মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
তালেবানরা একদিনেই কালাত, তেরেনকোট, পুল-ই আলম, ফিরুজ কোহ, কেল্লানাও এবং লশকরগাহ দখল করেছে। তালেবান সশস্ত্র গোষ্ঠী হেরাত ও কান্দাহার শহর দখলের কয়েক ঘণ্টা পরেই এসব প্রাদেশিক রাজধানীর দখল নিয়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তারা আফগানিস্তানে ১৮টি প্রাদেশিক রাজধানীর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
আফগানিস্তানের দক্ষিণে জাবুল প্রদেশের রাজধানী কালাত তালেবানদের দখলে আনা ১৮তম শহর। জাবুল প্রদেশের প্রাদেশিক পরিষদ প্রধান আতা জান হকবায়ন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সরকারী কর্মকর্তারা কাছাকাছি একটি সেনা ক্যাম্পে চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আফগানিস্তানের দক্ষিণ উরুজগান প্রদেশের দুই বিধায়ক বিসমিল্লাহ জান মোহাম্মদ এবং কুদরতউল্লাহ রহিমি বলেছেন, স্থানীয় কর্মকর্তারা প্রাদেশিক রাজধানী তেরেনকোটকে তালেবানদের কাছে সমর্পণ করেছেন। মোহাম্মদ বলেন, শহরটির গভর্নর কাবুলের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন।
আফগানিস্তানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর কান্দাহার এবং তৃতীয় বৃহত্তম শহর হেরাতের দখল নেয়ার পরদিনই তালেবান যোদ্ধাদের হাতে আফগানিস্তানের সবচেয়ে বড় প্রদেশ এবং দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় হেলমান্দ প্রদেশের রাজধানী লশকর গাহের পতন হয়।
আফগান নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, তালেবানের সঙ্গে একটি চুক্তির পর সামরিক বাহিনী ও সরকারি কর্মকর্তারা শহরটি ছেড়ে চলে গেছে। সংবাদ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এ নিয়ে আফগানিস্তানে তালেবানদের হাতে অন্তত ১৮ প্রাদেশিক শহরের পতন হলো। শহরগুলো হলো, সার-ই-পুল, শেবেরগান, আয়বাক, কুন্দুজ, তালুকান, পুল-এ-খুমরি, ফারাহ, যারাঞ্জ, ফৈজাবাদ, গজনি, কান্দাহার, হেরাত, লশকর গাহ, কালাত, তেরেনকোট, পুল-ই আলম ও ফিরুজ কোহ।
সূত্রের বরাত দিয়ে বিবিসি অনলাইনও জানায়, লশকরগাহ শহরের নিয়ন্ত্রণ তালেবান নিয়েছে। তবে তারা স্বাধীনভাবে এ তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে পারেনি। তালেবান এর আগেই আফগানিস্তানের দ্বিতীয় বৃহত্তম কান্দাহার শহর দখল করে। তালেবানের এক মুখপাত্র টুইট করে বলেন, কান্দাহার সম্পূর্ণভাবে জয় করা হয়েছে। তালেবান যোদ্ধারা শহরের শহীদ চত্বরে পৌঁছে গেছে। স্থানীয় এক বাসিন্দাও কান্দাহার তালেবানের দখলে যাওয়ার তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন, শহর থেকে গণহারে সরকারি বাহিনী প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে।
একসময় কান্দাহার তালেবানের শক্ত ঘাঁটি ছিল। কৌশলগতভাবে শহরটির যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। তাই শহরটির দখল তালেবানের জন্য একটা বড় জয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। লশকরগাহও গুরুত্বপূর্ণ শহর হিসেবে বিবেচিত। আফগানিস্তানে মোট ৩৪টি প্রদেশ রয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ১৪টির রাজধানী শহর দখলে নেয়ার দাবি করেছে তালেবান। বিবিসি অনলাইন জানায়, আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলের অধিকাংশ এলাকাই এখন তালেবানের নিয়ন্ত্রণে। দেশটির আঞ্চলিক রাজধানীগুলোর এক-তৃতীয়াংশ এখন তালেবানের দখলে। বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটির অধিকাংশ এলাকার ওপরই আফগান সরকারের আর নিয়ন্ত্রণ নেই। তালেবান যে গতিতে একের পর এলাকা দখল করছে, তাতে যেকোনো সময় আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের পতন ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মার্কিন গোয়েন্দাদের মতে, তালেবান ৩০ দিনের মধ্যে কাবুলকে বিচ্ছিন্ন করে দিতে পারে। আর ৯০ দিনের মধ্যে তালেবানের হাতে কাবুলের পতন ঘটতে পারে। তালেবানের অগ্রযাত্রা ও সহিংসতার মুখে হাজারো মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাচ্ছে। তারা রাজধানী কাবুলের দিকে যাচ্ছে। সেখানে তারা মানবেতর জীবন যাপন করছে। বিবিসি জানিয়েছে, কাবুলের উপকণ্ঠে এখন হাজার হাজার মানুষ অস্থায়ী ক্যাম্পে জড়ো হয়েছে।
আফগানিস্তান থেকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বিদেশি সৈন্য সরিয়ে নেয়ার পর থেকে দেশটিতে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত মানুষ বাড়ছে বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো। বিদেশি সৈন্য সরে যাওয়ায় দেশটির সরকারি বাহিনীর সঙ্গে তালেবানের সংঘর্ষ বেড়ে যায়।
এবার আফগান জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদত্যাগ : আফগানিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হামদুল্লাহ মুহিব পদত্যাগ করেছেন। তালেবানের হামলায় যখন আফগানিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে এবং তাদের হাতে একের পর এক শহরের পতন হচ্ছে তখন নিজের পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন মুহিব।
কাবুল থেকে আইআরআইবি’র সংবাদদাতা জানিয়েছেন, হামদুল্লাহ মুহিব নিজে থেকে পদত্যাগ করেছেন বলে খবর প্রকাশিত হলেও কোনো কোনো সূত্র বলছে, প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি মুহিবকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেছেন।
এর আগে প্রেসিডেন্ট গনি আফগান সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়ালি মোহাম্মাদ আহমাদজাইকে বরখাস্ত করে হেবাতুল্লাহ আলীজাইকে তার স্থলাভিষিক্ত করেন। সূত্র : ট্রিবিউন, আল-জাজিরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।