পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বৃহস্পতিবার বিকাল ৬টা। অ্যাসাইনমেন্ট শেষে বাসে করে অফিসে ফিরছিলেন দৈনিক ইনকিলাবের চীফ ফটোগ্রাফার ইকবাল হাসান নান্টু। কিন্তু মতিঝিল শাপলা চত্বর ফুটওভার ব্রিজের নিচে যাওয়া মাত্রই তার হাত থেকে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় ছিনতাইকারীরা। মোবাইল ফোন নিয়ে মুর্হুতের মধ্যেই ঘটনাস্থল ত্যাগ করার সময় আরেক নারীর ভ্যানেটি ব্যাগও ছিনিয়ে নিয়ে তারা।
শুধু নান্টুই নয়, লকডাউন শেষ হওয়ার পর থেকে রাজধানীতে ছিনতাইকারীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। প্রকাশ্যে রাজধানীর রাস্তায় ওঁৎ পাতছে তারা। দীর্ঘ যানজটের মধ্যে অনেকেই আকস্মিক ছিনতাইকারীর কবলে পড়ছেন। তবে ভুক্তভোগীরা জানান, ছিনতাইয়ের ঘটনায় পুলিশি প্রতিকারের সম্ভাবনা কম থাকায় অনেকেই থানায় অভিযোগ দিতে রাজি নন। এছাড়া অজ্ঞাত কারণে ছিনতাইয়ের মামলায় পুলিশের অনীহা দেখা যায়। তবে নগরীতে ছিনতাই বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান এ কে এম হাফিজ আক্তার ইনকিলাবকে বলেন, ছিনতাই বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে বলে আমার মনে হয় না। তবে ছিনতাই হলে মামলা হলে আমরা টের পাই। এই মুর্হুতে মাদক অপরাধীরা বেড়ে গেছে। আমরা এগুলো নিয়ে কাজও করছি।
এদিকে, কঠোর লকডাউনের পর থেকে ছিনতাই বেড়ে যাওয়ায় জনমনে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ। পাশাপাশি এসব ঘটনায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে ভাবিয়ে তুলেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রাজধানীতে অপরাধপ্রবণ বেশকিছু এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে। ওইসব স্পটে বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়াও প্রতিনিয়ত থানা এলাকাগুলোতে টহল পুলিশ ও সাদা পোশাকে পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে।
খোঁজ নিয়ে ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাজধানীর মোহাম্মদপুর, মতিঝিল, পল্টন, গুলিস্তান, কারওয়ানবাজার, বেড়িবাঁধ, শ্যামলী শিশুমেলা, কলেজগেট, কৃষি মার্কেট, মিরপুর এলাকায় অহরহ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। পথচারীদের অনেকে মূলত মাদকসেবীদের হাতে ছিনতাইয়ের শিকার হন। তবে কিছু বখে যাওয়া তরুণ এবং মহল্লার মাস্তানরাও ছিনতাইয়ে জড়িত। এছাড়াও নিউ ইস্কাটন রোড, ইস্কাটন গার্ডেন রোড, কাকরাইল মোড়, মৎস্য ভবন এলাকা, কমলাপুর রেলস্টেশন এলাকা, ফকিরাপুল, ইত্তেফাক মোড়, নয়াপল্টন ভাসানী গলি, পুরানা পল্টন, আবদুল্লাহপুর, হাউসবিল্ডিং, জসীমউদ্দীন রোড, বিমানবন্দর গোলচত্বর, বিমানবন্দর রেলস্টেশন এলাকা, মালিবাগ, কুড়িল বিশ্বরোড, আফতাবনগর লোহার ব্রিজ, যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল ও ধলপুর এলাকায়ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে।
কারওয়ানবাজার এলাকার বাসিন্দা তুহিন আহমেদ ইনকিলাবকে বলেন, আমাদের এলাকায় প্রায় সময় ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। বিশেষ করে প্রতিদিন বিকাল ৪টা থেকে রাত ৯টায় পর্যন্ত ছিনতাইকারীরা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠে। কারণ ওই সময় অফিস থেকে বাসায় ফিরেন সাধারণ মানুষ। আর ওই সুযোগে কারওয়ানবাজার মোড় থেকে ফার্মগেট মোড় পর্যন্ত প্রকাশ্যে রাস্তার পাশে ওঁৎ পাতে ছিনতাইকারীরা। সুযোগ বুঝে বাস যাত্রীদের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় তারা।
গত কয়েকদিন কারওয়ানবাজার থেকে ফার্মগেট এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিদিন বিকাল থেকে রাত আটটা পর্যন্ত যানজটে আটকা পড়ছে শত শত গাড়ি। এ সময় অনেকেই মোবাইল ফোনে গেইম খেলে অলস সময় পাড় করেন। অনেকেই বাসের জানালার কাছে বসে মোবাইল ফোন ব্যবহার করছেন। এ সময় ওঁৎ পাতা ছিনতাইকারীরা মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন।
একই অবস্থা শাহবাগ থেকে বাংলামটর এলাকায়ও। এছাড়াও মতিঝিল শাপলা চত্বর এলাকায়ও ছিনতাইকারীরা ওঁৎ পেতে থাকে বলে জানা গেছে।
আবুল নামের এক ভাসমান দোকানী ইনকিলাবকে বলেন, প্রতিদিন অফিস শেষ হওয়ার পর আরামবাগ থেকে শাপলা চত্বর পর্যন্ত দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এ সময় রাস্তায় ওঁৎ পেতে থাকা ছিনতাইকারীরা মোবাইল ফোন, ভ্যানেটি ব্যাগসহ মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংক এলাকা ও শাপলা চত্বর থেকে ইত্তেফাক মোড় পর্যন্ত ছিনতাইকারীদের আনাগুনো বেশি থাকে বলেও জানান ওই দোকানী।
মতিঝিল থানার ওসি ইয়াসির আরাফাত খান ইনকিলাবকে বলেন, ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। তারপরও কেউ ছিনতাইয়ের শিকার হলে থানা পুলিশের দ্বারস্ত হলে ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ছিনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান রুটিন ওয়ার্ক জানিয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, যেসব এলাকায় ৪ থেকে ৫টা ছিনতাইয়ের রিপোর্ট পাওয়া যায় সেইসব এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এছাড়াও কারওয়ানবাজারের ব্যাপারে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হাফিজ আক্তার বলেন, ওই এলাকায় পথশিশুরা ছিনতাইয়ের মত অপরাধ করে। তবে এসব পথশিশুকে ধরে চালান দিলেও পরের দিন আবার জায়গাত মতো এসে দাঁড়িয়ে থাকে। বেশ কয়েকবার এদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এতে পুলিশ ব্যর্থ হয়েছে। এমন অপরাধ এককভাবে পুলিশের পক্ষে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব নয়। এটা নিয়ন্ত্রণ করতে হলে সবাইকে সচেতন হতে হবে। এছাড়াও টোকাই ও পথ শিশুদের আবাসন এবং কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হলেও এ ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব বলে মনে করেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।