোন আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে শিকড় ছাড়তে না দেওয়ার ব্যাপারে। এবং অবশ্যই, আমাদের তাদের সেই প্রতিশ্রুতির প্রতি দায়বদ্ধ রাখার উপায় খুঁজে বের করতে হবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ নিয়ে একটি সমন্বিত পন্থা গ্রহণ করবে’।
এটি আফগানিস্তানে তালিবানদের দখল নিয়ে সউদী অবস্থানের প্রথম স্পষ্ট বক্তব্য, যা ১৯৯০-এর দশকে তালেবানদের প্রথম শাসনের সময় যেখানে ছিল তার থেকে একেবারে ভিন্ন অবস্থান। অবস্থানে সউদী আরবের বোধগম্য পরিবর্তন আসে যখন তালিবান-২ এই অঞ্চলে সউদী আরবের ভূ -রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী কাতার, তুরস্ক এবং ইরানের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক দেখিয়েছে। এটা স্পষ্ট ছিল যে, তালেবান তাদের উদ্বোধনে তুরস্ক, কাতার, ইরান, পাকিস্তান, রাশিয়া এবং চীনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল, কিন্তু ১৯৯০-এর দশকে তাদের প্রধান সমর্থক সউদী আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতকে বাদ দেয়।
প্রিন্স ফয়সালের সঙ্গে সাক্ষাতের পর জয়শঙ্কর টুইট করেছেন, ‘সউদী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল বিন ফারহানের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ এবং ফলপ্রসূ বৈঠক। আমাদের কৌশলগত অংশীদারিত্বের রাজনৈতিক, নিরাপত্তা এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক স্তম্ভগুলোতে আমাদের সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেছেন। আফগানিস্তান, উপসাগর এবং ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিষয়ে খুব দরকারী মত বিনিময়।
বৈঠকের একটি এমইএ রিডআউটে বলা হয়েছে, দুই নেতা ‘আফগানিস্তানের উন্নয়ন এবং অন্যান্য আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে মতবিনিময় করেছেন। তারা জাতিসংঘ, জি-২০ এবং জিসিসির মতো বহুপাক্ষিক ফোরামে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা নিয়েও আলোচনা করেছে।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে প্রিন্স ফয়সাল বলেন, সউদী আরব এবং ভারতের মধ্যে সম্পর্ক আমাদের জন্য সমালোচনামূলকভাবে গুরুত্বপূর্ণ, একটি প্রধান অগ্রাধিকার’ তার এ সফরের উদ্দেশ্য ছিল ‘নিশ্চিত করা ... সম্পর্কের গতি অব্যাহত রাখা’। তিনি বলেন, সউদী আরব এবং ভারত ব্যাপকভাবে ‘দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে, কিন্তু এমনকি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়ের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিতেও’ ঐক্যবদ্ধ।
ইরান এবং পরমাণু আলোচনার সম্ভাব্য পুনঃপ্রতিষ্ঠা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে, প্রিন্স ফয়সাল বলেন, ‘আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ যে আমরা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে কেবল বেসামরিক কাজে ব্যবহার করতে সক্ষম হওয়ার পথ খুঁজে পাই। সেক্ষেত্রে, আমরা মনে করি যে, জেসিপিওএ’র কাছে ফিরে যাওয়া যথেষ্ট নয়। আমাদের একটি শক্তিশালী, দীর্ঘ চুক্তিতে প্রত্যাবর্তন প্রয়োজন এবং আমরা আশা করি যে, ইরানিরা দেখবে যে একটি স্থিতিশীল অঞ্চলের দিকে পথ এবং তার প্রতিবেশীদের সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্কের মাধ্যমে আমাদের আশ্বস্ত করা হচ্ছে যে, পারমাণবিক কর্মসূচি কোনো হুমকি নয়।
এদিকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সউদী পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল সউদ মন্তব্য করেছেন যে, আফগানিস্তানে তালেবানের উত্থান উদ্বেগজনক। গতকাল সোমবার তার ওই সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছে। প্রিন্স ফয়সাল বলেন, আফগানিস্তানে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আল-কায়েদা, আইএস ও তালেবানের প্রত্যাবর্তন ও পুনরুত্থান একটি বাস্তবিক উদ্বেগের বিষয়। তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ একটি উদ্বেগের বিষয়। তালেবান এখন অঙ্গীকার করছে, সন্ত্রাসবাদের জন্য আফগান ভূখণ্ড ব্যবহৃত হবে না।’
আফগানিস্তানে তালেবানের প্রথম মেয়াদে দলটির সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়া তিন দেশের মধ্যে একটি ছিল সউদী আরব। তবে এবার তাদের সঙ্গে রিয়াদের কোনও যোগাযোগ নেই বলে জানান প্রিন্স ফয়সাল। দলটির নেতৃত্বাধীন নতুন সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার আগে রিয়াদ আরও অপেক্ষো করবে বলে জানান তিনি।
সউদী পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আফগানিস্তানে অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবস্থা দেখতে চাই। সেখানে শান্তি ও স্থিতিশীলতার নিশ্চয়তা চাই। ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠকে এটি নিয়ে আমাদের আলোচনা হয়েছে এবং আমরা একমত হয়েছি।’
তিন দিনের সফরে শনিবার দিল্লি পৌঁছান সউদী পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আফগানিস্তান ইস্যুতে আলোচনার জন্যই তার এ সফর। এর অংশ হিসেবে গত রোববার ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন তিনি।
ইন্ডিয়া টুডের সঙ্গে আলাপকালে ভারতে বিনিয়োগের ব্যাপারে রিয়াদের আগ্রহের কথাও জানান সউদী মন্ত্রী। কাশ্মির প্রসঙ্গে প্রিন্স ফয়সাল বলেন, এটি ভারত ও পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সমস্যা। তাদের পরস্পরের সঙ্গে আলাপ আলোচনার ভিত্তিতে বিরোধ নিষ্পত্তি করা উচিত। সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া ও ইন্ডিয়া টুডে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।