বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বরিশালে বিভিন্ন সময়ে গুম হওয়া ব্যক্তিদের স্মরণে গতকাল নগরীর সদর রোডে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে স্বজনরা। তাদের হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড। তবে তারা কোন বক্তৃতা করেননি। আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে ‘হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডারস নেটওয়ার্ক’ ও ‘মায়ের ডাক’ নামক দুটি সংগঠন যৌথভাবে এই কর্মসূচি পালন করে। তাদের উদ্যোগে গুম হওয়া ব্যক্তিদের কয়েকজন স্বজন সকাল ১০টার দিকে সদর রোডস্থ বিবির পুকুরের পাড়ে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করে দ্রুত এলাকা ত্যাগ করেন।
ওই কর্মসূচিতে ছিলেন ২০১২ সাল থেকে নিখোঁজ ছাত্রদল নেতা ও দুই সহোদর ফিরোজ খান কালু ও মিরাজ খানের মা ফিরোজা বেগম। তিনি জানান, ওই বছরের এপ্রিল মাসে কালুকে চট্টগ্রাম থেকে এবং আগস্টে তার ছোট ভাই মিরাজকে ঢাকা থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা তুলে নিয়ে গেছে। তারপর থেকে তাদের কোন খোঁজ নেই।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ২৪ মার্চ সন্ধ্যা ৭টার দিকে নগরীর কালিবাড়ি সড়কে সরকারি বরিশাল কলেজের প্রধান ফটকের সামনে তৎকালীন মহানগর ছাত্রদলের একাংশের যুগ্ম আহবায়ক ও সরকারি বরিশাল কলেজ শাখার সভাপতি রাফসান আহমেদ জিতুকে নৃসংশভাবে কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষরা। ছাত্রদলের অভ্যন্তরীণ বিরোধের জের ধরে ওই খুনের ঘটনা ঘটে। ওই হত্যা মামলার প্রধান আসামি ছিল ১৯ নম্বর ওয়ার্ড (কলেজ রো এলাকা) ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান কালু। তার ভাই মিরাজও জিতু হত্যা মামলার আসামি ছিল। হত্যাকান্ডের পরই তারা আত্মগোপন করে এবং পরবর্তীতে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা তুলে নিয়ে যায় বলে স্বজনরা দাবি করে আসছেন।
খুলনা ব্যুরো : গুম হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে গতকাল সোমবার খুলনা মহানগরীর খানজাহান আলী রোডস্থ জাতিসংঘ পার্কের সামনে মানববন্ধন পালিত হয়েছে। এ সময় গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান চেয়েছে তাদের পরিবার। গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের সংগঠন ‘মায়ের ডাক’ ও মানবাধিকার কর্মীদের ‘হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার নেটওয়ার্ক’ যৌথভাবে এ কর্মসূচির আয়োজন করে। মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিক মুহাম্মদ নূরুজ্জামান এতে সভাপতিত্ব করেন। এ সময় গুমের শিকার সাতক্ষীরার হোমিও চিকিৎসক মোখলেসুর রহমান (জনি), যশোরের বেনাপোলের মেধাবী কলেজ ছাত্র মো. রেজোয়ান হোসেন এবং বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের ব্যবসায়ী মো. হাবিবুর রহমান হাওলাদারের সন্ধান চেয়েছেন তাদের পরিবার।
মানববন্ধনে গুমের শিকার সাতক্ষীরার হোমিও চিকিৎসক মোখলেসুর রহমানের (জনি) পিতা মো. আব্দুর রাশেদ বলেন, ২০১৬ সালের ৪ আগস্ট সাতক্ষীরা সদর থানার এসআই হিমেলের নেতৃত্বে পুলিশ তার ছেলে জনিকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। কিন্তু থানায় কয়েকদিন রেখে তাকে গুম করা হয়। গত ৬ বছরেও তার সন্ধান দিতে পারেনি পুলিশ। মানববন্ধন অংশ নিয়ে যশোরের বেনাপোলের মেধাবী কলেজ ছাত্র মো. রেজোয়ান হোসেনের বড় ভাই মো. রিপন হোসেন বলেন, তার ছোট ভাইকে ২০১৬ সালের ৪ আগস্ট বেনাপোল থানা পুলিশ আটক করে। পরবর্তীতে ওসি অপূর্ব হাসানের নেতৃত্বে তাকে গুম করা হয়। এ ঘটনায় তারা ভয়ে মামলা করার সাহস পাননি। বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের ব্যবসায়ী মো. হাবিবুর রহমান হাওলাদারের ছেলে কলেজ ছাত্র মো. শাওন হাওলাদার বলেন, তার বাবাকে ২০১১ সালের ৬ জুলাই পুলিশ বাড়ি থেকে আটক করে নিয়ে আসে।
তার পর থেকে দীর্ঘ ১১ বছর ধরে তার কোন সন্ধান মেলেনি।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ২০০৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ৩০ জন পর্যন্ত দেশে ৬০৩ জন গুমের শিকার হয়েছে।
কর্মসূচিতে বক্তৃতা করেন নাগরিক ঐক্যের খুলনা মহানগর শাখার সভাপতি ড. এ্যাডভোকেট মো. জাকির হোসেন, বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার খুলনা জেলা সমন্বয়কারী এ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম, নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) খুলনা জেলা সভাপতি এসএম ইকবাল হোসেন বিপ্লব, মানবাধিকার কর্মী এ্যাডভোকেট শেখ মো. আলমগীর আশরাফ ও মানবাধিকার কর্মী শেখ আব্দুল হালিম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।