বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ভারি বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের কারণে তিস্তার পানি আবারও বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে রংপুরের ৩টি উপজেলার প্রায় ৩০টি চরাঞ্চলসহ নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলো তৃতীয় বারের মত প্লাবিত হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার পরিবার। পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে নদীর উভয় তীরে ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, শনিবার সকালে তিস্তার পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও গঙ্গাচড়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে কোলকোন্দ, লক্ষ্ণীটারী, আলমবিদিতর, গজঘণ্টা, নোহালী, কচুয়া ও মর্নেয়া ইউনিয়নের ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে পড়েছে। কোন কোন এলাকা দেড় থেকে আড়াই ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দী অসংখ্য পরিবার অনাহারে-অর্ধাহারে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন।
কোলকোন্দ ইউনিয়নের চর শংকরদহ, বাগেরহাট, ইচলী, পূর্ব ইচলী, মটুকপুর গ্রামের প্রায় দুই হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। শুক্রবার গভীর রাত পর্যন্ত ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে মাইকিং করে সবাইকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে আসার আহ্বান জানানো হয়। এসব এলাকার প্রতিটি বাড়িতে দেড় থেকে দুই ফুট পানি ওঠায় তারা গরু-ছাগল ও মালামালসহ নিরাপদ স্থানে চলে যাচ্ছে।
লক্ষীটারী ইউনিয়নের পশ্চিম ইচলি, শংকরদহ, বাগেরহাট আশ্রয়ন, পূর্ব ইচলির প্রায় ১ হাজার, নোহালীর মিনার বাজার, কচুয়াচর, বৈরাতী বাঁধের ধার, চর নোহালী, বাগডহরা চরের ৫শ, মর্নেয়া ইউনিয়নের মর্নেয়াচর, তালপট্টি, আলাল চর, নরসিং চরের ৫শ, গজঘন্টা ইউনিয়নের কালির চর, ছালাপাক, গাউছিয়া বাজার, জয়দেব, মইশাসুর, রামদেব চরের প্রায় ৬ শতাধিকসহ আলমবিদিতর ও গঙ্গাচড়া ইউনিয়নের নিম্ন এলাকার প্রায় ৬/৭শ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
আজ রোববার সরেজমিনে এসব এলাকায় গেলে কেল্লার পাড়ের মহির উদ্দিন জানান, কষ্ট হলেও পানিবন্দি হয়ে থাকা যায়, কিন্তু বাড়ি ভেঙে গেলে তার মত কষ্ট হয়না। তিনি ভাঙন রোধে জরুরী ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান। পশ্চিম ইচলির বাবলু, আনোয়ার, জোবেদা বলেন, ৩ দিন ধরে পানিবন্দি অবস্থায় আছেন। উচুস্থানে কোন রকম রান্না এবং আত্বীয়র দেয়া খাবার ১ বেলা করে খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন। বিনবিনা চরে আইয়ুব ও মান্নান জানান, ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে আরো বাড়ি ও জমি বিলীন হয়ে যাবে। লক্ষীটারী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী বলেন, তার ইউনিয়নের ১ হাজারের বেশী পরিবার ইতিমধ্যে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে ভাঙন অব্যাহত আছে। পানিবন্দি পরিবারগুলোর জন্য দ্রুত ত্রাণ সহায়তা প্রয়োজন। কোলকোন্দ ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব আলী রাজু জানান, তিস্তার পানি বৃদ্ধি ফলে ভাঙন দেখা দেয়ায় বিনবিনা চরে ৬/৭টি পরিবারের বাড়ি বিলীন হয়েছে। তিনি ভাঙন রোধসহ পানিবন্দির জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য সহায়তার দাবি জানান।
গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তসলিমা বেগম জানিয়েছেন, দফায় দফায় বন্যায় উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে বানের ঢুকে পড়ায় অনেক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের দু’দফায় চালসহ শুকনো খাবার দেয়া হয়েছে। প্রয়োজনে আরো দেয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।