মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
তালেবান বলছে, আজকালের মধ্যে তারা নতুন সরকার ঘোষণা করতে পারবে। কাতারে তালেবানের রাজনৈতিক দপ্তরের উপ-প্রধান শের আব্বাস স্তানিকজাই বিবিসি পশতু বিভাগকে বলেছেন, তাদের নতুন সরকারে বিভিন্ন পক্ষকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে এবং সেই সরকারে নারীরও ভূমিকা থাকবে।
তবে সরকারে মন্ত্রী পর্যায়ে কোন নারী থাকবেন না বলে তিনি জানিয়েছেন এবং বলেছেন গত বিশ বছরে আমেরিকান সমর্থনপুষ্ট সরকারে কাজ করা কোন নারীকে তালেবান সরকারে অন্তর্ভুক্ত করা হবে না। বুধবার তিনি আরো বলেছেন, আগামী দুই দিনের মধ্যে কাবুল বিমানবন্দর খুলে দেয়া হবে। আফগানিস্তানের কান্দাহার শহরে তালেবান নেতারা নতুন সরকার গঠন নিয়ে তাদের তিন দিনের আলোচনা শেষ করার পর জনাব স্তানিকজাই এমন্তব্য করেন।
এেিদক কাবুল থেকে বিবিসির সংবাদদাতা লিস ডুসেট জনাচ্ছেন কাবুলে খুব ধীরে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ফিরতে শুরু করলেও মানুষের মধ্যে একটা ভয় ও অনিশ্চয়তা কাজ করছে। নতুন সরকার কেমন হবে, তাদের নতুন শাসনব্যবস্থা ও নিয়মবিধি কী হবে তা জানার জন্য মানুষ অধীর আগ্রহে রয়েছে।
এরই মধ্যে মানুষকে জীবনধারণের জন্য পথে বের হতে হচ্ছে। রাস্তায় রাস্তায় মানুষকে ব্যাংকের সামনে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। ব্যাংকের বেশিরভাগ শাখা বন্ধ রয়েছে এবং ব্যাংকগুলোর কোষাগার প্রায় শূন্য বলে জানা যাচ্ছে। রাস্তায় রাস্তায় তালেবান রক্ষীদের টহল দিতে দেখা যাচ্ছে। তালেবান বলছে, নিরাপত্তার স্বার্থে তারা বিভিন্ন এলাকায় টহল দিচ্ছে।
লিস ডুসেট জানাচ্ছেন, কাবুল বিমানবন্দরের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ এখন তালেবানের হাতে। আমেরিকার শেষ সামরিক বিমান কাবুল ছেড়ে যাবার পর বিমানবন্দরের সর্বত্র ছড়িয়ে আছে তালেবান যোদ্ধারা। এমনকি আমেরিকান ইউনিফর্ম পরে, আমেরিকান বন্দুক নিয়ে তালেবান বিশেষ বাহিনীর সদস্যদের দেখা যাচ্ছে বিমানবন্দরের বিভিন্ন অংশে। তালেবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ সবাইকে আশ্বস্ত করে বিমানবন্দর থেকে বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘ইসলামিক আমিরাত অফ আফগানিস্তান গোটা বিশ্বের সাথে সুসম্পর্ক রাখতে চায়। আমেরিকাসহ বিশ্বের সব দেশের সাথে আমরা শক্তিশালী ক‚টনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখতে চাই’।
তালেবান বলেছে, আফগান জনগণকে এবং বিশ্বকে খুব শিগগিরিই তারা জানাতে যাচ্ছে তাদের নতুন ইসলামিক সরকারের কাঠামো কেমন হবে, কী ধরনের আফগানিস্তান এখন তারা গড়ে তুলতে চাইছেন।
অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের ঝুঁকি : ইতোমধ্যে আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বোর্ডের একজন ঊর্ধ্বতন সদস্য আমেরিকার অর্থ মন্ত্রণালয় এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন তালেবান নেতৃত্বাধীন সরকারকে যেন তারা দেশটির জন্য সঞ্চিত তহবিলের অর্থ ব্যবহারের অনুমতি দেয়। তা না হলে আফগানিস্তান অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের ঝুঁকিতে পড়বে বলে বোর্ডের ওই কর্মকর্তা রয়টার্স বার্তা সংস্থাকে জানিয়েছেন।
তালেবান বিদ্যুত গতিতে আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেছে। কিন্তু আফগানিস্তান ব্যাংকে (ডিএবি) যে প্রায় দশ বিলিয়ন ডলার অর্থ সঞ্চিত রয়েছে, তালেবানকে তা ব্যবহারের অনুমতি এখুনি দেয়া হচ্ছে না। এই অর্থের বেশিরভাগই রয়েছে আফগানিস্তানের বাইরে। আমেরিকায় বাইডেন প্রশাসন ইতোমধ্যেই বলেছে যে, আফগান সরকারের যে পরিমাণ সম্পদ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে গচ্ছিত রয়েছে তা তালেবানকে ব্যবহার করতে দেয়া হবে না। আইএমএফ-ও বলেছে, ঋণদাতাদের সম্পদ ব্যবহারের অনুমতি তালেবানকে দেয়া হবে না।
মেরিল্যান্ডে মন্টগমারি কলেজের অর্থনীতির অধ্যাপক শাহ মেহরাবি, যিনি ২০০২ সাল থেকে ব্যাংকের একজন বোর্ড সদস্য, তিনি রয়টার্সকে বলেছেন, আফগানিস্তানের আন্তর্জাতিক সম্পদ ফ্রিজ করে দিলে বা আটকে রাখলে ‘দেশটি অবশ্যম্ভাবী অর্থনৈতিক এবং মানবিক সঙ্কটের মুখে পড়বে’।
ট্রাম্পের চুক্তির আওতায় শীর্ষ তালিবান কমান্ডারদের কি মুক্তি দেওয়া হয়েছিল?
জো বাইডেন মঙ্গলবার তার টেলিভিশন ভাষণে বলেছিলেন যে, তালেবানদের সাথে ডোনাল্ড ট্রাম্পের চুক্তি ‘আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণকারীদের মধ্যে তালেবানের শীর্ষ যুদ্ধ কমান্ডারসহ গত বছর ৫ হাজার বন্দীকে মুক্ত করার সুযোগ দিয়েছে’।
এটা ঠিক যে, ট্রাম্প প্রশাসন গত বছর তালেবানদের সাথে আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর এক হাজার বন্দির বিনিময়ে ৫ হাজার তালেবান সদস্যকে মুক্ত করার চুক্তি করেছিল। এ অদলবদলটি শেষ পর্যন্ত ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে সম্পন্ন হয়, যখন আফগান সরকারের মতে ৪শ’রও বেশি তালেবান বন্দি যারা ‘বড় অপরাধ’ করেছিল, তাদের অবশেষে যুক্তরাষ্ট্রের চাপে মুক্তি দেয়া হয়েছিল।
তাহলে কি মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে তালেবান ‘শীর্ষ যুদ্ধ কমান্ডার’ ছিলেন? : আফগান সরকারের কর্মকর্তারা অবশ্যই বিশ্বাস করেন যে, আমেরিকানরা তাদের উদ্বেগের কথা বলেছে। দক্ষিণ আফগান শহর লশকর গাহের ওপর হামলা তত্ত্বাবধানকারী একজন সিনিয়র তালেবান কমান্ডার মৌলভী তালিব তাদের মধ্যে ছিলেন বলে জানা গেছে।
এটি লক্ষ্য করাও গুরুত্বপূর্ণ যে, ট্রাম্প প্রশাসনের চুক্তির অনেক আগেই অন্যান্য তালেবান কমান্ডারদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৪ সালে ওবামা প্রশাসনের সময় গুয়ানতানামো বে থেকে বেশ কয়েকজন সিনিয়র তালেবান সদস্যকে বন্দি বিনিময়ের অংশ হিসেবে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। সূত্র : বিবিসি বাংলা ও রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।