Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ন্যাটোর আদলে নিজস্ব সেনাবাহিনী গড়ে তুলতে চায় ইইউ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৫:১২ পিএম

অতীতের সংকট থেকে শিক্ষা নিয়ে অন্যের উপর নির্ভরতা কমিয়ে আরো আত্মনির্ভরশীল হবার পথে অগ্রসর হতে চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এজন্য তারা ন্যাটোর আদলে নিজস্ব সেনাবাহিনী গড়ে তুলতে চাইছে। কমিশনের প্রেসিডেন্টের বাৎসরিক ভাষণে সেই পরিকল্পনার রূপরেখা উঠে এসেছে।

গত প্রায় দুই বছর ধরে একাধিক সংকট থেকে শিক্ষা নিতে চাইছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। করোনা সঙ্কট থেকে শুরু করে আফগানিস্তানে সেনা অভিযানের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রজোট হিসেবে অন্যের উপর নির্ভরতা যে মোক্ষম সময়ে কতটা অসহায় করে তুলতে পারে, ব্রাসেলস হাড়ে হাড়ে তা টের পেয়েছে। তাই সে সব দুর্বলতা কাটিয়ে আত্মনির্ভর হবার সংকল্প নিয়ে এগিয়ে যেতে চায় ইইউ। ব্রিটেনের প্রস্থানের পর এমন সব মৌলিক সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে আগের মতো বাধার আশঙ্কাও কমে গেছে।

ইইউ কমিশন প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন তার দ্বিতীয় ‘স্টেট অফ দ্য ইউনিয়ন’ ভাষণে এমন সংকল্পের রূপরেখা তুলে ধরলেন।

সম্প্রতি আফগানিস্তানের সেনাবাহিনীর দ্রুত পতন ও তড়িঘড়ি করে মার্কিন সেনাবাহিনীর পাততাড়ি গোটানোর সিদ্ধান্তের ফলে ইউরোপের একাধিক দেশের সৈন্যরা অসহায় হয়ে পড়েছিল। তালেবানের কাবুল দখলের পর নিজস্ব নাগরিক ও আফগান কর্মীদের উদ্ধার করতে গিয়ে পদে পদে বাধার মুখে পড়েছিল ইউরোপীয়রা। সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য হওয়া সত্ত্বেও এ ক্ষেত্রে অ্যামেরিকার ‘একলা চলো রে' নীতি তাদের অসহায় করে তুলেছিল। সেই বিপর্যয় থেকে শিক্ষা নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন পারস্পরিক সমন্বয়ের মাধ্যমে নিজস্ব প্রতিরক্ষা ক্ষমতা বাড়ানোর পথে এগোতে চায়।

২০২২ সালের প্রথমার্ধে ফ্রান্সের সভাপতিত্বে ইউরোপীয় প্রতিরক্ষা কাঠামোর লক্ষ্যে শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে বলে ফন ডেয়ার লাইয়েন ঘোষণা করেন। ইউরোপে উৎপাদিত প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের উপর বিক্রয় কর তুলে নেবার প্রস্তাব নিয়েও সেখানে আলোচনা হবে। করোনা সঙ্কটের সময় মাস্ক থেকে শুরু করে টিকার ব্যবস্থা করতে হিমসিম খেতে হয়েছে ইউরোপের দেশগুলোকে। প্রাথমিক বিলম্ব ও অব্যবস্থা সত্ত্বেও রাষ্ট্রজোট হিসেবে নাগরিকদের জন্য করোনা টিকার ব্যবস্থা করে শেষ পর্যন্ত বিপুল সুবিধা পেয়েছে ইইউ। বাকি শিল্পোন্নত দেশের তুলনায় ইউরোপ আজ টিকা কর্মসূচির ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে। সম্মিলিত উদ্যোগের কারণে অর্থনীতি আবার মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে।

ইউরোপে মাস্ক, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও টিকা উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানো সত্ত্বেও শিল্পজগতের ঘুরে দাঁড়ানোর পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে চিপের অভাব। ইইউ স্তরে ‘সেমিকন্ডাক্টর আইন' অনুমোদন করে দ্রুত নির্ভরতা কমানোর প্রস্তাব দিয়েছেন ফন ডেয়ার লাইয়েন। শিল্প, প্রতিরক্ষাসহ একাধিক ক্ষেত্রে এমন ডিজিটাল আত্মনির্ভরতার প্রয়োজনীয়তা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন। উল্লেখ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও আইন করে সেই পথে এগোনোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বিশ্বব্যাপী অবকাঠামো নির্মাণ ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে চীনের আধিপত্যের মোকাবিলা করতেও ইইউ কার্যকর ভূমিকা নিতে চাইছে। কমিশনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ফন ডেয়ার লাইয়েন তার ভাষণে বলেন, সড়ক নির্মাণের অর্থায়নের ক্ষেত্রে ইইউ যথেষ্ট সক্রিয় থাকলেও চীনের তামার খনি ও চীন নিয়ন্ত্রিত বন্দরের মধ্যে যোগাযোগ নিশ্চিত করতে নিখুঁত সড়ক তৈরির কোনো অর্থ হয় না। তাই আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে ‘গ্লোবাল গেটওয়ে’ কৌশলগত অবকাঠামো গড়ে তুলতে চায় ইইউ। সূত্র: রয়টার্স, এএফপি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইইউ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ