মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
পশ্চিমা কয়েকটি দেশ থেকে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা প্রকাশের কয়েক ঘণ্টা যেতে না যেতে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের বিমানবন্দরে জোড়া আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটেছে। বৃহস্পতিবারের এই বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত শিশুসহ অন্তত ১৩ জনের প্রাণহানির তথ্য নিশ্চিত করেছে দেশটির নতুন শাসকগোষ্ঠী তালেবান। এছাড়া বিস্ফোরণে অনেকে আহত হওয়ায় প্রাণহানির সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা। -বিবিসি, রয়টার্স, আল জাজিরা
আল-জাজিরার আলী এম লতিফি কাবুল থেকে জানিয়েছেন, বিস্ফোরণে হতাহতদের নিয়ে হাসপাতালের দিকে ছুটছে কয়েক ডজন গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্স। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হামলায় অন্তত ৬০ জন আহত হয়েছেন। নিহত হয়েছেন ১৩ জন। কাবুলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিনিধি সেকেন্দার কারমানি বলেন, অনলাইনে শেয়ার করা ভিডিওতে কাবুলের বিমানবন্দরে লাশের স্তূপ দেখা গেছে। যে কারণে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। কাবুল বিমানবন্দরের বাইরের বিস্ফোরণের ঘটনার একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, বিস্ফোরণটি ‘সত্যিই শক্তিশালী’ ছিল। তিনি বলেছেন, আমরা বিমানবন্দরের যেখানে ছিলাম, সেখান হঠাৎ বিস্ফোরণ হয়।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করেছে, যেখানে ওই প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, বিস্ফোরণের সময় সেখানে অন্তত ৪০০ থেকে ৫০০ জন উপস্থিত ছিলেন। নিহতদের মধ্যে বিদেশি সৈন্য রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। ‘আমরা স্ট্রেচারে করে আহতদের সরিয়ে নিয়েছি… রক্তে আমার পোশাক ভিজে গিয়েছিল।’ কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে বিস্ফোরণের পর প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, রক্তমাখা কাপড়ে আহতদের দুই চাকার বাহনে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। নারী, পুরুষ ও শিশুদের কেউ কেউ মাথায় ব্যান্ডেজ পরিহিত অবস্থায় বিস্ফোরণস্থল থেকে পালিয়ে যাচ্ছেন। বিমানবন্দরের অ্যাবে গেটের প্রবেশদ্বারে বিস্ফোরণ ঘটেছে। সন্ত্রাসী হামলার হুমকির কারণে সতর্কতা হিসেবে বন্ধ করে দেওয়া তিনটি গেটের একটি অ্যাবে গেট। দেশ ছাড়তে মরিয়া হাজারো আফগান সেখানে অবস্থান করছেন।
আফগান সাংবাদিক বিলাল সারওয়ারি এক টুইটে বলেছেন, বিমানবন্দরের অ্যাবে গেটের বাইরে কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের জন্য একটি পয়ঃনিষ্কাশন খালের পাশে নারী শিশুসহ অনেক আফগান অপেক্ষা করছিলেন। সেখানেই ভিড়ের মধ্যে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এক হামলাকারী নিজেকে উড়িয়ে দেয়। বেশ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী এবং বন্ধু আমাকে বলেছেন, বিস্ফোরণের পর আরেক হামলাকারী গুলিবর্ষণ শুরু করে। ভয়াবহ এই বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টা আগে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা কয়েকটি দেশ আফগানিস্তানে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) অনুসারী ইসলামিক স্টেট খোরাসান (আইএসআইএস-কে) আত্মঘাতী হামলা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে। আইএসআইএস-কের হামলার আশঙ্কায় বৃহস্পতিবার কাবুল বিমানবন্দর থেকে নাগরিকদের দূরে থাকার আহ্বান জানায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং অস্ট্রেলিয়া।
কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বাইরে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণে হতাহতদের মধ্যে মার্কিন সৈন্য এবং নাগরিকও আছেন বলে নিশ্চিত করেছে পেন্টাগন। পেন্টাগনের প্রেস সচিব জন কিরবি টুইট বার্তায় আফগানিস্তানের রাজধানীর বিমানবন্দরের বাইরে বিস্ফোরণের তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ওয়াশিংটনের অপর এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, বিস্ফোরণে কয়েকজন হতাহত হয়েছেন। বিস্ফোরণে হতাহতদের মধ্যে মার্কিন নাগরিক ও সামরিক বাহিনীর সদস্যরাও রয়েছেন বলে জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র বিষয়ক ও জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল কমিটির সদস্য অ্যালিসিয়া কার্নস বলেন, কাবুলের বিমানবন্দরের পাশের ব্যারন হোটেলের কাছে হামলায় ‘অনেকে আহত’ হয়েছেন, যেখানে যুক্তরাজ্য ব্রিটিশ ও আফগানদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য কার্যক্রম চালাচ্ছিল। ব্রিটিশ এই এমপি টুইটে বলেন, ‘ব্যারন হোটেলের উত্তর গেটে বোমা অথবা বন্দুক হামলা হয়েছে। উদ্বেগের বিষয় হলো এটা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করে দেবে। অনেকে আহত হয়েছেন। আহত ও নিহতদের জন্য আমার সমবেদনা।’ তালেবানের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন, ব্যারন হোটেলের কাছে বিস্ফোরণে অন্তত ৫২ জন আহত হয়েছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কাবুলে বিস্ফোরণের সময় হোয়াইট হাউসের সিচুয়েশন রুমে আফগানিস্তানের বিষয়ে নিয়মিত ব্রিফিং শুনছিলেন। সেই সময় তাকে কাবুল বিমানবন্দরে আত্মঘাতী বিস্ফোরণের বিষয়ে অবহিত করা হয় বলে জানিয়েছে সিএনএন। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন ওই ব্রিফিংয়ে অংশ নিয়েছিলেন। এদিকে কাবুলে বিস্ফোরণের পরপরই জরুরি বেঠক ডেকেছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। ফরাসী প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, কাবুল বিমানবন্দর ঘিরে বর্তমানে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।