মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
আফগানিস্তানে তালেবানদের ক্ষমতাদখল এবং সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী প্রতিরোধের আহ্বান জানিয়েছেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির। তিনি বলেছেন, আফগানিস্তানে বৈধ সরকারকে অবৈধভাবে অপসারণ করে জঙ্গি মৌলবাদী সন্ত্রাসী তালেবানরা যেভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছে তার বিরুদ্ধে বিশ্বের সকল বিবেকবান মানুষ সোচ্চার। আমরা অতীতে আফগানিস্তানে একই পন্থায় তালেবানদের ক্ষমতাদখল এবং পাঁচ বছরের নারকীয় শাসনকাল দেখেছি। যেখানে ধর্ম, বর্ণ, ভাষা, জাতিসত্তা নির্বিশেষে আফগানদের উপর সীমাহীন দুর্যোগ নেমে এসেছিল। দক্ষিণ এশিয়া সহ গোটা পৃথিবীতে পাকিস্তান, আমেরিকা ও সউদী আরবের প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতায় তালেবানরা গত তিন দশক ধরে যে ভাবে সন্ত্রাস রফতানি করেছে, তার মাশুল আজও আমাদের দিতে হচ্ছে। মুসলমান প্রধান দেশগুলোতে গত পঁচিশ বছরে সমাজ, সংস্কৃতি ও রাজনীতির মৌলবাদীকরণ ও তালেবানিকরণ আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। আফগানিস্তানে তালেবানদের সাম্প্রতিক উত্থানে এসব দেশের মৌলবাদী ধর্মব্যবসায়ীদের উল্লাসে আমরা উদ্বিগ্ন। বিশ্বের সর্বত্র মানুষের সমান অধিকার ও মর্যাদা রক্ষা করতে হলে এবং সভ্যতার বোধ ও বিশ্বশান্তি নিশ্চিত করতে হলে দেশে দেশে ধর্ম, বর্ণ ও জাতিসত্তার নামে উগ্রতা, সন্ত্রাস ও হত্যার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ নাগরিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। গতকাল এক অনলাইন আন্তর্জাতিক সম্মেলন তিনি এ আহবান জানান। ‘আফগানিস্তানে তালেবানদের ক্ষমতাদখল: সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী প্রতিরোধের আহ্বান’ শীর্ষক এই সম্মেলনের আয়োজন করে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি।
সম্মেলন পরবর্তী এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় সম্মেলনে প্রস্তাব উত্থাপনকালে আফগান-অস্ট্রেলিয়ান মানবাধিকার নেত্রী কোবরা মোরাদি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের বিশেষত শান্তি এবং মানবাধিকার কর্মীদের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত আফগানিস্তানের সাধারণ মানুষকে রক্ষা করা। লিঙ্গ, বয়স, জাতি এবং ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে প্রত্যেক আফগানদের অধিকার এবং সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আমাদের সবকিছুই করতে হবে। তালেবানের একচেটিয়া শাসন ব্যবস্থা মানবাধিকার এবং আইনের শাসনকে সম্মান করে না। এমতাবস্থায় আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের উচিত তাদেরকে ধিক্কার জানানো এবং স্বীকৃতি না দেয়া।
ভারতের ডেইলি পাইওনিয়ার-এর উপদেষ্টা সম্পাদক লেখক সাংবাদিক হিরন্ময় কার্লেকার বলেন, ‘১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালেবানের শাসনের ভয়াবহতা এখনো আফগানিস্তানের জনগণকে তাড়া করে। নারীদের স্বাধীনতা হরণ, ধর্মীয় পুলিশের মাধ্যমে প্রত্যেক পুরুষের দাড়ি-টুপি, টাখনুর উপরে কাপড় পরেছে কিনা ইত্যাদি বিষয়গুলো নিশ্চিত করা আফগানদের জন্য এখনও দুঃস্বপ্নের মতো। যদিও তালেবান বলছে এখন তারা আগের অবস্থানে নেই, তারা নারীদের স্বাধীনতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে পূর্বের সিদ্ধান্ত থেকে ফিরে এসেছে। তাদের এই কথার কোন ভিত্তি নেই এবং তাদের কোনভাবেই বিশ্বাস করা উচিত হবে না।’
সম্মেলনে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এবং জাতিসংঘের সকল সদস্য রাষ্ট্রকে আফগানিস্তানে সন্ত্রাসী চরমপন্থী জঙ্গি তালেবান (টিটিএ) গোষ্ঠীর অসাংবিধানিক ও অবৈধ রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের দ্ব্যর্থহীন নিন্দা জানানোর জন্য একটি প্রস্তাবসহ বেশ কিছু প্রস্তাব গৃহিত হয়। এ ছাড়াও বলা হয়, আফগানিস্তান বিভিন্ন ভাষা, সংস্কৃতি, ধর্মীয় বিশ্বাস, মতাদর্শ এবং ভৌগলিক বৈচিত্রসহ বহু জাতি গোষ্ঠীর একটি দেশ; যেহেতু, আফগানিস্তানের জনগণের গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচিত সাংবিধানিক সরকার এবং জাতীয় পতাকা গ্রহণের অধিকার রয়েছে। আফগানিস্তানের জনগণের রয়েছে মত প্রকাশের স্বাধীনতা, চলাফেরার স্বাধীনতা, ধর্ম বা বিশ্বাসের স্বাধীনতা এবং অন্য সকল অধিকার- আন্তর্জাতিক মানবাধিকার, জাতিসংঘের কনভেনশন ও আইন, ইউডিএইচআর এবং জাতিসংঘ সনদ দ্বারা সুরক্ষিত ও সুনিশ্চিত; যেহেতু, আফগান নারীরা দেশটির জনসংখ্যার অর্ধেক, জাতীয় জীবনের সকল ক্ষেত্রে আফগান নারীদের সমতা, ন্যায়বিচার, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অংশগ্রহণের মৌলিক মানবিক অধিকার রয়েছে। এ ছাড়াও বেশ কিছু প্রস্তাব গৃহিত হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সম্মেলনে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ইরান, মিয়ানমার, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, তুরস্ক, উজবেকিস্তান, মিশর, ঘানা, লাইবেরিয়া, ইথিওপিয়া, সিয়েরা লিওন, মেসিডোনিয়া, রাশিয়া, পোল্যান্ড, ক্রোয়েশিয়া, সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ড, বেলজিয়াম, সুইডেন, নরওয়ে, ফিনল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ব্রাজিল, জামাইকা, জাপান, আর্জেন্টিনা ও অস্ট্রেলিয়ার তিন শতাধিক শিল্পী, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, আইনপ্রণেতা, ক‚টনীতিক, রাজনীতিবিদ, মানবাধিকার কর্মী, শান্তিকর্মী ও উন্নয়নকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।