Inqilab Logo

বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৬ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

খাগড়াছড়িতে অনলাইনে বেচাকেনা

খাগড়াছড়ি জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২১ আগস্ট, ২০২১, ৬:৩৫ পিএম | আপডেট : ৭:৫৬ পিএম, ২১ আগস্ট, ২০২১

গেল বছরের শুরুতে দেশে ছড়িয়ে পড়ে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ। করোনার সংক্রমণ রোধে দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। সরকারি বিধিনিষেধের ফলে ঘরবন্দি হয়ে পড়ে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে বন্ধ ঘোষণা করা হয় দোকানপাট ও শপিংমল। এ পরিস্থিতিতে মানুষ ঝুঁকতে থাকে অনলাইন প্ল্যাটফর্মের দিকে।

অনেকেই নিজের মতো করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক-মেসেঞ্জারে নিজের হাতে তৈরি আচার, বিরিয়ানি, মিষ্টি থেকে শুরু করে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য নিয়ে হাজির হন ভোক্তাদের মাঝে।

এ সুযোগে পাহাড়ি জেলা খাগড়াছড়ির তরুণ উদ্যোক্তাদের অনলাইনে বিকিকিনি সহজ করতে ‘বাই অ্যান্ড সেল ইন খাগড়াছড়ি’ নামের একটি অনলাইন মার্কেটপ্লেস গড়ে তোলেন হাসানুল করিম নামের এক যুবক। বর্তমানে ২০ হাজারেরও বেশি সদস্যের প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে এ গ্রুপ।

পাহাড়ি এ জেলার তরুণ-তরুণীরা গ্রুপটির মাধ্যমে নিজেদের হাতে তৈরি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য নিয়ে হাজির হচ্ছেন মানুষের মাঝে। অনলাইন পোস্ট দেখেই নিজেদের চাহিদামতো অর্ডার করছেন ভোক্তারা। অর্ডারের পর ভোক্তার হাতে পৌঁছে যাচ্ছে পণ্যসামগ্রী।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে খাগড়াছড়ি শহর ছাড়িয়ে বিভিন্ন উপজেলায় গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে অনলাইনে কেনাকাটা। এতে লাভবান হচ্ছেন বেকার তরুণ-তরুণীরা।

অনলাইনে কেক বিক্রেতা তামান্না আক্তার বলেন, করোনাকালে আমি ‘বাই অ্যান্ড সেল ইন খাগড়াছড়ি’ গ্রুপে পোস্টের মাধ্যমে নিজের হাতে বানানো কেক ও দই অর্ডার অনুসারে ভোক্তার বাসায় পৌঁছে দেওয়া শুরু করেছি। এতে করে ঘরে বসেই ভোক্তা তার চাহিদা পূরণ করতে পারছেন। আর আমি অর্জিত অর্থ দিয়ে নিজের পরিবারের বাড়তি জোগান দিতে পারছি।

গত ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে নিজের হাতে বানানো বিরিয়ানি এবং মিষ্টি তৈরি করে অনলাইন গ্রুপের মাধ্যমে বেচাকেনা করছেন শিক্ষার্থী তাহরিমা সুলতালা শাকিলা। এরই মধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে তার বিরিয়ানি ও মিষ্টি। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ আমাদের কাছ থেকে পণ্য অর্ডার করে স্বস্তিবোধ করছেন। যার ফলে দিন দিন চাহিদা অনেক বেড়ে যাচ্ছে।
অনলাইনে অ্যালোভেরার টব ও বিভিন্ন ফলের আচাড় বানিয়ে গত কয়েক মাসে লাখ টাকার পণ্য সরবরাহ করেছেন জান্নাতুল ফেরদৌস। তিনি বলেন, করোনাকালে অলস সময় না কাটিয়ে সময়টা কাজে লাগাতে পেরেছি। এ কারণেই সফলতা অর্জন করা সম্ভব হয়েছে।

অনলাইনে মৌসুমি ফল বিক্রি করা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বাই অ্যান্ড সেল ইন খাগড়াছড়ি’ এমন একটি মার্কেটপ্লেস, যার মাধ্যমে সহজেই ঘরে বসে অর্থ উপার্জন করা সম্ভব। তিনি বলেন, অনলাইনে অর্ডার নিয়ে পাহাড়ের বিভিন্ন মৌসুমি ফল সংগ্রহ করে ভোক্তাদের কাছে পৌঁছে দিয়েছি। এতে করে ভোক্তারা ঘরে বসেই পাহাড়ের সুস্বাদু মৌসুমি ফল যেমন পেয়েছেন, তেমনি আমিও বাড়তি আয়ের মাধ্যমে পরিবারে আর্থিক সচ্ছলতা পেয়েছি।

নিজের বাসায় বসে কুশি পণ্য তৈরি করে অনলাইনে বিক্রি করেন রোজিনা আক্তার। এসব পণ্য দেখতে সুন্দর এবং টেকসই হওয়ায় চাহিদা অনেক বেশি বলে জানান তিনি। কুশি পণ্য দিয়ে ভবিষ্যতে ভালো কিছু করার স্বপ্ন দেখেন রোজিনা আক্তার।

নারীদের বিভিন্ন প্রকার কাপড় বিক্রি করা গৃহিণী যুঁথি নাথ বলেন, করোনা মহামারিতে অনেক নারী বাজারে আসেনি। অনলাইনে কেনাকাটা করেছে। ঈদের আগে আমি অনেক কাপড় সরবরাহ করেছি। চেষ্টা করেছি অর্ডার মতো ক্রেতাদের মন জয় করে বিক্রি করতে।

‘বাই অ্যান্ড সেল ইন খাগড়াছড়ি’ অনলাইন গ্রুপের অ্যাডমিন হাসানুল করিম বলেন, পিছিয়ে পড়া এ জনপদে বেকার সমস্যা নিয়ে দীর্ঘদিন ভেবেছি। সে ভাবনা থেকেই গ্রুপটি ক্রিয়েট করি।

গ্রুপে নারী উদ্যোক্তার সংখ্যা বেশি উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ গ্রুপের মাধ্যমে শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে গৃহিণী সবাই কেনাবেচা করছেন। এসব উদ্যোক্তা সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা বা সুদমুক্ত ঋণ পেলে অনেক দূর এগিয়ে যাবেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খাগড়াছড়ি

১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
২৩ জানুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ