মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
আফগানিস্তান থেকে কলঙ্কিত আমেরিকান প্রস্থান সম্পর্কিত অস্থিরতা কাটলে, যুক্তরাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকদের আফগানিস্তানে শান্তি বিনষ্টকারী হিসাবে গুরুত্বপূর্ণভাবে ভারতের ভ‚মিকার পর্যালোচনা করার পাশাপাশি ওয়াশিংটন ডিসির নীতি নির্ধারকদের মধ্যেও ভারতীয় প্রভাব খতিয়ে দেখা প্রয়োজন, যার ফলে আফগানিস্তান সম্পর্কিত মার্কিন নীতি ত্রটিযুক্ত হয়ে থাকতে পারে।
এটি একটি প্রতিষ্ঠিত সত্য যে একদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ভারতীয় নীতি বছরের পর বছর ধরে ভারতকে এই অঞ্চলের জন্য সম্পূর্ন নিরাপত্তা প্রদানকারী হিসাবে আবির্ভূত হওয়ার প্রস্তাব করছে, অন্যদিকে, ভারত আফগানিস্তানের মাটিতে মিত্র বাহিনীর অভিযানে সহায়তা করার মার্কিন অনুরোধ বারবার প্রত্যাখ্যান করে আসছে। ভারত মার্কিন মিত্র হওয়া সত্তে¡ও প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের দুই দশকের অর্থহীন যুদ্ধে অসহযোহিতা করে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে একটি দ্বৈত নীতি অনুসরণ করছে। ভারত এই অঞ্চলে তার ক্ষমতা প্রদর্শনে সাফল্য লাভের জন্যযুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, আফগানিস্তানে শান্তি এবং এই অঞ্চলে স্থিতিশীলতাকে বলির পাঁঠা বানিয়েছে।
২০২০ সালের এপ্রিলে কানাডিয়ান সিকিউরিটি অ্যান্ড ইন্টেলিজেন্স সার্ভিসের কাছে ভারতীয় গোয়েন্দা তদন্ত রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং (র) এবং গোয়েন্দা ব্যুরো (আইবি)-এর ২০০৯ সাল থেকে বিদেশী গোয়েন্দা হিসেবে কানাডায় গোপনে কাজ করার বিষয়টি ফাঁস হয়ে যায়। প্রতিষ্ঠান দু’টি টাকা এবং বিকৃত তথ্য ব্যবহার করে কানাডার রাজনীতিকদের কানাডিয়ান স্বার্থের পরিবর্তে ভারতের স্বার্থকে সমর্থন করার জন্য প্রভাবিত করতো।
একইভাবে, ২০২০ সালে জার্মান নিরাপত্তা তদন্তেও ভারতের একটি নয়, বরং ৪টি গোপন কার্যক্রম ফাঁস করে দেয় এবং জার্মান আদালত ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট হিসেবে কাজ করার জন্য জার্মানিতে কাজ করা ব্যক্তিদের শাস্তি প্রদান করে। তবে, ইইউ ডিজিনফো ল্যাবের ২০১৯ সালের তদন্ত প্রতিবেনটি ছিল সব থেকে সাঙ্ঘাতিক।
‘ইন্ডিয়ান ক্রনিকলস’ শিরোনামের প্রতিবেদনটিতে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার সাথে যুক্ত শ্রীবাস্তব গ্রæপের ছায়া সংগঠনগুলির ১৫ বছরের দীর্ঘ প্রভাব বিস্তারের অভিযান উন্মোচন করা হয়, যেগুলির সাথে ১০টিরও বেশি জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল স্বীকৃত এনজিও, ইউরোপ ভিত্তিক থিংক ট্যাঙ্ক, ৭শ’ ৫০টি মিডিয়া আউটলেট, ১শ’ ১৯ টিরও বেশি দেশে ৫শ’ ৫০টি ওয়েবসাইট, যেগুলি ভুল তথ্য, ভুয়া পরিচয়, ভুয়া সংবাদ তৈরি করা, এবং বিকৃত খবর ছড়িয়ে দিয়ে ভারতের বৈশ্বিক স্বার্থে কাজ করছে বলে তুলে ধরা হয় ।
ভারতের স্বার্থ সমুন্নত রাখার জন্য আফগানিস্তান থেকে শান্তিপ‚র্ণ মার্কিন প্রস্থানকে বাধাগ্রস্ত করতে এবং মার্কিন আফগান-নীতিকে প্রভাবিত করতে ভারতীয় জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা কতদূর যেতে পারে, তা নির্ধারণ করতে, যুক্তরাষ্ট্রেও বিদেশী প্রভাবের মতো একই ধরনের ভারতীয় তদবিরের দিকে নজর দেওয়া দরকার।
মার্কিন আইন অনুসারে মার্কিন ফরেন এজেন্ট রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্ট-এফএআরএ’র অধীনে নিবন্ধিত না হয়েও ভারতীয় স্বার্থ হাসিল করার জন্য ও মার্কিন নীতি নির্ধারকদের কাছে সক্রিয়ভাবে তদবিরকারী থিংক ট্যাঙ্ক অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন-ওআরএফ’র ওয়াশিংটন ডিসি অফিসের প্রধান এবং ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রহ্মণ্যম জয়শঙ্করের পুত্র ধ্রæব জয়শঙ্করের বিষয়ে মার্কিন আইন প্রণেতাদের প্রশ্ন তোলা দরকার।
ওয়াশিংটন ডিসির হাডসন ইনস্টিটিউটের থিঙ্ক ট্যাঙ্কের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার পরিচালক এবং মার্কিন-তালেবান দোহা চুক্তির সমালোচক হুসেইন হাক্কানিও এফএআরএ’র অধীনে নিবন্ধিত না হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের স্বার্থ সুরক্ষার তদবির করে আসছেন এবং আফগানিস্তানে মার্কিন সামরিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখা, আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সৈন্যদের নির্বিঘেœ সরিয়ে নেওয়া এবং সেখানে মার্কিন শান্তি প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য ব্যাপকভাবে তার প্রভাবকে ব্যবহার করেছেন। সূত্র: ট্রিবিউন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।