Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

টাঙ্গাইলের বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি, লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি

টাঙ্গাইল জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০৯ পিএম | আপডেট : ৫:২৮ পিএম, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২১

যমুনা, ধলেশ্বরী ও ঝিনাইসহ অনান্য শাখা নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় টাঙ্গাইল জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় বৃহস্পতিবার যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ৫৯ সেন্টিমিটার, ধলেশ্বরী নদীর পানি বিপদসীমার ৬৪ সেন্টিমিটার এবং ঝিনাই নদীর পানি বিপদসীমার ৯১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে, সকল নদীর পানি বৃদ্ধি ও বিভিন্ন স্থানে বাঁধ, কাঁচা রাস্তা, ব্রীজ ও কালভার্ট ভেঙ্গে নতুন নতুন এলাকা বন্যা কবলিত হয়ে পড়ছে। জেলার ৭টি উপজেলার নদী তীরবর্তীসহ শতাধিক গ্রাম বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। এসব এলাকায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ফলে বিশুদ্ধ খাবার পানি ও গো-খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। উপজেলা গুলো হচ্ছে- টঙ্গাইল সদর, গোপালপুর, ভূঞাপুর, নাগরপুর, কালিহাতী, বাসাইল ও মিজাপুর উপজেলা।

এদিকে পানি বৃদ্ধির সাথে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। কালিহাতী উপজেলার আলীপুর ও ভৈরব বাড়ি এবং ভূঞাপুর উপজেলার ভালকুটিয়া, স্থলকাশি ও সদর উপজেলার চরাঞ্চলে নতুন করে গত কয়েকদিনে আরো অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকিতে রয়েছে ফসলী জমি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনা।

জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, টাঙ্গাইলে বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হলে অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি বিশেষ করে আমন ধানের ক্ষতি হবার সম্ভবনা রয়েছে । ইতিমধ্যেই বন্যা কবলিত এলাকার বিস্তৃন ফসলী জমি পানিতে তলিয়ে গেছে।

সরেজমিনে গিয়ে জেলার ভুঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের ভালকুটিয়া-চিতুলিয়াপাড়া এলাকায় দেখা গেছে, যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায ওই দুইটি এলাকায় ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু বসতভিটা ভেঙে নদী গর্ভে চলে গেছে। মসজিদের একটি অংশও ভেঙে গেছে। স্থানীয় লোকজন ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া একই ইউনিয়নের ভালকুটিয়া-গোবিন্দাসী সড়কের কষ্টাপাড়া এলাকায় বন্যার পানির তীব্রস্রোতে পাকা সড়ক ভেঙে গেছে। এতে করে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, চিতুলিয়াপাড়া এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালীরা যমুনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলণ ও বিক্রি করছে। এতে বন্যার সময় সেখানে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
নদী তীরবর্তী এলাকায় ঘরবাড়ি প্লাবিত হওয়ায় অনেকেই গবাদিপশু নিয়ে উঁচু সড়কের ঢালে আশ্রয় নিয়েছেন। বসতভিটায় পানি উঠায় বন্যা দুর্গতরা বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকটের মধ্যে পড়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত সরকারি বেসরকারি কোন সহযোগীতা পাননি বলে অভিযোগ বানভাসিদের।

এবিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, ভাঙন রোধে কোথাও কোথাও অস্থায়ী ভিত্তিতে কাজ চলছে। বন্যা শেষে প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির নিরুপন করা যাবে।

জেলা প্রশাসক ড. আতাউল গনি বলেন, বন্যাকবলিতদের জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ রয়েছে। বন্যাকবলিতদের মাঝে ত্রাণ বিতরণের কাজ শুরু হয়েছে এবং তা চলমান থাকবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বন্যা

১৫ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ