মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
সদ্য ত্যাগ করেছে মার্কিন সেনারা। পেছনে রেখে গেছে হাজার কোটি ডলারের অত্যাধুনিক অস্ত্র, সামরিক যাবাহন ও সরঞ্জাম, যা এখন তালেবানদের দখলে। এর মধ্যেই এক চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস সদস্য জিম ব্যাঙ্কস। রিপাবলিকান পার্টির এ সদস্যের দাবি, ‘তালেবানের কাছে ৭৫ হাজার গাড়ি, ৬০ হাজার ছোট অস্ত্র ও হালকা অস্ত্র এবং ২শ’ হেলিকপ্টার এবং বিমানসহ প্রায় ৮৫ হাজার কোটি ডলারের জিনিস আফগানিস্তানে ফেলে এসেছে মার্কিন বাহিনী।
ব্যাঙ্কস বলেছেন যে, তার দাবিগুলো সঠিক। কারণ আফগানিস্তানে অস্ত্র সরবরাহের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। ওয়াশিংটনে এক বক্তৃতায় ব্যাঙ্কস বলেন, ‘প্রশাসনের গাফিলতির জন্যই এ ঘটনা ঘটেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বহু সংখ্যক ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টার এখন তালেবানদের দখলে। পৃথিবীর ৮৫ শতাংশের বেশি দেশের হাতে যে সংখ্যায় এ বিশেষ হেলিকপ্টার আছে, তার থেকে বেশি আছে তালিবানের হাতে।’ তিনি বলেন, ‘শরীরের বর্ম, নাইট-ভিশন গগলস এবং চিকিৎসা সামগ্রীর মতো সরঞ্জামও জব্দ করেছে তালেবানরা।’
সেইসাথে আছে, বায়োমেট্রিক যন্ত্রসহ ডাটাবেস, যেগুলো আশঙ্কাজনকভাবে সেসব আফগানদের চিহ্নিত করতে সাহায্য করতে পারে, যারা মার্কিন জোটকে সাহায্য করেছিল এবং যাদের মধ্যে অনেকেই কাবুলে আটকা পড়ে আছে। এদিকে, তালেবান যোদ্ধাদের সামরিক চেহারায় বদল আসতে শুরু করেছে। আমেরিকার অনেক সেনা ঘাঁটিতেই মার্কিন বাহিনীর জন্য আনা একেবারে নতুন পোশাকও রয়েছে। সেগুলিও এখন দখল করেছে তারা। এখন আর আগের মতো একে-৪৭ হাতে তালিবান দেখা যাচ্ছে না। এখনকার তালিবান হামভিস চালাচ্ছে এবং মার্কিন তৈরি এম ১৬ রাইফেল এম ১৬ রাইফেল নিয়ে ঘুরছে।
নতুন তালেবান শাসনের অধীনে আফহানিস্তানের ভবিষ্যত কেমন হবে এবং যারা আফগানরা চলে যাওয়ার চেষ্টা করছে, তাদের কী হবে, এবং পিছনে থাকা এই সমস্ত সামরিক সরঞ্জামগুলির কী হবে? এমন কয়েকটি ম‚ল প্রশ্ন রয়ে গেছে। যখন তালিবানরা প্রথম দেশ শাসন করেছিল, তারা ৯/১১ হামলাসহ প্রশিক্ষণ শিবির স্থাপন এবং সন্ত্রাসের ষড়যন্ত্র করার জন্য আল-কায়েদাকে আফগানিস্তান ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছিল। এটি শেষ পর্যন্ত তাদের পতন ডেকে আনে যখন তারা ওসামা বিন লাদেনকে আমেরিকানদের কাছে হস্তান্তর করতে অস্বীকার করে।
তালেবান একই ঘটনা আর ঘটতে না দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা সন্দেহ করছে যে, তারা তাদের কথা রাখবে না এবং যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য আফগানিস্তানে সন্ত্রাসী চক্রান্তের মুখোমুখি হবে। আফগানিস্তানে ব্রিটিশ বাহিনীর সাবেক কমান্ডার কর্নেল রিচার্ড কেম্প টাইমস রেডিওকে বলেন, ‘হুমকিটি আইএসআইএসে’র চেয়েও বড় হতে পারে।’
আমেরিকা দীর্ঘ দিন ধরে আফগানিস্তানকে সামরিক সাহায্য করেছে। শুধু অস্ত্র দেওয়া নয়, আফগান-বাহিনীর বিভিন্ন অংশকে অত্যাধুনিক অস্ত্রের প্রশিক্ষণও দিয়েছে। অস্ত্র বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন অনেক অস্ত্র আফগানিস্তানে রয়েছে, যেগুলিকে চালানোর ক্ষমতা তালেবানের নেই। যথাযথ প্রশিক্ষণ এবং অব্যাহত লজিস্টিক সাপোর্ট ছাড়া এই ধরনের অস্ত্র চালানো তাদের পক্ষে সম্ভব নয়।
তবে, কিছু অস্ত্র আছে যা তালিবানকে আরও শক্তিশালী করবে। এ প্রসঙ্গে সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল পলিসির সিকিউরিটি অ্যাসিস্টেন্স মনিটরের ডেপুটি ডিরেক্টর ইলিয়াস ইউসুফ দ্য হিলকে বলেছেন, ‘যখন একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী মার্কিন তৈরি অস্ত্রশস্ত্রে হাত দেয়, তখন এটি এক ধরনের স্ট্যাটাস সিম্বল। এটা একটা মনস্তাত্তি¡ক জয়।’ সূত্র : দ্য সান, পিপল, স্টার্টআপ পাকিস্তান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।