Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফরিদপুরে বাড়ছে বন্যার বিস্তার, ডুবেছে ১৫৮টি গ্রাম

ফরিদপুর জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১:৫৫ পিএম

ফরিদপুর সদর থানার শহর রক্ষার বাঁধের বিপরীত পাশে বাড়ছে বন্যার বিস্তার। প্রতিদিন ডুবছে নতুন নতুন গ্রাম, বাজার, রাস্তা এবং ইটের ভাটা।

গত ৪৮ ঘন্টায়, পূর্বের চেয়ে পদ্মা নদীতে ৯ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৬১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পদ্মার পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার, (২ সেপ্টেম্বর) গোয়ালন্দ পয়েন্টে পদ্মার পানির পরিমাণ ছিল ৮'৬৫ সেন্টিমিটার।
যাহা গত ২৪ ঘন্টা আগে ছিল ৮'৬১ সেন্টিমিটার। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গোয়ালন্দ পয়েন্টের পদ্মার পানি বৃদ্ধি পেয়ে গত ২৪ ঘন্টায়, পানির পরিমাপ হয়েছে ৯'২৬ সেন্টিমিটার। এই তথ্য গোয়ালন্দের পানি পরিমাপক সূত্রের।

অপরদিকে(,গত ২ সেপ্টেম্বর) ফরিদপুর কুমার নদীর স্লুইসগেট পয়েন্টে পদ্মার প্রধান শাখা নদীর পানির পরিমাণ ছিল ৫.০২ সেন্টিমিটার।

গত ২৪ ঘন্টার মধ্য, ফরিদপুর সদর থানার ডিক্রীরচর, নর্থচ্যানেল, অম্বিকাপুর,চরমাধবদিয়া, এই ৪টি ইউনিয়ের সমস্ত নিম্নাঞ্চল বন্যার পানিতে ডুবে গেছে।

এর মধ্যে নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের ৭৪ টি গ্রাম, ডিক্রীচরের ৪০টি গ্রাম, চরমাধবদিয়া ইউনিয়নের ২৪ টি গ্রাম, অম্বিকাপুর ইউনিয়েনর ২০টি গ্রাম, সব পানিতে তলিয়ে গেছে।

এতে ১৫৮ টি গ্রামের কমপক্ষে ২৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ছে।

পানির তোড়ে ভেঙ্গে গেছে চর আদমপুর ও মোহনের বাজার এলাকার একমাত্র সড়কটি।

পানিতে তলিয়ে গেছে ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ছোনের টেকের একমাত্র বাজার সড়কটিও।

অপরাদিকে, বেড়িবাঁধের বাহিরে তলিয়ে গেছে ২০ টি ইটের ভাটা। বেকার হয়ে পড়ছে ৫ হাজার ভাটা শ্রমিক। চারদিক দেখা দিচ্ছে অভাব। বাড়ছে অপরাদ প্রবনতা।

পাশা-পাশি প্রচন্ড গো-খাদ্যের চরম সংকটে পড়ছে ক্ষুদ্র খামারী ও কৃষকরা। পানিতে ভেসে গেছে কমপক্ষে ৪১ টি পুকুরের মাছ।

উল্লেখিত, ইউনিয়নগুলোর মোট ১৫৮ টি গ্রামের কমপক্ষে ৪০ হাজার বাড়ি ঘর পানিতে তলিয়ে যাওয়ায়
উক্ত এলাকার বৃদ্ব, আবাল, বনিতা, শিশু, কিশোরা দুঃখ- দুর্দাশার মধ্যে চরম মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

পদ্মা তীরবর্তী অসহায় মানুষগুলো একই ঘরের মধ্যে মাচা পেতে বসবাস করছেন সাথে গরু বাছুর হাঁস মুরগি ও পোষা কুকুর নিয়ে।

উল্লেখিত বিষয়, নর্থচ্যানেলের চেয়ারম্যান মোস্তাকুজ্জামান, চরমাধবদিয়ার চেয়ারম্যান মোঃ মির্জা আজম, নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ মেহেদি হাসান মিন্টু ইনকিলাবকে জানান, মানুষের কষ্ট দেখে আমাদেরই ভাল লাগে না। আমরাই বা কি করবো।

এ প্রতিনিধির সাথে কথায়, চরমাধবদিয়ার রাহেলা বেগম,নর্থচ্যানেলের আম্বিয়া বেগম, ডিক্রীর চড়ের করিমন নেছা,ও অম্বিকাপুরের করম আলীর সাথে তারা বলেন, কি কমু বাবা, কারে কমু। পানি ও বন্যায় কস্টের শেষ নাই।

আপনারা কি পরিমান সরকারি সাহায্য বা ত্রান পেয়েছেন প্রশ্ন করলে, তারা নিরব ভুমিকা পালন করেন।

এই প্রতিনিধির সাথে কথা হয়, ফরিদপুর সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার মোঃ মাসুদুল আলমের সাথে, তিনি ইনকিলাবকে বলেন, সরকারিভাবে সদরে ৪৪ মেঃটন চাল বরাদ্ব আসছে এর মধ্যে আমরা ৬ মেঃটন চাল বন্ট করেছি।

তিনি আরো জানান, এই পর্যন্ত চড়ের পানিবন্দী মানুষ,কোভিট১৯ ও নদীভাঙ্গন কবলিত ৩৪০ টি পরিবারের মধ্যে ১০ দিনের খাবার দেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আরোও দেওয়া হবে।

এছাড়াও গত জুলাই ও আগস্টে বন্যা এবং কোভিট১৯ এর মধ্যে অসহায় মানুষের মাঝে শুকনা খাবার বাবদ নগদ দেড় লাখ টাকা, এবং গো- খাদ্যের জন্য নগদ এক লাখ অনুদান দেওয়া হয় চরবাসীর মাঝে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বন্যা

১৫ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ