মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
আগস্টের শেষের দিকে তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর ন্যাটো বাহিনীকে সাহায্যকারী হাজার হাজার আফগান কর্মকর্তা ও সামরিক সদস্য শরণার্থী হিসেবে কাবুল থেকে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করেন। বেশ কয়েকজন আফগান দ্য গার্ডিয়ানকে বলেছেন যে, তাদেরকে ১০ দিনেরও দীর্ঘ সময় ধরে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হচ্ছে এবং বন্দীদের মতো আচরণ করা হচ্ছে। মানবাধিকার এবং সুস্বাস্থ্যের বিষয়ে উদ্বিগ্ন কেউ কেউ বলেছিলেন যে, সরকারের পুনর্বাসন প্রকল্পের অংশ হিসাবে তাদের যে আবাসনের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল, সে সম্পর্কে তারা কোনও খবর পাচ্ছেন না।
আফগানিস্তানে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের প্রাক্তন পরিচালক হাসিব নূর আলম লন্ডনের ওয়াটারলুর কাছে পার্ক প্লাজা হোটেলে ২০ দিন ধরে আটকে আছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা এখানে বন্দি, কিন্তু এমনকি বন্দীদেরও দিনে এক বা দুই ঘণ্টা বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়। ২৪ ঘন্টার মধ্যে, আমরা মাত্র ১৫ মিনিটের জন্য বাইরে যেতে পারি। এই হোটেলের ভিতরেও প্রচুর শিশু রয়েছে। মানুষ হতাশ হয়ে কাঁদছে।’ আফগানিস্তান থেকে আগত আরেক ব্যক্তি জানিয়েছেন যে, তিনি ২০ দিন ধরে হোটেলে আটকে আছেন। তিনি বলেন, অনেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। তিনি বলেন, ‘দুশ্চিন্তার বিষয় হলো, এরপর কি ঘটছে তা জবাব দেয়ার কেউ নেই। আমি স্বরাষ্ট্র কার্যালয়ের কারো সাথে যোগাযোগ করার জন্য একটি ফোন নম্বর চেয়েছি কিন্তু তারা আমাকে তা দেইনি। আমরা তাজা বাতাসের জন্য জানালাও খুলতে পারি না। অনেক শিশু আছে, যারা ইংরেজিতে কথা বলতে পারে না, তারা কোন অভিযোগ করতে পারে না। তাদের কথা শোনার কেউ নেই।’
ডক্টর অ্যান্ড্রু কিড ওবিই, যিনি তিন বছর ধরে আফগানিস্তানে ইউকে এইড প্রোগ্রাম পরিচালনা করেছেন এবং ৬০ জন প্রাক্তন সিভিল সার্ভেন্টের মধ্যে একজন, যারা দেশে শরণার্থীদের সাহায্য করার জন্য সরকারকে তদবির করার কাজ করেছেন, বলেছেন যে, এটি তাদের মানবাধিকার নিয়ে প্রশ্ন তোলে এবং তাদের মানসিক সুস্থতাকে প্রভাবিত করে। তিনি বলেন, ‘এটা মনে হয় না সেই উষ্ণ অভ্যর্থনা যা স্বরাষ্ট্রসচিব প্রীতি প্যাটেল তার অপারেশনের ওয়ার্ম ওয়েলকাম-এর প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে দিয়েছিলেন।’ গত সপ্তাহে, কোয়ারেন্টাইনের জন্য নিযুক্ত হোটেলগুলিতে অবস্থানরত আফগানদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছিল যে, তাদের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা না করা পর্যন্ত বিনামূল্যে হোটেলগুলিতে থাকতে দেওয়া হবে। তাদের কাছে পাঠানো একটি চিঠি মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘যদি আপনারা আমাদের কোয়ারান্টাইন সুবিধাগুলিতে থাকার সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে আমাকে অবশ্যই আপনাদের বলতে হবে কোভিড সুরক্ষা ব্যবস্থা চালু রাখাতে। এটা সংক্রমণের বিস্তার এড়াতে আপনার নিরাপত্তার জন্যই।’ উল্লেখ্য, সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘোষণা করেছে যে, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ আফগানিস্তান থেকে আগতদের পুনর্বাসনে সহায়তা করার জন্য ২০ মিলিয়ন পাউন্ড পাবে। যদিও তারা স্বীকার করেছে যে, মাত্র ১ শ’ টি কাউন্সিল তাদের বসবাসের জন্য প্রস্তাব দিয়েছে। তবে, মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘আমরা সারা দেশের প্রতিটি কাউন্সিলকে এই জাতীয় প্রচেষ্টায় অবদান রাখার আহ্বান জানাব।’
এদিকে, যুক্তরাজ্য সরকার শরণার্থীদের পুনর্বাসনের জন্য তাদের পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে অবিলম্বে কাজ করার অধিকার। আফগান শরণার্থীদের পুনর্বাসনের জন্য ব্রিটিশ স্কিমের আরো বিস্তারিত বিবরণ সরকার প্রদান করেছে। যুক্তরাজ্য বলেছে যে, তারা জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা - জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশন (ইউএনএইচসিআর) এর সাথে কাজ করবে - যারা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ শরণার্থীদের চিহ্নিত করবে এবং তাদের সুরক্ষা এবং মানবিক প্রয়োজনের ভিত্তিতে তাদের পুনর্বাসনে সহায়তা করবে। আফগানদের পুনর্বাসনের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত যুক্তরাজ্য সরকারের মন্ত্রী ভিক্টোরিয়া অ্যাটকিনস সোমবার হাউস অব কমন্সকে বলেন, যারা ব্রিটিশ সামরিক বাহিনী এবং শাসন ব্যবস্থাকে সহায়তা করেছে প্রশাসন তাদের সাহায্য করবে।
এটি আফগান রিলোকেশন্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্স পুলিশ (এআরএপি) এবং আফগান সিটিজেনস রিসেটেলমেন্ট স্কিম (এসিআরএস) এই দুটি স্কিমের মাধ্যমে করা হবে। ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র সচিব প্রীতি প্যাটেল এবং কমিউনিটি সেক্রেটারি রবার্ট জেনরিক আফগান শরণার্থীদের সাহায্য করার জন্য অন্যান্য কাউন্সিলকেও এগিয়ে আসতে বলেছেন। সূত্র : স্কাই নিউজ, দ্য গার্ডিয়ান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।